কালিয়াচকের আলিনগর পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ তৃণমূলের ১৩ জন পঞ্চায়েত সদস্যের তিন মাসের ভাতার টাকা পঞ্চায়েত আধিকারিকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় কোনও পথবাতি নেই। ফলে চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। এ দিকে যে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই ঘটনা, তাদের তহবিল ‘বাড়ন্ত’। শেষে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এলেন পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ এবং পঞ্চায়েতের তিন মাসের ভাতা থেকে টাকা দিলেন। তাঁর দেখাদেখি শাসকদলের বাকি ১২ জন সদস্যও তিন মাসের ভাতা দিলেন। ফলে এক লক্ষ ৪৭ হাজার টাকার ভান্ডার তৈরি হল মালদহের কালিয়াচক ১ ব্লকের আলিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে।
আলিনগর পঞ্চায়েতে ২৩ জন সদস্য। তৃণমূলের ১২, কংগ্রেসের আট জন, বিজেপির দু’জন ও এক জন নির্দল। বোর্ড গঠনের সময় নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে, তৃণমূলের এখন ১৩ জন সদস্য। তৃণমূলের প্রধান আখতারি খাতুনের বাড়িতে প্রধানের স্বামী, দুই সন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়ি রয়েছেন। স্বামী মহম্মদ ওবাইদুল্লার কাপড়ের ছোট ব্যবসার রোজগারে সংসার চলে। প্রধান বলেন, ‘‘নির্বাচিত হওয়ার পরেই এলাকার বাসিন্দা ও ছাত্রছাত্রীরা আমার কাছে ওই রাস্তায় আলোর দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে অর্থ না থাকায় সিদ্ধান্ত নিই, উপভোক্তা হিসেবে দু'বছর ধরে লক্ষ্মীর ভান্ডারে যে ১২ হাজার টাকা পেয়েছি এবং প্রধান পদের প্রতি মাসে পাঁচ হাজার করে ভাতার টাকা পঞ্চায়েতের তহবিলে তুলে দেব। দলের বাকি ১২ জনও তাঁদের তিন মাসের ভাতার টাকা পঞ্চায়েতের তহবিলে দিলেন।’’ পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে কালিয়াচক পলিটেকনিক কলেজ পর্যন্ত রাস্তায় পথবাতি নেই। ওই টাকায় সেই রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা হবে। সঙ্গে আরও কিছু রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলেও জানালেন আখতারি খাতুন।
মঙ্গলবার দুপুরে এলাকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের হাত দিয়ে এক লক্ষ ৪৭ হাজার টাকার প্রতীকী চেক তুলে দেওয়া হয় গ্রাম পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের হাতে। সাবিনা বলেন, ‘‘প্রায়ই শুনতে পাই, যে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির নিজস্ব তহবিলে টাকা নেই। কিন্তু এ দিন আলিনগর পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ১৩ সদস্য তাঁদের তিন মাসের ভাতার টাকা তহবিলে দিলেন এলাকার উন্নয়নে। জনপ্রতিনিধিরা এ ভাবে যদি এগিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ান, তবে উন্নয়নের কাজ আরও এগিয়ে যাবে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, ‘‘বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান, সদস্যদের কাজ নিয়ে সাধারণ মানুষ যখন বীতশ্রদ্ধ, তখন আমরা ভাতার টাকা উন্নয়নের কাজে দিয়ে নিজেদের মতো করে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।’’
তবে পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রুহুল শেখ বলেন, ‘‘ভাতা ও লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের জন্য দেওয়া ভাল কাজ। এর পিছনে তৃণমূলের লোকদেখানো রাজনীতি আছে।’’ এলাকাবাসীর একাংশের বক্তব্য, ‘‘রাস্তায় আলো জ্বললেই হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy