গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ
চিরদিন কারওরই সমান যায় না! কথাটা সত্যি। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা কিংবা শিল্পমন্ত্রী, একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল বা সরকারের ‘নাম্বার টু’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জীবনে অন্তত কথাগুলি অব্যর্থ ভাবে ফলে গিয়েছে। ‘জেল জীবন’ শুরুর পরে পার্থকে যাঁরা দেখেছেন, জাঁদরেল তৃণমূল নেতার শরীরী ভাষায় এমনটাই তাঁদের মনে হয়েছে।
জেল হাসপাতালে থাকলে তাও একটু স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা যেত। তা ঠিকই বুঝেছিলেন পার্থ। কিন্তু সে আশা তাঁর পূর্ণ হয়নি। এর বদলে প্রেসিডেন্সি জেলের নির্দিষ্ট সেলে কড়া পাহারায় ভূমিশয্যায় শুয়ে সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রীমশাইয়ের নতুন জীবন শুরু হয়। ? শুক্রবার রাত মেঝেয় শুয়ে কেটেছিল। তবে শনিবার দুপুরের পরে পার্থর সেলে খাটের বন্দোবস্ত হয়েছে। সরকারের মন্ত্রিগিরি করা ছাড়াও ব্যক্তিজীবনে বিভিন্ন সহকারীর যত্ন, সাহচর্যে পার্থ অভ্যস্ত। জেলে কী ভাবে তিনি একা থাকবেন, তা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। প্রেসিডেন্সি জেলের আধিকারিকদের মতে, পার্থের শরীরী ভাষায় হতাশার ছাপ! জেলকর্মীদের কারও কারও সামনে তিনি না কি হা-হুতাশ করেন, কর্পোরেটের চাকরি ছেড়ে রাজনীতি করতে আসাই তাঁর জীবনে কাল হল।
তবে জেল সূত্রের খবর, সত্তরোর্ধ্ব তৃণমূল বিধায়ক শারীরিক ভাবে যেন অসুস্থ না-হয়ে পড়েন সেটাও জেল কর্তৃপক্ষকে খেয়াল রাখতে হচ্ছে। যেমন, পার্থের জন্য নির্দিষ্ট প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের হাই সিকিয়োরিটি এক নম্বর ব্লকের সেলে কয়েক দিন আগেই কমোড বসানো হয়েছে। এই ব্যবস্থাপনা কার জন্য তা অবশ্য সরাসরি কেউ স্বীকার করেননি। আবার পার্থকে জেলের প্রথম রাতে মেঝেয় শুতে হলেও তাঁর বিছানার বন্দোবস্ত হিসেবে পাঁচটি কম্বল, পরিষ্কার সাদা চাদর, বালিশ ইত্যাদির জোগানে কার্পণ্য করেননি কর্তৃপক্ষ। এ দিন সকালে ডাক্তারি নির্দেশেই পার্থর শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁর জন্য খাটের বন্দোবস্ত হয়। জেলের কর্মীদের কাছে নির্দেশ গিয়েছে, পার্থ কোনও বাড়তি সুবিধে যেন না-পান। তবে একজন বয়স্ক নাগরিক হিসেবে এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা মাথায় রেখে কয়েকটি দিকে খেয়াল রাখা হোক। শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্দিষ্ট ‘সলিটারি সেলে’ (একা থাকার জেল কুঠুরি) ঠাঁই হওয়ার আগে অবশ্য সংশোধনাগারে পার্থর শারীরিক পরীক্ষা হয়েছিল। তাতে তাঁর ওজন কেজি তিনেক কমেছে। ডাক্তারদের মতে, গ্রেফতারির পরে মূলত সাধারণ খাবারদাবার খেতে বাধ্য হওয়াই সামান্য ওজন কমার কারণ। হতাশা বা মানসিক অবসাদে ওজন কমারধাক্কা অন্তত পার্থর ক্ষেত্রে হয়নি। কারণ, শুক্রবার কোর্ট লকআপেও পার্থ একঘেয়ে খাবারের বদলে একটু আধটু ভালমন্দর বায়না জোড়েন। পার্থকে রুটিমাংস দেওয়া নিয়ে আলোচনাও হয়। তবে পার্থর খাওয়াদাওয়া নিয়েও পুলিশকর্মীদের উপরে সতর্কতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই লিকার চা আর বিস্কুটের বেশি কিছু দেওয়া হয়নি। জেলেও পার্থকে প্রথম দিন রুটি, ডাল, তরকরির বেশি কিছু দেওয়া হয়নি।
পার্থ একা একটি সেলে থাকলেও জেল কর্মীরা তাঁকে দফায় দফায় দেখে যাচ্ছেন। এর মধ্যে জেল কর্তৃপক্ষের কয়েক জন ‘ইনফর্মার’ রয়েছেন। তাঁদের মাথাব্যথা, কোনও কর্মী অত্যুৎসাহের বশে যেন পার্থকে বাড়তি আপ্যায়ন না-করে বসেন। তাতে আবার সংশোধনাগারের বিধি লঙ্ঘিত হওয়ার অভিযোগ উঠতে পারে। অন্য দিকে, পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা আবার রয়েছেন আলিপুরে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তাঁকে খাবার এবং জল দেওয়ার আগে বার বার পরীক্ষা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy