হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অভিযুক্তকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।
মঙ্গলবার দুপুরে পার্থকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত তাঁকে আলাদা করে কোনও পরীক্ষা করাতে দেওয়া হয়নি। নানা শারীরিক সমস্যার কারণে নিয়মিত বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা করাতে হয় পার্থকে। সেগুলি আগের মতোই চলবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনও জেল হেফাজতেই রয়েছেন পার্থ। গত ২০ জানুয়ারি জেলে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। এর পরেই আদালতে পিটিশন জমা করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আবেদনে পার্থ জানিয়েছিলেন যে, এসএসকেএমে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হতে পারছেন না তিনি। তাই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক তাঁকে। এর পরেই এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট তলব করে পার্থের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল আদালত। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে বিচারক পার্থকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানোর অনুমতি দেন। তবে শর্ত দেওয়া হয়, চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে হবে পার্থকেই। তাতে রাজি হন প্রাক্তন মন্ত্রী। সেই মতো গত ২৮ জানুয়ারি রাতে এসএসকেএম থেকে বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
এর পর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে ওই হাসপাতালের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আপাতত সুস্থ রয়েছেন পার্থ। হাসপাতালের তরফে পার্থের মেডিক্যাল রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়। কলকাতার বিচার ভবনে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক বিচারককে জানান, পার্থ এখন ভালই আছেন। এক-দু’দিনের মধ্যেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। তার চার দিনের মাথায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন পার্থ।
আরও পড়ুন:
গত আড়াই বছর ধরে জেলেই রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত পার্থ। ২০২২ সালের ২২ জুলাই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইডির পরে সিবিআইয়ের হাতেও গ্রেফতার হন পার্থ। যে দিন গ্রেফতার হন, সে দিনই পার্থকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি কেন এসএসকেএমে ভর্তি হতে চাইছেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ইডি। হাই কোর্টের বিচারপতিও এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী পার্থের আইনজীবীকে বলেছিলেন, ‘‘এসএসকেএম প্রতিটি প্রভাবশালীর জন্য নিরাপদ জায়গা।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি নাম করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে ভুবনেশ্বরের এমসে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে। সেখানেই তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করায় ইডি। এর পর থেকে জেলে বেশ কয়েক বার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পার্থ। হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছে। সেখান থেকেই এ বার জেলে ফিরলেন প্রাক্তন মন্ত্রী।