Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
RG Kar Medical College and Hospital Incident

ষষ্ঠী থেকে বাড়ির সামনে ধর্নায় বসবেন আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা, পাশে থাকবেন আত্মীয়-স্বজনেরা

আরজি করে নির্যাতিতার বাবা-মা জানিয়েছেন, যে কেউ চাইলে আসতে পারবেন এই ধর্নাস্থলে। রাজনীতিকেরাও চাইলে আসতে পারেন সেখানে। তবে মঞ্চে তাঁদের স্থান হবে না। সেখানে থাকবেন শুধুই আত্মীয়েরা।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:২৬
Share: Save:

এত বছর হইচই করে কাটত দুর্গাপুজোর চার দিন। বাড়ির পুজো বলে কথা! সকাল থেকে লোকজনের আনাগোনা। আলোয় সাজত গোটা বাড়ি। এ বছর আর আলো জ্বলবে না সেই বাড়িতে। ঢাক বাজবে না। ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে সেই ঘটনার পর বদলে গিয়েছে সব কিছু। এ বছর বাড়িতে নয়, তার সামনে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। ষষ্ঠী থেকে চার দিন সেখানেই ধর্নায় বসবেন আরজি করের চিকিৎসকের বাবা-মা। পাশে থাকবেন তাঁদের আত্মীয়-পরিজনেরা। নির্যাতিতার বাবা-মা জানিয়েছেন, চাইলে যে কেউ আসতে পারবেন এই ধর্নাস্থলে। তবে মঞ্চে থাকবেন শুধুই আত্মীয়েরা।

নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, তিন বছর আগে মেয়ের আবদারে বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল। বাড়ির গ্যারাজে রাখা হয়েছিল প্রতিমা। সে সময় বাড়িটা আলোয় ঝলমল করত। সকাল থেকে মেলা বসে যেত। এ বছর পরিবারের সকলের সঙ্গে একটু অন্য ভাবেই পুজো কাটাতে চাইছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁর বাবার কথায়, ‘‘বাড়িতে চার দিন পুজো হত। খুব আনন্দ হত। এ বার খুব কষ্টে রয়েছি। তাই ঘরের সামনে ধর্নামঞ্চ করেছি। ষষ্ঠী থেকে চার দিন সেখানেই বসব। পরিবারের লোকজন থাকবেন। যাঁরা আসতে চাইবেন, আসবেন।’’ নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, রাজনীতিকেরাও চাইলে আসতে পারেন সেখানে। তবে মঞ্চে তাঁদের স্থান হবে না। নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘রাজনীতির রং আমরা চাই না।’’

আরজি করের নির্যাতিতার বিচার এবং সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা-সহ একাধিক দাবিতে ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেছেন ছয় জুনিয়র ডাক্তার। নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের বিচারের দাবিতে যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা সকলেই এখন তাঁর সন্তান। ওঁদের কথা ভেবে তিনি এখন কষ্ট পাচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়েকে হারিয়েছি। জুনিয়র ডাক্তারেরা যে আন্দোলন করছেন, তা দেখে ঘরে বসে আমার কান্না পাচ্ছে। ওরা না খেয়ে আছে। আমি তো এখন ওদেরও মা। ওরা আমার সন্তান।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে ওদের সমস্যার সমাধান করার জন্য অনুরোধ করব।’’ নির্যাতিতার বাবা রাজ্য সরকারের ‘মানবিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারকে দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই নিয়ে সরকার কোনও কথা বলেনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। উল্টে অসহযোগিতা করছে। অনশনকারীরা আবেদন করলেও তাঁদের জন্য বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করেনি। সরকার কেন মানবিক হচ্ছে না?’’ তাঁর দাবি, সরকার ‘মানবিক ভাবে চিন্তাভাবনা’ না করলে এই নির্যাতন বন্ধ হবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি জয়নগর, পটাশপুরের কথাও উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার মানবিক ভাবে চিন্তাভাবনা না করলে জয়নগর, পটাশপুরের মতো ঘটনা থামবে কী করে? থামার লক্ষণ দেখছি না।’’ প্রসঙ্গত, জয়নগরে নয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। পটাশপুরে বধূকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এই দুই ঘটনার কথা জেনে তাঁরা কষ্ট পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘মা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, হাসপাতালের ভিতরে কী করে আমার মেয়ের সঙ্গে ওই কাণ্ড হয়েছিল? তথ্যপ্রমাণ লোপাটও কি দুর্ঘটনা?’’ তাঁদের প্রশ্ন, হাসপাতালের ভিতরে এ রকম হলে কোথায় রয়েছে সুরক্ষা?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

RG Kar Medical College and Hospital Incident Dharna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE