ওয়েবকুপার সেই ব্যানার। বুধবার কলেজ স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রীতির আবহ ফিকে হয়ে আসতেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার জন্য বিধানসভায় পাশ করা যে-বিল রাজভবনে দশ মাস ধরে পড়ে আছে, নতুন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস তাতে অবিলম্বে সই করুন। আর খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার নবান্নে এই বিষয়ে সরাসরি অর্ডিন্যান্স বা অধ্যাদেশের ইঙ্গিত দিলেন।
সাংবাদিক বৈঠকে ওই বিলের প্রসঙ্গ এলে প্রশ্ন ওঠে, সরকার কি অর্ডিন্যান্স আনবে? জবাবে মমতা বলেন, “অর্ডিন্যান্স তো আনা যেতেই পারে। এখন বিধানসভা চলছে না। জরুরি কোনও ব্যাপারে অর্ডিন্যান্স তো করা যায়। পরের বিধানসভা অধিবেশনে তা পাশ করিয়ে নেওয়া হয়।’’ প্রথমে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এগুলো নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুন। তিনি আমার সহকর্মী। সবারটা বলে দিলে তাঁরা কী বলবেন?’’
পূর্ববর্তী রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের আমলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের যে-সংঘাত তুঙ্গে উঠেছিল, আনন্দের আগমনে তার অবসানের আভাস মিলছিল জোরালো ভাবেই। কিন্তু এখন বোসের সঙ্গে সংঘাত বাড়ায় গত সপ্তাহে শিক্ষামন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার সেই বিলের প্রসঙ্গ তোলেন, যেটি ধনখড়ের আমলে বিধানসভায় পাশ হয়েছিল। দশ মাস ধরে রাজভবনে পড়ে থাকা ওই বিলের প্রসঙ্গ টেনে ব্রাত্য জানান, রাজ্যপালকে তিনি বলবেন, পশ্চিমবঙ্গে উচ্চশিক্ষার প্রচার ও প্রসার যদি চান, তা হলে বিল আটকে না-রেখে সই করে ছেড়ে দিন।
শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী অনন্তকাল আটকে রেখে রাজ্যপাল ওই বিল হিমঘরে পাঠাতে পারেন না। ওই বিলে রাজ্যপাল হয় সই করুন, না-হয় তা ফেরত পাঠান। এ বার বিধানসভায় তা পাশ করানো হবে। শিক্ষামন্ত্রী তখনই জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীই আচার্য হচ্ছেন। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীও অধ্যাদেশ জারি করা যায় বলে জানিয়েছেন। বিধানসভা এখন চলছে না। তাই স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ের সার্চ বা সন্ধান কমিটিতে পাঁচ সদস্যের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে অধ্যাদেশ জারির চিন্তাভাবনা চলছে। তারই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার বিষয়ে উঠছে অধ্যাদেশ প্রসঙ্গ।
সরকারি স্তরে এই ভাবনাচিন্তার সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার দাবিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের তরফে ‘হোক জনরব’ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু জানান, এই দাবিতে হোর্ডিং লাগানোর পাশাপাশি তাঁরা রাজ্য জুড়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানেও নেমেছেন।
এর মধ্যে বুধবারেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায়ের এক মাসের মেয়াদ শেষ হয়ে গেল। এই নিয়ে মোট ছ’মাস তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে কাজ করলেন। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা)। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, পরবর্তী অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে কোনও চিঠি রাত পর্যন্ত আসেনি। নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা দফতরকে না-জানিয়ে রাজ্যপালের কোনও নির্দেশ আসবে কি না, সেই বিষয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে কারও কোনও ধারণা নেই। এ দিকে, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট) এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অস্থায়ী উপাচার্য নামও এখনও জানানো হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy