Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Swastho sathi

হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, ফিরিয়ে দিল হাসপাতাল

রাজ্যের প্রায় ১০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আসবেন বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শাকিলা বিবি

শাকিলা বিবি

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:২৪
Share: Save:

চিকিৎসকেরা বলছেন, হৃদ‌্‌যন্ত্রের অবস্থা ভাল নয়। জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিয়ে কলকাতার নামী বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিল ভাঙড়ের একটি পরিবার। অভিযোগ, সেখানে তাদের শুনতে হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা হয় না। বহির্বিভাগে দেখাতে হবে রোগী। চিকিৎসকের পরামর্শমতো পরীক্ষা করাতে হবে বাইরে থেকে। চিকিৎসকের ফি, পরীক্ষার খরচ কোনও কিছুতেই মিলবে না স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুযোগ। বাধ্য হয়ে ভাঙড়ের শাকিলা বিবির পরিবার বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

রাজ্যের প্রায় ১০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আসবেন বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতেও তুঙ্গে উঠেছে স্বাস্থ্যসাথীর চাহিদা। কিন্তু ভাঙড় ২ ব্লকের পোলেরহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মাছিভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা শাকিলা বিবির অভিজ্ঞতা অন্য। তাঁর ছেলে রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা অসহায়, গরিব মানুষ কী ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে রোগীর চিকিৎসা করাব। কার্ড থাকা সত্ত্বেও মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’ বিডিও ভাঙড় ২ কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেইমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

শাকিলা বিবি গত ১৯ ডিসেম্বর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই রোগীকে নিয়ে যায় তার পরিবার। সেখানে জানানো হয়, রোগীর অবস্থা ভাল নয়। এই মুহূর্তে হাসপাতালে বড় হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ নেই। এর পরই শাকিলাকে সল্টলেকের আমরি-তে নিয়ে যান রবিউল। অভিযোগ, সেখানে তাঁকে শুনতে হয় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা মিলবে না। শুনতে হয় চিকিৎসার খরচ সংক্রান্ত হিসেব। যা দৈনিক ৫০ হাজার টাকার আশেপাশে। রবিউলের দাবি, তিনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের হেল্পলাইন নম্বরে বার বার ফোন করলেও সাড়া পাননি। পরে মাকে কলকাতার এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও শয্যা না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর ওষুধ দিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ফের এক বার স্বাস্থ্যসাথীর ‘হেল্পলাইনে নম্বরে’ চেষ্টা। ফের একই ফল। তার পর রবিউল দ্বারস্থ হন পুলিশের। তাদের পরামর্শমতো অভিযোগ করেন বিডিওর কাছে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে, যে কোনও সরকার অনুমোদিত সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে সর্বাধিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে। তা হলে কেন ওই বেসরকারি হাসপাতালে মিলছে না চিকিৎসা? আমরির এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট চৌধুরী মিলন মহাপাত্র বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে কী ধরনের পরিষেবা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে আমাদের মিটিং চলছে। তবে এমন হওয়ার কথা নয়। এ বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য যে মূল্য নির্দিষ্ট রয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। তাদের বক্তব্য, এত কম দামে নির্দিষ্ট মান বজায় রেখে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। সরকারের সঙ্গে দর নিয়ে চলছে আলোচনা। কিন্তু প্রশ্ন হল, সমাধানসূত্র বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত কি এ ভাবেই হয়রান হতে হবে রবিউলদের!

অন্য বিষয়গুলি:

Swastho sathi Mamata banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy