Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪

পুর নিগম নির্বাচনে আধাসেনা চাই, সরব বিরোধীরা

দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মতের ফারাক আছে। তবে আসানসোল, বিধাননগর ও হাওড়া পুর কর্পোরেশন বা নিগম (সদ্য সংযোজিত বালি এলাকা) এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই-ই চাই, তারা সেই দাবি জানাল একযোগে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩১
Share: Save:

দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মতের ফারাক আছে। তবে আসানসোল, বিধাননগর ও হাওড়া পুর কর্পোরেশন বা নিগম (সদ্য সংযোজিত বালি এলাকা) এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই-ই চাই, তারা সেই দাবি জানাল একযোগে।

শাসক দল তৃণমূল অবশ্য মনে করছে, ওই ভোট সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য রাজ্যের পুলিশবাহিনীই যথেষ্ট।

শুক্রবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে বিভিন্ন দলের বক্তব্য ছিল, বিগত পুরভোটে বহু বুথেই ভোটার-সংখ্যার তুলনায় বেশি ভোট পড়েছিল। আগামী নির্বাচনে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না-হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এ দিনের বৈঠকের পরে কংগ্রেস নেতা দেবব্রত বসু বলেন, ‘‘গত পুরভোটে কোনও কোনও বুথে ভোটারের চেয়েও বেশি ভোট পড়েছে। তার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে হবে কমিশনকে।’’ বিজেপির প্রতিনিধি অসীম সরকার এবং বামফ্রন্টের প্রতিনিধি সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও এই কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পক্ষে সওয়াল করেছেন।

তৃণমূলের পক্ষে বৈঠকে ছিলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও রাজারহাটের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। পরে শোভনবাবু বলেন, ‘‘এই ভোট সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য প্রয়োজনীয় বাহিনী রাজ্যেরই রয়েছে। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমরা তো আর ওদের (বিরোধীদের) প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট ঠিক করে দিতে পারব না!’’

কমিশন কি আধাসেনা চাইবে?

সরাসরি জবাব না-দিলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় বুঝিয়ে দেন, তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ারই পক্ষপাতী। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, কমিশন প্রয়োজন বুঝলে বাহিনী চেয়ে সরাসরি কেন্দ্রকে চিঠি দিতে পারবে। রাজ্য সরকারের মাধ্যমে আধাসেনা চাওয়ার দরকার নেই। আদালতের নির্দেশ মেনেই চলব আমরা।’’

রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কার্যভার নেওয়ার পরে সুশান্তবাবু বলেছিলেন, সরকারের সঙ্গে কোনও বিরোধে যাওয়ার ইচ্ছে তাঁর নেই। তবে গত পুরভোটেও নানান টানাপড়েনের মধ্যে তিনি বারবার জানিয়ে দেন, আধাসেনার দরকার আছে। পুর নিগম, মহকুমা পরিষদের আসন্ন ভোটেও যে তাঁরা আধাসেনা চাওয়ার রাস্তা খুলে রাখছেন এবং সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ যে এ ক্ষেত্রে তাঁদের সহায়, এ দিন সেটা জানিয়ে দিয়েছেন সুশান্তবাবু।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, আসানসোল, বিধাননগর পুর নিগম এবং হাওড়া পুর নিগমে সদ্য সংযোজিত বালি এলাকার ১৬টি আসনের নির্বাচন হবে ৩ অক্টোবর। ওই দিন ভোট হবে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদেরও। ভোটগণনা ৭ অক্টোবর। মনোনয়নপত্র পেশ শুরু হবে ১০ সেপ্টেম্বর। তা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৪ সেপ্টেম্বর। ভোটগণনা হবে ৭ অক্টোবর। এই মর্মেই সর্বদলীয় বৈঠকে প্রস্তাব দেন সুশান্তবাবু।

৩ অক্টোবর রাজ্যের ৩২২টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৬৯টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং দু’টি জেলা পরিষদ আসনেও উপনির্বাচন হবে বলে জানান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। ভোটের নির্ঘণ্ট নিয়ে দলগুলির মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। সুজনবাবুরা চান, ভোট হোক ৩ অক্টোবরের আগেই। বিজেপি ভোট চায় নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের গোড়ায়। কারণ হিসেবে অসীমবাবু বলেন, ‘‘অক্টোবরের শুরুতে রাজ্য জুড়ে পুজোর পরিবেশ। তখন নির্বাচন করানো যুক্তিযুক্ত নয়।’’

শাসক দলের তরফে শোভনবাবু জানিয়ে দেন, দুর্গাপুজো তো ২০ অক্টোবর। তাই ৩ অক্টোবর ভোট করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE