এমনই অবস্থা হয়েছে ঢালাই রাস্তার। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামে ঢোকার একমাত্র ঢালাই রাস্তাটা আর নেই। জলের তোড়ে স্ল্যাব সব উপড়ে গিয়েছে। ইউক্যালিপটাস গাছের দুটো গুঁড়ি ফেলে কোনও মতে যাতায়াত চলছে। গ্রামের ঘরদোরও সব ভাঙাচোরা। আর সব ছাপিয়ে নাকে আসছে পচা গন্ধ।
বঙ্গোপসাগরের তীরে খেজুরির কাদিরাবাড় চর গ্রাম। সাগরপাড় বরাবর ভাঙা নৌকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তার কোনওটার তলায় ফাটল, কোনওটার আবার ইঞ্জিন নেই। আর তারই সামনে পড়ে গরু, ছাগল, কুকুর, হাঁস-মুরগির পচাগলা দেহ। গ্রামবাসী জানালেন, ‘ইয়াসে’র দিন নয়াচর এবং ঘোড়ামারা দ্বীপে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে যে সব গবাদি পশু, পাখি মারা গিয়েছিল, সেগুলির দেহ ভেসে এসেছে কাদিরাবাড় চরের দিকে। কেউ সে সব পরিষ্কার করেনি। দুর্গন্ধে টেকা দায়। ভাঙাচোরা ঘরের সামনে দাঁড়ানো এক দম্পতি বললেন, ‘‘দশ দিন হয়ে গেল। এ সব সয়েই আছি। পেয়েছি শুধু একটা করে ত্রিপল।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের এই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই মৎস্যজীবী। কারও নিজের নৌকা রয়েছে। আর কেউ কেউ অন্যের নৌকায় মাছ ধরে সংসার চালান। এক মৎস্যজীবী জানালেন, ‘‘গ্রামের মোট ১৭টি নৌকা ভেঙেছে। আবার অনেকগুলোর মেশিন ভেসে গিয়েছে জলে।’’ গাছের নীচে ভরদুপুরে বসে দুই মহিলা। সংসারের কাজকর্ম কিছু নেই নাকি? জবাব এল, ‘‘কত দিন হল উনুন জ্বলেনি। হাঁড়িও চড়েনি।’’
গ্রামবাসীর অভিযোগ, ১০ দিন ধরে দুর্বিসহ অবস্থায় থাকলেও ত্রাণ সামগ্রী আসেনি। প্রশাসন বা কোনও রাজনৈতিক দলের কেউ খোঁজ নেয়নি। ত্রিপল দিতেও গ্রামে আসেনি কেউ। বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়েছে। শনিবার অবশ্য নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের কয়েক জন প্রাক্তনী ত্রাণ নিয়ে প্রায় বিচ্ছিন্ন এই গ্রামে পৌঁছন। শুকনো খাবার, বেবি ফুডের সঙ্গে জামাও বিলি করা হয়েছে। ছেলে-বুড়োর দল লাইন দিয়েছে সে সব নিতে।
ত্রাণ দিতে আসা রত্নদীপ সামন্তের কথায়, ‘‘বিভিন্ন পেশার লোকজন এই কঠিন সময়ে এগিয়ে আসছেন। আমরাও যথাসম্ভব চেষ্টা করছি। দুর্গত মানুষগুলোর মুখে দু’টো খাবার তো অন্তত তুলে দিতে হবে।’’ খেজুরি ২-এর বিডিও ত্রিভুবন নাথ অবশ্য বলেন, ‘‘সব জায়গাতেই ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। কেউ পাননি বললে কিছু বলার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy