অশান্তি ও গুলিচালনার ঘটনায় শাসক দল তৃণমূলকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা। —নিজস্ব চিত্র।
মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-বিরোধী প্রতিবাদ ঘিরে অশান্তি ও গুলিচালনার ঘটনায় শাসক দল তৃণমূলকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা। প্রতিবাদীদের উপরে গুলি চালিয়ে দেওয়ার ‘বিজেপি নিদান’ কেন তৃণমূল কার্যকর করতে নেমে পড়ল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা! তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের এক জনও গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তৃণমূল কেন গুলি চালাতে যাবে? দেখতে হবে, এর পিছনে কারা আছে। কারা আন্দোলন ভেস্তে দিতে চাইছে? প্রশাসন দেখবে।’’
বিরোধীদের তির অবশ্য তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দিকেই। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘কোনও দলের পতাকা ছাড়া সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছিল, প্রতিবাদীরা বন্ধ পালনের ডাক দিয়েছিল। তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা দুষ্কৃতী বাহিনী নিয়ে তাঁদের উপরে বোমা-গুলি নিয়ে চড়াও হয়েছেন। এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিএএ-বিরোধিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। উনি নিজে প্রতিবাদ করছেন অথচ অন্যদের প্রতিবাদে তাঁর দলের লোকজন হামলা করছে!’’ অধীরবাবুর আরও বক্তব্য, বিরোধী থাকার সময়ে অজস্র অবরোধ, বন্ধ করেই মমতা প্রশাসনকে ব্যতিবস্ত রাখতেন। কিন্তু ক্ষমতায় এসে তৃণমূল অন্যদের প্রতিবাদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের মতে, ‘‘এই ঘটনায় প্রমাণিত হল, যোগী আদিত্যনাথ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ও সরকার একই মুদ্রার দুই পিঠ। তবে বোমা-গুলি চালিয়ে কোনও দলই জনজাগরণ স্তব্ধ করতে পারবে না।’’
আরও পড়ুন: কলকাতায় ‘ওজনদার’ প্রার্থী চায় বিজেপি
বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘আরএসএস যাঁকে এক সময় দেবী দুর্গা বলেছিল, তাঁর দল এখন দিলীপ ঘোষদের ইচ্ছাপূরণ করছে! শাহিনবাগ-সহ সর্বত্র প্রতিবাদীদের গুলি মারতে বলছেন বিজেপি নেতারা আর তৃণমূল সত্যিই গুলি চালিয়ে দিয়েছে! মোদী আর দিদি সত্যিই এক নয় তা হলে!’’ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, ‘‘দিলীপ ঘোষ কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছেন আর তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী সেটা রূপায়িত করতে নেমে পড়ছে! মুর্শিদাবাদের ওই এলাকা যথেষ্ট স্পর্শকাতর। সকলকে সতর্ক ও শান্তি বজায় রাখার আবেদন করছি। প্রশাসনের কাছে দাবি, ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি হোক।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু অবশ্য ঘটনার তদন্ত দাবি করে বলেছেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, পুলিশ-প্রশাসন প্রয়োজনে গুলি চালাবে। কিন্তু তৃণমূল কেন গুলি চালাবে? বোঝা যাচ্ছে, দিকে দিকে তৃণমূলের প্রশ্রয়ে কেন বোমা-অস্ত্রের কারখানা চলছে। বাম ও কংগ্রেস মুসলিমদের ভুল বোঝাচ্ছে। আর মুসলিমদের প্রতি তৃণমূলের মনোভাব এমন ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy