সাংগঠনিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চলেছে বাংলার কংগ্রেস। ফাইল চিত্র।
দু’দিন পরে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদের জন্য নির্বাচন। প্রায় আড়াই দশক পরে আবার এমন ভোট-প্রক্রিয়ার সাক্ষী হতে চলেছে কংগ্রেস। প্রদেশ ও জেলা কংগ্রেসের মধ্যে প্রবল কোন্দলের আবহেই এ বার এই সাংগঠনিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চলেছে বাংলার কংগ্রেস। যে তালিকার ভিত্তিতে ভোট, তা নিয়েই নানা রকমের বিতর্ক এবং প্রশ্ন!
প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (পিসিসি) প্রতিনিধির সংখ্যা ৫৪৩। অর্থাৎ আগামী সোমবার বিধান ভবনে গোপন ব্যালটে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বাক্সে ফেলার অধিকার আছে ৫৪৩ জনের। দলের সাংগঠনিক ব্লক ধরে প্রতিনিধিত্বের নিয়ম মেনে পিসিসি-র ওই কলেবরই নির্দিষ্ট করা আছে। কিন্তু এরই মধ্যে বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল ৮৭২ জনের পিসিসি সদস্যদের একটি খসড়া তালিকা! যা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে প্রদেশ ও জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে বিতর্ক ও বিভ্রান্তি চরমে ওঠে। এমন তালিকা কারা কী ভাবে বাইরে ছেড়ে দিল, সেই প্রশ্নেও কংগ্রেসের মধ্যে চাপান-উতোর আছে। শেষ পর্যন্ত ৫৪৩ জনের তালিকাই এআইসিসি থেকে অনুমোদিত হয়ে এসেছে। সূত্রের খবর, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক নিলয় প্রামাণিক জেলা সভাপতিদের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখে দাবি করেছেন, ভুল-ভ্রান্তি ও বিভ্রান্তির জন্য জেলা নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষই দায়ী। কোনও ‘ভুল’ না করেও প্রদেশ কংগ্রেসকে মাঝখানে পড়ে ‘ভুগতে হচ্ছে’ বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, বিতর্কের মুখে ‘দায়’ ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা যে প্রদেশ কংগ্রেস করছে, সম্পাদকের এমন চিঠিই তার স্পষ্ট ইঙ্গিত!
ঘটনাচক্রে, নির্বাচনের আগেই সদস্যপদ প্রক্রিয়ার জন্য বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পিআরও নাসির হোসেন অব্যাহতি নিয়েছেন। জেলায় জেলায় ঘুরে সদস্যপদের কাজ দেখভাল করছিলেন যিনি, সেই এপিআরও কেশর সিংহ বিদেশে গিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এমতাবস্থায় এআইসিসি-র তরফে পিআরও-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্জাবের শামসের সিংহ ধিঁলোকে। আর ভোটের দিন নির্বাচনী অফিসার হিসেবে আসার কথা রাজস্থানের বিবেক জৈনের। সভাপতি পদে মল্লিকার্জুন খড়্গের প্রতিদ্বন্দ্বী শশী তারুর শেষমেশ আর কলকাতায় আসছেন না। কাজ সেরেছেন ফোনেই।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, তিন পাতার চিঠিতে প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক লিখেছেন, কিছু জেলা সভাপতি প্রাক্তন বিধায়ক-সহ উল্লেখযোগ্য কিছু নেতার নাম পিসিসি সদস্যের জন্য সুপারিশ করতে ‘ভুলে’ গিয়েছিলেন! নানা ভাবে বেশ কিছু নাম বাদ গিয়েছিল, আবার উদয়পুরের ‘সঙ্কল্প শিবিরে’র সুপারিশ কিছ ক্ষেত্রে মানা হয়নি। চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রদেশ কংগ্রেসকে প্রক্রিয়ার মধ্যে না রেখে জেলা কংগ্রেস তাদের নামের সুপারিশ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের (দিল্লি) কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল। আবার নির্বাচন কর্তৃপক্ষও নিয়মমতো সেই নাম থেকে কাটছাঁট করে তালিকা তৈরি করেন। ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, সর্বোচ্চ স্তরে দরবার করে প্রদেশ কংগ্রেসই বেশ কিছু ভুল সংশোধন করিয়েছে। কিছু নাম পরে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে আশ্বাসও মিলেছে। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ভুল না করেও প্রদেশ কংগ্রেসকে প্রশ্ন ও সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। কিছু নেতা ‘ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে’ সংবাদমাধ্যমকেও ‘বিভ্রান্ত’ করে প্রদেশ কংগ্রেসের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। এই প্রেক্ষিতে প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদকের আবেদন, প্রকাশ্যে পরস্পরের প্রতি দোষারোপ বন্ধ করে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করুন সবাই।
এমন চিঠি পেয়ে জেলা নেতৃত্বের অনেকেই হতবাক। এক জেলা সভাপতির কথায়, ‘‘যে ভুয়ো তালিকার কথা বলা হচ্ছে, কোনও জেলার পক্ষে সেটা করা সম্ভব? সব নাম এক জায়গায় করার এক্তিয়ার কোনও জেলার আছে? আর জেলা থেকে নাম পাঠানোর পরেও বাদ দেওয়া, ঢোকানোর খেলা হয়েছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy