ছেলেকে হারিয়ে অসহায় বাবা। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে
শহরের তিনটি হাসপাতালে ঘুরেও কোথাও ঠাঁই হল না যুবকের। রেফার করা হল একের পর এক হাসপাতালে। শেষ পর্যন্ত সোমবার বাবা-মায়ের সামনে স্ট্রেচারেই মৃত্যু হল ছেলের। ধুম জ্বর নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে কলকাতা এসে ন্যূনতম চিকিৎসার সুযোগ পেলেন না ওই যুবক। প্রথমে এসএসকেএম, তার পর শম্ভুনাথ পণ্ডিত এবং শেষে মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতাল গিয়েও অশোক রুইদাসকে ভর্তি করাতে পারল না তাঁর পরিবার। অভিযোগ, চিকিৎসার কথা বলতেই রেফার করে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছেন হাসপাতালের কর্মীরা।
অশোকের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, টাইফয়েড হয়েছিল তাঁর। ধুম জ্বরও ছিল। এই অবস্থায় দক্ষিণ বারাসতের একটি নার্সিংহোম থেকে আজ সকাল সাড়ে আটটার সময় প্রথমে আনা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি না নিয়ে বলা হয়, ‘‘রোগীর জ্বর আছে, শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যান।’’ শম্ভুনাথ হাসপাতালে গেলে বলা হয়, তাঁরা ভর্তি নিতে পারবেন না। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। সেখান থেকে মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছনোর পর, করোনা পরীক্ষার জন্য ফর্ম ফিলাপ করতে বলা হয়। অ্যাম্বুল্যান্সের স্ট্রেচারেই শুয়ে ছিলেন অশোক। অভিযোগ, যে অ্যাম্বুল্যান্সটি ঠিক করে দেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে, তাতে অক্সিজেন ছিল না। নানা ধরনের ফর্ম ফিলাপ করতে করতে রোগীর আত্মীয়েরা লক্ষ করেন, অশোক আর কথা বলছেন না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেই স্ট্রেচারের উপর তিনি মারা যান বলে পরিবারের দাবি। যদিও মেডিক্যাল কলেজের দাবি, চিকিৎসার সব বন্দোবস্তই করা হয়। সঙ্কটজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল রোগীকে।
এই ঘটনার পর মৃতের পরিবার ওই তিন হাসপাতালকে কাঠগড়ায় তোলে। তাদের অভিযোগ, তিন হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অশোক। এসএসকেএম হাসপাতাল যদি ছেলেকে ভর্তি নিত, তা হলে অশোককে এ ভাবে মরতে হত না এমনটাই অভিযোগ ওই পরিবারের। কর্তব্যে অবহেলার শাস্তির দাবি জানিয়ে মেডিক্যাল কলেজ থেকেই ওই পরিবার অ্যাম্বুল্যান্স করেই ছেলের দেহ নিয়ে চলে যান।
আরও পড়ুন: হুগলিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের
আরও পড়ুন: বিধায়ক মৃত্যু: সিবিআই দাবি উড়িয়ে তদন্তভার সিআইডিকে দিল রাজ্য
চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, জ্বর দেখেই হয়তো করোনা সন্দেহ হয়েছিল। তাই রেফার করা হতে পারে। যে হেতু মেডিক্যাল কলেজ এখন কোভিড হাসপাতাল তাই সেখানে পাঠানো হয়। এসএসকেএম এবং শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ‘ফিভার ক্লিনিক’ আছে। তা হলে কেন ওই রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হল, তার তদন্ত হওয়া উচিত। সব হাসপাতালেই কোভিড চিকিৎসা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বার বার বলা হচ্ছে, রেফার করে রোগী ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। তা সত্ত্বেও প্রতি দিনই এমন ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাসকে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy