পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্য।
অনলাইন ক্লাসের নামে ‘দুর্নীতি’ সম্পর্কে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সবই জানতেন। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকেও সে ব্যাপারে তিনি জানিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও ‘দুর্নীতি’ রুখতে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। মানিকের ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের আবেদন করে আদালতে এই যুক্তিই দেখাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এ-ও দাবি করেছে, অনলাইন ক্লাস পরিচালনার জন্য মানিকের ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্যের সংস্থা ‘এডুক্লাসেস অনলাইন’-কে ২.৪৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার কলকাতার নগরদায়রা আদালতে মানিককে হাজির করিয়ে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের আবেদন করে ইডি। আদালতে লিখিত নথি জমা দিয়ে তদন্তকারী সংস্থার দাবি, অতিমারির শুরুতে অর্থাৎ ২০২০ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ‘অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে মানিকের ছেলের সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ধাপে ধাপে মোট ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছে অনলাইন ক্লাসের জন্য।
ইডির দাবি, ‘এডুক্লাসেস অনলাইন’-এর মাধ্যমে পড়ুয়াদের জন্য মাথা পিছু ৫০০ টাকার বিনিময়ে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। মানিকের এই ‘অবৈধ কার্যকলাপ’ সম্পর্ক অবগত ছিলেন পার্থ। তা প্রাক্তন মন্ত্রীর মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন থেকেই স্পষ্ট। ওই সব কার্যকলাপের কথা পার্থ জানিয়েও ছিলেন মানিককে।
প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট মামলায় চার্জশিট দিয়ে পার্থ ও মানিকের হোয়াট্সঅ্যাপ কথোপকথনের বিষয়টি আগেই প্রকাশ্যে এনেছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, পার্থের সঙ্গে ১০ মিনিটের জন্য কথা বলতে চেয়েছিলেন মানিক। আবার, মানিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থকে মেসেজ করেছেন জনৈক ব্যক্তি। যেখানে লেখা ছিল, ‘‘দাদা, মানিক ইজ় টেকিং মানি যা-তা ভাবে।’’ অর্থাৎ, মানিকের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ ভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ইডির দাবি, জনৈক ওই ব্যক্তি পার্থকে জানিয়েছিলেন, অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রাইভেট কলেজের পড়ুয়ারা ৫০০ টাকা করে না দিলে তাঁদের ‘ধমক’ দেওয়া হচ্ছে। হয়রানির শিকার হচ্ছেন ছেলেমেয়েরা। তদন্তকারীদের দাবি, সেই ব্যক্তিগত বার্তাই মানিককে ‘ফরোয়ার্ড’ করেছিলেন পার্থ।
শুক্রবার ইডি আদালতে দাবি করেছে, সব জানার পরেও মানিককে আটকাননি পার্থ। পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া রুখতে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হয়নি সেই সময়। যা থেকে প্রমাণ হয়, পার্থ এবং মানিক দু’জনে সব কিছু জানা সত্ত্বেও তাঁরা চুপ ছিলেন। ‘দুর্নীতি’ রুখতে কোনও পদক্ষেপ করেননি তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy