বেপরোয়া: বাড়ছে সংক্রমণ। তা প্রতিরোধে কন্টেনমেন্ট জ়োনে ফের শুরু হচ্ছে লকডাউন। তাতেও কি বদলাবে বিধি না-মানার এই ছবি? মঙ্গলবার, বারাসত থানার কাছে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
লকডাউন শিথিল হতেই শিকেয় উঠেছিল দূরত্ব-বিধি। অভিযোগ, এর পর থেকে সাধারণ মানুষ তো বটেই, শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশও সব সাবধানতা কার্যত শিকেয় তুলে দিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। দূরত্ব-বিধি মানা তো দূর, থুতনিতে মাস্ক ঝুলিয়ে বিক্ষোভ-মিছিলে যোগ দিতে বা রাজনৈতিক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় তাঁদের।
বাজার-হাট থেকে শুরু করে হোটেল, চায়ের দোকানে মাস্ক ছাড়া আড্ডা দেওয়ার ছবি কলকাতা ও অন্যান্য জায়গার মতো উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন জায়গাতেও দেখা গিয়েছে। তার জেরে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। সে কারণেই মঙ্গলবার এই জেলার অনেকগুলি জায়গায় ফের কড়া লকডাউনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। যদিও রাত পর্যন্ত সেই তালিকা প্রকাশিত হয়নি।
সূত্রের খবর, এ দিন দফায় দফায় বৈঠকের পরে জেলা প্রশাসনের তরফে সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা জুড়ে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সতর্ক করে বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়।
চা-চর্চা: বারাসতের চাঁপাডালিতে মাস্ক না-পরেই চলছে আড্ডা। নিজস্ব চিত্র
বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘লকডাউন জারি হওয়া এলাকায় কড়া বিধিনিষেধ তো থাকছেই। এ ছাড়া অন্যত্রও অকারণে বেরোলে, দূরত্ব-বিধি না মানলে এবং মাস্ক না পরলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ সে ব্যাপারে এ দিন থেকেই কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
আরও পড়ুন: বাম-কংগ্রেসের পুর অভিযানে ‘ভাঙা হল’ দূরত্বের বেড়া
অভিযোগ, আনলক পর্বে দমদম, বিমানবন্দর, বিরাটি, মধ্যমগ্রাম, বারাসতে দোকানবাজার খুলে যাওয়ার পরে মাস্ক ছাড়াই ভিড়ের মধ্যে একে অন্যের গা ঘেঁষে শুরু হয়ে যায় কেনাকাটা। অটো, টোটোর ভিড়ে রাস্তায় শুরু হয় যানজটও। ফাঁকা গলির মধ্যে মাস্ক না পরে ছোটদের খেলতেও দেখা যায়। ইতিমধ্যেই ওই সব এলাকায় করোনা পজ়িটিভেরও সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। কোনও কোনও নার্সিংহোমে রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসক ও বহু কর্মীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ দিন বারাসতে একটি নার্সিংহোম বন্ধও করে দেওয়া হয়।
বারাসত শহর সংলগ্ন আমডাঙা, দত্তপুকুর, দেগঙ্গা, বেড়াচাঁপা এলাকার বড় বড় হাটগুলিতে এ দিনও দেখা যায় বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা মাস্ক পরেননি। দেখা মেলেনি পুলিশেরও। দেগঙ্গার বিডিও জানান, ইতিমধ্যে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৬২। কর্মীরা আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে একটি ব্যাঙ্কও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আবার প্রশাসনের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগও উঠেছে।
আরও পড়ুন: মৃত শিশু ওয়ার্ডেই তিন দিন, কোর্টে জানালেন এজি
বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই ব্যাঙ্কটির ঠিক নীচে এক সোনার দোকানির করোনা ধরা পড়ে। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও তাঁকে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যেতে এক দিন কেটে যায়। তার পর থেকে ওই দোকানির পরিজনেরা গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক দলগুলির দায়িত্ববোধ নিয়ে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই আমপানে দুর্নীতি থেকে শুরু করে পেট্রল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি—নানা বিষয় নিয়ে প্রতিদিনই মিছিল, অবরোধ, বিক্ষোভ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। মঙ্গলবারও তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষে উত্তাল হয় গাইঘাটা। তবে সামাজিক দূরত্ব রেখে, মাস্ক পরেই আন্দোলন, সভা করা চলছে দাবি করেছে সব দলই। যদিও তা মানতে রাজি নন সাধারণ মানুষ।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ২৫ জনের বেশি জমায়েতের তো নিয়মই নেই। তা হলে কী করছে পুলিশ?
পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘২৫ জনের বেশি জমায়েত করলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy