ক্ষমা চাইলেন পঞ্চায়েত সদস্য।
ঘরবাড়ির ক্ষতিপূরণের তালিকায় নাম আছে সাড়ে ছ’হাজার মানুষের। এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন মাত্র ৩৮০ জন। তার মধ্যে পঞ্চায়েত সদস্যের আত্মীয়স্বজন, পাড়া-পড়শিরাও আছেন বলে অভিযোগ। আমপানে যাঁদের বাড়ির ক্ষতি হওয়া তো দূরের কথা, দোতলা-তিনতলা বাড়ি দিব্যি বহাল তবিয়তে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির নন্দকুমার পঞ্চায়েত এলাকায় এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন স্থানীয় মানুষ। মঙ্গলবার রায়দিঘি-বোলেরবাজার রোডের কৈলাসপুর-হরিটানা মোড়ে ঘণ্টা তিনেক অবরোধ চলে। পুলিশের উপস্থিতিতেই তলব করা হয় অভিযুক্ত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন ঘাঁটুকে। তিনি সকলের সামনে কান ধরে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। বিডিও আসেন এলাকায়। তদন্তের আশ্বাস দেন। এর পরেই স্বাভাবিকহয় পরিস্থিতি।
কান ধরে ক্ষমা চাওয়ার কথা অস্বীকার করছেন না স্বপন। তাঁর দাবি, ‘‘পরিস্থিতির চাপে পড়ে এবং পুলিশের নির্দেশ মেনে কান ধরেছি।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বপনের যুক্তি, ‘‘দ্রুত তালিকা তৈরি করতে গিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে যাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে, তাঁদের নাম যুক্ত করে নতুন করে তালিকা তৈরি হবে।’’
গোটা ঘটনায় অপ্রস্তুত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, তথা তৃণমূল নেতা শান্তনু বাপুলি বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রশাসনকে বলা হয়েছে, তদন্ত করে দেখার জন্য।’’
আরও পড়ুন: ত্রাণে দুর্নীতিই আজ মূল সুর বিরোধীদের
পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের কানাই গিরি জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ৬ হাজার ৫৩৮। এঁদের সকলের তালিকা পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা পেয়েছেন মাত্র ৩৮০ জন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই সদস্য নিজের এলাকার তালিকা তৈরি করে পাঠিয়েছিলেন। দ্রুত তালিকা পাঠাতে গিয়ে সমস্ত কিছু দেখা যায়নি। ফলে সমস্যা তৈরি হয়েছে।’’ ইতিমধ্যেই স্বপনকে ব্লক প্রশাসন থেকে নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও রিজওয়ান আহমেদ। যাঁরা অনৈতিক ভাবে টাকা পেয়েছেন, তাঁদেরও পর্যায়ক্রমে নোটিস পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে কারও কারও টাকা ফেরতও নেওয়া হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
স্থানীয় বাসিন্দা হরেন মণ্ডল, সুখেন হালদারদের বক্তব্য, ‘‘আমাদের বাড়িঘর ভেঙেছে। আমরা টাকা পেলাম না। অথচ, পঞ্চায়েত সদস্যের পরিবারের তিন জন পেয়েছেন বলে শুনেছি। ওঁর ঘনিষ্ঠ আরও কিছু লোক, যাঁদের কোনও ক্ষতি হয়নি— তাঁরাও পেয়েছেন। এরই বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছি।’’ রতন মণ্ডল, পুলক ঘাঁটুরা বলেন, ‘‘চাপে পড়ে কান ধরে দোষ স্বীকার করেছেন ওই সদস্য। তবে আমাদের ধারণা, এই কেলেঙ্কারিতে পঞ্চায়েতের আরও অনেকে জড়িত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy