Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
PMAY

আবাসে কি টাকা দেবে কেন্দ্র? বকেয়া কাজ শেষ করতে পঞ্চায়েত দফতরের নির্দেশ ঘিরে জল্পনা

সম্প্রতি সব জেলা প্রশাসনকে পঞ্চায়েত দফতর জানিয়েছে, আবাসের বাকি থাকা উপভোক্তাদের অনুমোদনের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। অতিরিক্ত পাঁচ দফা কর্মসূচিও জেলাগুলির জন্য স্থির করে দিয়েছে দফতর।

PMAY

আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে। প্রতীকী ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৩ ০৮:২৬
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী আবাস এবং একশো দিনের কাজে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে। ফলে আবাস যোজনার প্রশাসনিক কাজকর্ম কার্যত স্তব্ধ। সূত্রের খবর, সম্প্রতি সেই প্রকল্পে প্রশাসনিক নড়াচড়া ফের দেখা যাচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, তবে কি আবাসে বরাদ্দ চালুর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে? না হলে আচমকা কেন বকেয়া কাজ শেষ করতে জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিল পঞ্চায়েত দফতর! ঘটনাচক্রে, যখন দোরগোড়ায় রয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের সম্ভাবনা।

সম্প্রতি সব জেলা প্রশাসনকে পঞ্চায়েত দফতর জানিয়েছে, আবাসের বাকি থাকা উপভোক্তাদের অনুমোদনের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। অতিরিক্ত পাঁচ দফা কর্মসূচিও জেলাগুলির জন্য স্থির করে দিয়েছে দফতর (সবিস্তার সারণীতে)।

পঞ্চায়েত দফতরের তথ্য অনুযায়ী, আবাস (প্লাস) প্রকল্পে মোট ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৬ জনকে অনুমোদন দিতে হত রাজ্যকে। তার মধ্যে প্রায় ৯৭% অনুমোদনের কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে ৩৪ হাজার ৫৩২ জনকে অনুমোদন দেওয়া। পঞ্চায়েত দফতরের নির্দেশ, সেই বকেয়া অনুমোদনের কাজ সারতে হবে যত দ্রুত সম্ভব। আধিকারিকমহল জানাচ্ছে, কেন্দ্রের যে পোর্টালে এই অনুমোদনের তথ্য আপলোড করতে হয়, তা অনেক দিন আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের নতুন নির্দেশের ফলে মনে করা হচ্ছে, সম্ভবত এ রাজ্যের জন্যই শীঘ্রই সেই পোর্টাল ফের চালু করা হবে। কারণ, বাকি বেশিরভাগ রাজ্যই বকেয়া অনুমোদনের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করে ফেলেছে।

পঞ্চায়েত দফতরের নির্দেশ

• বকেয়া অনুমোদন সারতে হবে দ্রুত

• জমিহীন উপভোক্তার জমির ব্যবস্থা করা

• বাকি থাকা উপভোক্তার আধার সংযোগ করা

• প্রধানমন্ত্রী আবাসের অসমাপ্ত বাড়ি তৈরি

• ইন্দিরা আবাস যোজনার অসমাপ্ত (যদি থাকে) বাড়ি সম্পূর্ণ করা

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “কেন্দ্রীয় অনুমোদনের পোর্টাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ফের তা খোলার সম্ভাবনা তৈরি হওয়া খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। না হলে কেন পঞ্চায়েত দফতর ফের জেলাগুলিকে এ কাজে তৎপর হতে বলবে!” জেলা-কর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, প্রায় ৩৪ হাজার উপভোক্তাকে আগে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে পদ্ধতি চালু থাকাকালীন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া যায়নি। কারণ, তাঁদের বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। আবার অনেকের নিজস্ব জমি না থাকাও অনুমোদন না পাওয়ার অন্যতম কারণ। সরকারি নিয়মে সংশ্লিষ্টের নিজস্ব জমি থাকতে হয়, অথবা সরকারকে সেই জমির ব্যবস্থা করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে এমন উপভোক্তাদের জমির ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ১৪৮৩ জন উপভোক্তার জমির ব্যবস্থা করা বাকি। এক কর্তার কথায়, “আগে ভূমিহীনদেরও পোর্টালে ‘মার্ক’ করা যেত। কিন্তু এখন তা করতে গেলে নথির প্রয়োজন হচ্ছে।”

কিন্তু অনুমোদন-প্রক্রিয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে জেলা প্রশাসনগুলিকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বক্তব্য, পঞ্চায়েত ভোট আসন্ন। ফলে প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিই সতর্ক। আবাস নিয়ে নতুন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না তাঁদের মধ্যে। ফলে প্রশাসনিক পদক্ষেপ করে জটিলতা মেটানোর চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, অন্যান্য রাজ্যকে গত বছর (২০২২) এপ্রিল-মে মাসেই বাড়ি তৈরির ‘কোটা’ দিয়েছিল কেন্দ্র। ডিসেম্বরে তা পায় পশ্চিমবঙ্গ। গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকা ত্রুটিমুক্ত করে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ উপভোক্তাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য। আধিকারিকমহল জানাচ্ছে, প্রকল্পের প্রথম কিস্তিতে একজন উপভোক্তা ৬০ হাজার টাকা পান। প্রায় ১১ লক্ষ উপভোক্তার প্রথম কিস্তিতে খরচ হওয়ার কথা কমবেশি ৬৬০০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে মোট খরচের ৬০% দেয় কেন্দ্র এবং বাকি ৪০ ভাগের দায়িত্ব রাজ্যের। সেই হিসাবে প্রথম কিস্তির প্রায় ৩৯৬০ কোটি দেওয়ার কথা কেন্দ্রের, রাজ্যের ভাগে তা প্রায় ২৬৪০ কোটি টাকা।

অন্য বিষয়গুলি:

PMAY Panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy