পার্থের সেই গাড়ি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা চত্বরে মঙ্গলবার বিকেলে আচমকাই দেখা মিলল সেই গাড়ির। যার নম্বর ডাব্লিউ বি ১০-০০০৬। যে গাড়ির সওয়ারি হয়ে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ঘুরেছেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থ যখন তাদেরই হেফাজতে, তখন তাঁর গাড়ি বিধানসভায় কী করছে! জানা গিয়েছে, পরিষদীয় মন্ত্রী হিসাবে বিধানসভা থেকে তাঁকে যে গাড়ি দেওয়া হয়েছিল, তা ফেরত পাঠিয়েছেন পার্থ।
২০১১-র ২০ মে শপথগ্রহণের পর থেকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পরিষদীয় দফতরের দায়িত্ব পার্থেরই কাঁধে। দস্তুর অনুযায়ী, পরিষদীয় মন্ত্রীর গাড়ির ব্যবস্থা হয় বিধানসভা থেকে। সেই মতো, পার্থ ঘুরতেন যে গাড়িতে তা দিয়েছিল বিধানসভা। সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলেই পার্থের দফতর থেকে বিধানসভাকে জানানো হয়, মন্ত্রী গাড়ি ফেরত দিতে বলেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে সেই গাড়িই ফিরল বিধানসভার গ্যারাজে। গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হয় বিধানসভা কর্তৃপক্ষের হাতে।
যদিও এ নিয়ে বিধানসভার কেউ কোনও মন্তব্যে নারাজ। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি মন্ত্রিত্ব থেকেও ইস্তফা দেবেন পার্থ? এই মুহূর্তে পরিষদীয় দফতর ছাড়াও শিল্প ও বাণিজ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের দায়িত্বে আছেন পার্থ। পরিষদীয় মন্ত্রী হিসেবে পাওয়া গাড়ি বিধানসভায় ফিরিয়ে দেওয়া কি রাজ্যের মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পথে প্রথম পদক্ষেপ? উঠছে প্রশ্ন।
আগামী বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি সেখানে হাজির থাকার কথা সমস্ত মন্ত্রীদের। সেই বৈঠকেই কি পার্থকে নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হবে? পার্থ কি সেই বৈঠকে ইস্তফা প্রসঙ্গে কিছু জানাবেন? তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
এসএসসি-তে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে শনিবার পার্থকে গ্রেফতার করে ইডি। ইডির দাবি, পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ প্রায় ২১ কোটি টাকা। উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির সম্পর্ক থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এর পর তৃণমূল যদিও পার্থকে দলীয় পদ (মহাসচিব) বা মন্ত্রিত্বের পদ থেকে সরাবে না বলে জানিয়েছে। তৃণমূল দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া চালানোর দাবি তুলেছে। দোষ প্রমাণিত হলে তৃণমূল পার্থের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, পার্থকে মন্ত্রী হিসেবে রেখে দেওয়া হবে। কিন্তু পার্থ যদি নিজে ইস্তফা দেন? মঙ্গলবার বিকালে বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা ‘সাদা গাড়ি’ সেই জল্পনায় অক্সিজেন জোগাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy