Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ মামলা উঠতে পারে আজ

২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পার্ক স্ট্রিটে একটি পাঁচতারা নাইট ক্লাবের বাইরে থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শিবাজী দে সরকার ও শমীক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৯
Share: Save:

নির্যাতিতা মারা গিয়েছেন সাড়ে চার বছর আগে। কিন্তু এখনও বিচার শেষ হয়নি পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ কাণ্ডের। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কাদের খান-সহ দু’জনের বিরুদ্ধে দেড় বছর আগে চার্জ গঠন করা হলেও বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে অন্য তিন অভিযুক্তকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল কলকাতার নগর দায়রা আদালত। তার আগেই, ২০১৫-র ১৩ মার্চ এনসেফ্যালাইটিসে মারা যান নির্যাতিতা। নিম্ন আদালতে ঘোষিত সাজার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ২০১৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন ওই মহিলার বাবা। সেই মামলার কী অবস্থা, তা জানা যায়নি।

আজ, সোমবার হাইকোর্টে সেই মামলা উঠতে পারে কাদেরের সঙ্গে ধরা পড়া মহম্মদ আলির আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে। আলির কৌঁসুলি ফিরোজ এডুলজি জানান, চার্জ গঠন হলেও তাঁর মক্কেলের বিচার হচ্ছে না। হাইকোর্টে সেই আবেদন জানানোর পরে গত মার্চে বিচারপতি আশা অরোরা বলেছিলেন, তিন মাসে বিচার শেষ করতে হবে। কিন্তু তা হয়নি। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে তাঁর মক্কেলের বিচার না-হওয়ার বিষয়টির উল্লেখ করেন এডুলজি। আজ সেই আর্জির শুনানি হতে পারে বিচারপতি সেনগুপ্তের এজলাসেই।

২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পার্ক স্ট্রিটে একটি পাঁচতারা নাইট ক্লাবের বাইরে থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়। সেই ঘটনায় সুমিত বজাজ, নাসির খান আর রুমান খান ধরা পড়লেও কাদের ও আলি ফেরার ছিলেন। কাদেরকে ধরার চেষ্টা হলেও পুলিশি সূত্রের দাবি, এক প্রভাবশালী অভিনেত্রী-বান্ধবীর মদতে তিনি পালিয়ে যান। পরে, ২০১৬-র ২৯ সেপ্টেম্বর গাজিয়াবাদ থেকে কাদের ও আলিকে পাকড়াও করে লালবাজার। ২০১৮ সালের এপ্রিলে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন: ন’বছর আগের ৩ খুনের মামলায় চার্জশিট, মুকুল-মণিরুলের বিরুদ্ধে

এক লহমায়

২০১২

• ৫ ফেব্রুয়ারি: মহিলাকে গাড়িতে তুলে গণধর্ষণ।
• ৯ ফেব্রুয়ারি: পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের।
• ১৮ ফেব্রুয়ারি: গ্রেফতার ৩। কাদের খান, মহম্মদ আলি ফেরার।
• ১০ মে: পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট।

২০১৫

• ১৩ মার্চ: নির্যাতিতার মৃত্যু এনসেফ্যালাইটিসে।
• ১১ ডিসেম্বর: রুমান খান, নাসির খান ও সুমিত বজাজের ১০ বছর জেল।

২০১৬

• ২৯ সেপ্টেম্বর: গাজিয়াবাদে পাকড়াও কাদের ও আলি।

২০১৮

• ২০ এপ্রিল: কাদের ও আলির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন।

হায়দরাবাদে ধর্ষণ এবং পুলিশের ‘এনকাউন্টারে’ অভিযুক্তদের মৃত্যুর পরে ধর্ষণ মামলার বিচারে দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সময়ে বিচার না-পেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই নির্যাতিতারা ‘হারিয়ে যান’। ফলে ধর্ষণে দোষীদের সাজার ভয়ও কমছে বলে বহু মানবাধিকার সংগঠনের পর্যবেক্ষণ।

প্রশ্ন উঠছে, পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের বিচার কি সেই দীর্ঘসূত্রতার প্রমাণ নয়?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE