সাইফুর রহমান
স্নায়বিক সমস্যায় এক মাস ধরে রোগভোগে কলকাতার বড় হাসপাতাল থেকে রায়গঞ্জের কাছে হেমতাবাদে বাড়ি ফিরতে উতলা হয়ে উঠেছিলেন ৩৪ বছরের সাইফুর রহমান। বাড়িতে দশ বছরের ছেলে আর ছ’বছরের মেয়েকে কত দিন দেখেননি, বলতে বলতে চোখ ছলছল করছিল তাঁর। বৃহস্পতিবার বিকেলে রহস্যজনক ভাবে সেই রোগীই হঠাৎ নিখোঁজ বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজি (বিআইএন) থেকে। কী ভাবে এমনটা ঘটল, তা নিয়ে অন্ধকারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
ওই যুবকের স্ত্রী রুবিনা খাতুন ও ভাই ফাহিদুল রহমান এখন এই বিরাট শহরে অসহায় ভাবে স্বামীর খোঁজে দরজায় দরজায় ঘুরছেন। রুবিনার কথায়, ‘‘হাসপাতাল থেকে বলেছিল, আমার স্বামীর শুক্রবারই ছুটি হয়ে যাবে। উনি সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। শিগগিরই বাড়ি ফিরতে পারবেন জেনে খুশি ছিলেন তিনি। এর মধ্যে হঠাৎ করে কী যে হল, কিচ্ছু মাথায় ঢুকছে না।’’ ভবানীপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি নথিভুক্ত করিয়েছেন রুবিনা। তিনি জানান, ওই দিন বিকেলে স্বামীর সঙ্গে কথা বলেই কিছু ওষুধ আনতে হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে এক তলায় নেমে দোকানে গিয়েছিলেন তিনি। বিকেল পাঁচটা নাগা বেরিয়ে ওয়ার্ডে ফেরেন সন্ধ্যায় ছ’টা নাগাদ। দেখেন স্বামীর চিহ্ন নেই। রুবিনার দাবি, স্বামীর সঙ্গে কোনও টাকাপয়সা নেই। জলজ্যান্ত মানুষটা কোথায় গেল, সবটাই ধোঁয়াটে। এসএসকেএম হাসপাতাল লাগোয়া বিআইএন, ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইপিজিএমআর)-এর অন্তর্গত। আইপিজিএমআর-এর অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধারণত এ সব ক্ষেত্রে আমরা পুলিশের সাহাষ্য নিয়ে থাকি। কী ভাবে কী ঘটল, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’
আদতে ‘পরিযায়ী শ্রমিক’ সাইফুর হরিয়ানায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। লকডাউনের শেষে বাড়ি ফেরেন। কুরবানির ইদের পরে আবার ফিরে যান তিনি। অসুস্থ হয়ে হরিয়ানা থেকে তিনি ফের বাড়ি ফেরেন। রুবিনা জানিয়েছেন, স্বামী মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে কথা বলার শক্তিই হারিয়ে ফেলেছিলেন।কিছু দিন মালদহের হাসপাতালে ছিলেন। এর পরে অক্টোবরের শেষ দিকে তিনি বিআইএনে চিকিৎসাধীন হন। সাইফুর সুস্থ হয়ে উঠছেন দেখে তাঁর ভাই ফাহিদুল হেমতাবাদে ফিরে যান। তিনি নিখোঁজ শুনে ফের বাধ্য হয়ে কলকাতায় এসেছেন। এখন মাথার উপরে ছাদ নেই। জলজ্যান্ত লোকটার খোঁজ নেই। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না রুবিনারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy