জ্বলন্ত: নৈহাটিতে বিস্ফোরণের পরে স্থানীয়দের রোষানলে পুড়ল পুলিশের গাড়ি। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
শাসক দল ও পুলিশের যোগসাজশে রাজ্য জুড়ে বোমার কারখানা চলছে বলে নৈহাটির ঘটনার পরে ফের সরব হল বিরোধীরা। সেই সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলে মুখ খুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও।
নৈহাটিতে কয়েক দিন আগে বিস্ফোরণের ঘটনার পরেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ওখানে বোমা তৈরির কাজ চলছিল। কিন্তু পুলিশ বিষয়টিকে আমল না দিয়ে বাজির কারখানা বলে চালাতে চেয়েছিল বলে তাদের অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার পুলিশেরই বাজেয়াপ্ত করা ‘বাজি’ ফাটিয়ে নষ্ট করে দেওয়ার সময়ে বড়সড় বিস্ফোরণ ঘটায় তাদের অভিযোগই ‘মান্যতা’ পেল, এমনই বক্তব্য বিরোধীদের। সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি নেতারা বলছেন, বাজির কারখানা বলে ‘চালিয়ে দেওয়া’র অভ্যাস পুলিশ-প্রশাসন না ছাড়লে গোটা রাজ্য আরও বড় জতুগৃহে পরিণত হবে।
বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমণের জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘পুলিশ নিশ্চয়ই তদন্ত করে দেখবে, কারা এ সব মজুত করল। কারও কোনও গাফিলতি ছিল কি না, দেখা হবে। কোনও ঘটনা ঘটলেই পুলিশকে কাঠগড়ায় তোলা অর্থহীন।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘ইরাকে বোমা-বর্ষণের সময়ে যে ছবি দেখেছি, এখানেও সেই রকম ছবি দেখলাম! গঙ্গার এ পাড়ে বোমা ফাটছে, আর অন্য পাড়ে বাড়িতে ফাটল হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। টাকা ছাড়া তিনি কিছু বোঝেন না!’’ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ-কে দিয়ে বিস্ফোরণের তদন্ত করানোর দাবি তুলেছেন দিলীপবাবু। নৈহাটি-গরিফায় বিস্ফোরণের অভিঘাতে বাড়িতে ফাটল ধরেছে চুঁচুড়ায়। হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় চুঁচুড়ায় গিয়ে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ বারুদের স্তুপের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে এসে বলুন, এর কারণ কী। জেহাদিরা যে ভাবে বিস্ফোরক বিভিন্ন জায়গায় জড়ো করে রাখছে, তাতে আগামী দিনের পরিকল্পনাটা কী জানা হোক। ক্ষতিপূরণ হিসেবে টাকা দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করে দিলাম, এটা চলতে পারে না!’’
সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, ‘‘বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর বা দুই ২৪ পরগনায় আগে একাধিক এমন কাণ্ড ঘটেছে। শাসক দলের কার্যালয়ে বা নেতার বাড়িতে বোমা তৈরির কুটির শিল্প চলছে, আগে দেখা গিয়েছে। তার পরেও পুলিশ মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় বাজির কারখানা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এই প্রবণতা বন্ধ না হলে রাজ্যটা আরও বড় জতুগৃহ হবে।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মন্তব্য, ‘‘বাজির কারখানা বলার পরে এ বার ঝোলা থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে! শাসক দলের মদতে রাজ্যে বোমার কারখানা চলছে। যে পুলিশ আধিকারিকেরা নৈহাটিতে বাজির কারখানা বলেছিলেন, তাদের সাসপেন্ড করা উচিত।’’
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল ধনখড় মন্তব্য করেছেন, ‘‘এই বিস্ফোরণের পরে কোনও কিছুই আর বুঝতে বাকি নেই! বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তদন্ত হলেই একমাত্র পূর্ণ সত্য উদঘাটিত হতে পারে। আশা করি, এই অশুভ ঘটনা রাজ্য প্রশাসন ও সরকারের নিয়ন্ত্রকদের চোখ খুলে দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy