গাড়ি রাখার জন্য শনিবার থেকে কলকাতায় বর্ধিত হারে পার্কিং ফি দিতে হবে। প্রতীকী ছবি।
গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য এ বার থেকে বেশি টাকা গুনতে হবে কলকাতায়। শনিবার থেকেই বৃদ্ধি পেল শহরের পার্কিং ফি। দু’চাকা, চার চাকা থেকে বাস, পণ্যবাহী গাড়ি— সব ক্ষেত্রেই বর্ধিত হারে পার্কিং ফি দিতে হবে। কলকাতা পুরসভার ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে পার্কিং ফি বৃদ্ধির প্রস্তাবটি পাশ হয়। সেই মতোই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করা হল।
এত দিন প্রতি ঘণ্টায় দু’চাকার গাড়ির ক্ষেত্রে পার্কিং ফি দিতে হত ৫ টাকা। এখন থেকে প্রথম ২ ঘণ্টার জন্য দিতে হবে ১০ টাকা। ৩ ঘণ্টা রাখলে গুনতে হবে ৪০ টাকা। ৪ ঘণ্টার জন্য পার্কিং ফি ৬০ টাকা। ৫ ঘণ্টার জন্য দিতে হবে ৮০ টাকা। ৫ ঘণ্টা পার হলেই ঘণ্টাপিছু দিতে হবে ৫০ টাকা।
চার চাকার গাড়ির ক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টায় দিতে হত ১০ টাকা। শনিবার থেকে দিতে হবে ২০ টাকা। ২ ঘণ্টার জন্য পার্কিং ফি ৪০ টাকা। ৩ ঘণ্টার জন্য পার্কিং ফি ৮০ টাকা। ৪ ঘণ্টার জন্য দিতে হবে ১২০ টাকা। ৫ ঘণ্টা পার হলে পার্কিং ফি ১৬০ টাকা। ৫ ঘণ্টা পার হলে ঘণ্টা পিছু দিতে হবে ১০০ টাকা।
বাস, লরি-সহ পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রেও পার্কিং ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এত দিন, বাস, লরি পার্কিংয়ের জন্য ২০ টাকা দিতে হত। নতুন ফি কাঠামোয় টাকার অঙ্ক বেড়ে হয়েছে ৪০। ৪ ঘণ্টা পার্কিং করলে দিতে হবে ২৪০ চাকা। ৫ ঘণ্টার বেশি সময় হলেই গুনতে হবে ৩২০ টাকা। ৫ ঘণ্টা সময় পার করলেই ঘণ্টাপিছু দিতে হবে ২০০ টাকা। অতিরিক্ত সময় পার্কিং এলাকায় গাড়ি রাখার প্রবণতা কমাতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।
কলকাতার তুলনায় দেশের অন্য শহরে ঘণ্টাপ্রতি পার্কিং ফি অনেকটাই বেশি। আবার, কলকাতারই বিভিন্ন শপিং মলে ঘণ্টাপ্রতি পার্কিং ফি ৩০ টাকা। রাস্তা সাধারণ মানুষের চলাফেরার জায়গা। ফলে সেখানে গাড়ি রাখলে ফি দেওয়াটাই নীতি। এই নীতিতেই সর্বত্র পার্কিং ফি নেওয়া হয়। তবে শহরের গাড়ি এবং বাইক ব্যবহারকারীদের অনেকেরই অভিযোগ, বর্ধিত যে হার পুরসভা ঘোষণা করেছে, ইতিমধ্যেই তার থেকে বেশি টাকা দিতে হয় গাড়ি কিংবা বাইক পার্কিং করতে গেলে। চার চাকার গাড়ি পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় প্রতি ঘণ্টায় ৩০ টাকাও নেওয়া হয়। দু’চাকার ক্ষেত্রে ১০, ১৫ টাকা নেওয়া হয়। এমনকি, অনেক সময় ২০ টাকাও নেওয়া হয়। এ বার পার্কিং ফি বৃদ্ধির ফলে আরও বেশি কড়ি গুনতে হবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
শুক্রবার কলকাতা পুরসভায় পার্কিং ফি সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠকে বসেছিলেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার। সেই বৈঠকে ছিলেন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা এবং পার্কিং ফি আদায়ের দায়িত্বে থাকা এজেন্সির কর্তারা। সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, যেখানে ই-পস মেশিন চালু হয়েছে, সেখানে নগদে পার্কিং ফি নিলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে জরিমানা করা হবে। যিনি গাড়ি রাখছেন, তাঁকেও জরিমানার মুখে পড়তে হবে। নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করার বিষয়ে জটিলতা রয়েছে। শহরে ৭০০০-রও বেশি জায়গায় পার্কিং লটে নতুন করে এজেন্সি নিয়োগ করার জন্য টেন্ডার ডেকেছিল পুরসভা। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু জটিলতা থাকায় টেন্ডার খোলার পরেও তা বাতিল করে দিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শনিবার থেকেই নতুন পার্কিং ফি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। টেন্ডার বাতিল হাওয়ায় এজেন্সিগুলির সঙ্গে পুরসভার নতুন করে চুক্তি হয়নি। নতুন চুক্তি হলে যে বাড়তি পরিমাণ অর্থ পার্কিং লট থেকে উঠত, তার অংশ পেত পুরসভা। কিন্তু এখন টেন্ডার বাতিল হয়ে যাওয়ায় বাড়তি ফি আদায় হলে তা সরাসরি পুরসভার হাতে নাও আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের মতে, যত দিন না নতুন করে চুক্তি হচ্ছে, তত দিন বর্ধিত হারে টাকা নিতে হবে পুরসভাকে। যদি দেখা যায়, এজেন্সির থেকে টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে গরমিল হচ্ছে, তা হলে ওই এজেন্সিকে বাতিল করে অন্য এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে পুরসভা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy