প্রতীকী ছবি
সলুয়া আর বিলপাড়া, পাশাপাশি দুই গ্রামে দু’জনের মৃত্যু, মাঝে মাঝে তিন মাসের ব্যবধান। তবে কারণটা একই, ভিটে হারানোর ভয়।
২৬ সেপ্টেম্বর সলুয়ার গিয়াসউদ্দিন শেখ মারা যাওয়ার পরে তাঁর পরিবার আঙুল তুলেছিলেন নাগরিকপঞ্জির দিকে। এনআরসি’র আতঙ্কেই নাওয়া-খাওয়া ভুলে বাড়ির দলিল খুঁজেও নথিপত্র না পেয়ে শেষতক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিন।
সোমবার পড়শি গ্রাম বিলপাড়ায় নজরুল মিঞার মৃত্যুর পরেও তার ছেলে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘নয়া নাগরিকত্ব আইনটাই বাবাকে খেল!’’
বিলপাড়ার মতো গায়ে গা লাগা গ্রামগুলি এখন এই দুই নয়া আইনের ধাক্কায় ধরাশায়ী। ভয়ে-আতঙ্কে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এখন হন্যে হয়ে বাড়ি-জমির নথি হাতড়াচ্ছেন।
বিলপাড়ার সাহাদ আলি বলছেন, ‘‘আমার বয়স ষাট, কিন্তু এমন আতঙ্কে কোনওদিন ভুগিনি। কাজ ফেলে নথিপত্র ঠিক করতে বিডিও অফিস থেকে, ভূমি দফতরের অফিসে চরকির মতো পাক খাচ্ছি।’’
ডিটেনশন ক্যাম্পের জুজুতে কুঁকড়ে রয়েছে অন্তত বারোটি গ্রামের মানুষ। গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল জলিল মিঞা বলছেন, ‘‘অসমে এনআরসি হওয়ার পর থেকেই আমরা আতঙ্কে। গ্রামের মানুষ বেশিরভাগ নিরক্ষর হওয়ায় নথিপত্রে ভুলভ্রান্তি রয়েই গেছে। অনেকের আবার জমিজমা নেই, ফলে জমির দলিল, পরচা কিছুই জোগাড় করার উপায় নেই। ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছি।’’
এনআরসি’র ভয় থিতিয়ে যাওয়ার আগেই নয়া নাগরিকত্ব আইন সেই আতঙ্কে আঁধার ছড়িয়েছে যেন। গ্রামবাসীদের ভাষায়, ‘‘আতঙ্কে আমাদের ঘুম ছুটে গিয়েছে গো!’’
বিলপাড়ার শিক্ষক সেলিম মিঞা বলছেন, ‘‘ভয় তো পাবেনই, যে আইনে এত বৈষম্য তাতে সাধারণ মানুষ ভয় পাবেন না!’’
আতঙ্ক মুছতে মাঠে নেমেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকায় শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ। স্থানীয় তৃণমূল নেতা জালালুদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘‘আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি, গ্রামের সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে চলেছি— ভয় পাবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy