খাবার মজুত করার জন্য দোকানে ভিড়।
অমিত ভাওয়াল, বাড়ি বেহালার সরশুনায়। ৬ জনের সংসারে মাসে ২৫ কেজি চাল কিনলেই হয়ে যায়। করোনা গুজবের জেরে ৩টি চালের বস্তা কিনে বাড়িতে ডাঁই করেছেন অমিত।
সঙ্গে ডাল, তেল, এমনকি শাক-সব্জি কিনে ফ্রিজে ভর্তি করে ফেলেছেন। ছেলের এই কীর্তি দেখে মায়ের প্রশ্ন, ‘‘বাড়িতে বাজার তুলে আনলি নাকি?’’ তাঁর জবাব: ‘‘করোনাভাইরাস যে ভাবে ছড়াচ্ছে, বাজার বন্ধ হয়ে যাবে শুনছি। বাড়িতে চাল-ডাল রেখে দিই। কখন যে কী হয়!’’ অমিত জানালেন, এ কথা শুনে মা-বউ উল্টে তাঁকেই নানা কথা বলতে শুরু করেন।
যে পরিমাণে সোশাল মিডিয়ায় বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে গুজব রটছে, তাতে অনেকেই অমিতের মতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। শুধু কলকাতাতেই নয়, আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রাম-শহরতলিতেও। যেমন, হাওড়ার শ্যামপুরের বাসিন্দা পল্টু দাস। এ দিন সকালে থলে নিয়ে পড়ি কি মরি করে বাজারে ছুটেছেন। একটি মুদিখানা দোকানদারের হাতে ফর্দ ধরিয়ে দেন।বাজারের যা অবস্থা তাতে করোনাভাইরাসের গুজবে জ্যান্ত মুরগির দাম ৩৫ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। এ বার বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে শাক-সবজি থেকে শুরু করে চাল-ডাল-মশলা— যে যেমন পারছেন, এই সুযোগে দাম নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুন: পার্কে? যায়নি ।। সিনেমা? যায়নি ।। শপিং মল? যায়নি
বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও পৌঁছেছে। তিনি এ দিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মলনের সময় পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তাদের বলেন, “বাজারের উপর কড়া নজর রাখতে হবে। যাতে কেউ কোনও পণ্য কালোবাজারি করতে না পারেন। বাজার বন্ধ হয়ে যাবে বলে জেলায় জেলায় গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ ধরনের গুজব ছড়ালে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত জিনিসপত্র রয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
এ দিন বাজারে পটলের দাম কেজিপ্রতি ১০০টাকা, টোম্যাটো ৩০-৪০ টাকা, শশা ২০-৩০ টাকাছিল।অন্যান্য শাক-সব্জির দাম ধীরে ধীরে বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম ফের বেড়ে ৪০ টাকা হয়ে গিয়েছে। আলুর দাম বাড়ছে। এক দিকে করোনাভাইরাসের কারণে, বাজারে মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজারের আকাল দেখা দিচ্ছে। এ বার অভিযোগ, একাংশের ব্যবসায়ীরা করোনা-আতঙ্কের সুযোগ নিয়ে রটিয়ে দিচ্ছেন, কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। যেমন পাঁঠার মাংসের দাম ৬৪০ থেকে ৭০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।তেমনই চালের বস্তা পিছু ৫০ থেকে ১০০টাকা বেশি নিচ্ছেন কেউ কেউ। শিয়ালদহের কোলে মার্কেট থেকে শুরু করে গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট, বেহালা-সহ শহরের বিভিন্ন বাজারে নজরদারি চালাচ্ছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর অফিসারেরা।
আরও পড়ুন: কোয়রান্টিন নয়, ছুটির মেজাজে সবার সঙ্গেই বিদেশ-ফেরত অভিষেক, দেবেন ভাষণও!
রাজ্য সরকারের গঠিত টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, “বাজারে বাজারে টাস্ক ফোর্সের লোকজন ঘুরছে। ইবিও নজরদারি চালাচ্ছে। পোস্তা-বড়বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে চাল-ডাল-আটা-ময়দা-সহ সব জিনিসপত্র মজুত রয়েছে। পণ্যপরিবহণে কোনও অসুবিধা হয়নি। গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”
কলকাতা পুলিশও জানিয়েছে, সোশাল মিডিয়ায় অনেকে গুজব ছড়াচ্ছে। তারা নজরদারি চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে লালবাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy