শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
‘শো-কজ়’ বা কারণ দর্শানোর নোটিসেই শেষ নয়। আন্দোলনরত পার্শ্ব শিক্ষকদের বিষয়ে সরকার এ বার প্রয়োজনে কঠোর হবে বলে বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
ওই শিক্ষকদের উদ্দেশে পার্থবাবু বলেন, ‘‘আপনারা ধর্না, অনশন করে নিজেদের অসুস্থ করবেন না। ছাত্রদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটাবেন না। শুধু নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে না-ভেবে পড়ুয়াদের কথাও ভাবুন।’’ তার পরেই মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘অনেক সহানুভূতি নিয়ে সরকার সব সহ্য করেছে। এ বার আর ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলতে দেব না। কারা আন্দোলন করছেন আর কারা এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সব রিপোর্ট আমাদের কাছে আছে। দরকারে সরকার এ বার কঠোর হবে।’’
শিক্ষামন্ত্রীর প্রশ্ন, পার্শ্ব শিক্ষক-সহ সর্বস্তরের শিক্ষকদের বেতন ও ভাতা রাজ্য সরকার অনেকটাই বাড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও বুনিয়াদি শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকেরা বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন কেন? তাঁর কথায়, ‘‘ছাত্রদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে নিজেদের আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়ে অনেকে দিনের পর দিন রাস্তায় বসে থাকছেন। কেন্দ্র টাকা দিয়েছে আর সেই টাকা আমরা দিইনি, এই অভিযোগ যাঁরা করছেন, তাঁরা কাগজটা দেখান না। আর যে-সব শিক্ষক-শিক্ষিকা কেন্দ্রীয় হারে বেতন চাইছেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় স্কুলে যাচ্ছেন না কেন?’’
পার্থবাবুর দাবি, সমগ্র শিক্ষা অভিযানে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের পাওনা ১৭ হাজার কোটি টাকা। শিক্ষকদের বেতন ও ভাতা খাতে কোনও টাকা পাচ্ছে না রাজ্য। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার রাস্তার খোলা রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীরা আমার সঙ্গে আলোচনা করতে আসতেই পারেন। আলোচনার পথ খোলা আছে। তবে আমাকে আন্দোলন-মঞ্চে যেতে হবে কেন?’’
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা পার্শ্ব শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর অনুরোধ, সরকার এই শিক্ষকদের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে, এমন নথি থাকলে তা শিক্ষা দফতরকে দিন।
শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধের পরেও আন্দোলনকারী নেতানেত্রীরা জানিয়ে দিয়েছেন, হুমকি দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। আন্দোলনের নেত্রী মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘সরকার বলছে পার্শ্ব শিক্ষকদের জন্য কেন্দ্রীয় সাহায্য আসছে না। আমরা তো বলেছি, দফতর আমাদের নিয়ে একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করুক। একসঙ্গে কেন্দ্রের কাছে দরবার করব আমরা।’’ অন্য নেতা ভগীরথ মিশ্র জানান, দাবি না-মিটলে আন্দোলন বন্ধ হবে না। আলোচনা তাঁরাও চান। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের যে বঞ্চনা করা হয়েছে, সিএজি-র রিপোর্ট দেখলেই শিক্ষামন্ত্রী সেটা বুঝতে পারবেন।’’
কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে অনুপস্থিত থেকে আন্দোলনে শামিল হলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। স্কুলে না-গিয়ে আন্দোলন করার জন্য স্কুলশিক্ষা দফতর কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়ার পরে শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন, এটাকে ‘শো-কজ়’ বলা হবে কেন? তিনি বলেছিলেন, ‘‘এই শিক্ষকেরা কোথায়, খোঁজ নিতে বলেছি আমি। ছাত্ররা ক্লাসে বসে থাকবে আর শিক্ষকেরা অনুপস্থিত থাকবেন, এ কোন পরিস্থিতি?’’ এ দিন তিনি ফের তাঁর কড়া অবস্থান জানিয়ে দেন।
এ দিনই বিজেপি-পন্থী বেঙ্গল ইন্টেলেকচুয়াল সোসাইটির সদস্যেরা পার্শ্ব শিক্ষকদের আন্দোলনের সমর্থনে একটি মিছিল বার করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy