গ্রামীণ এলাকায় পাকা বাড়ি তৈরি করতে চাইলে এ বার থেকে আর শুধু স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে আবেদন করলে হবে না। এপ্রিল মাসের শেষ থেকে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি নির্মাণের প্ল্যান অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিয়ম বন্ধ করতে এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করতেই এই নতুন পদক্ষেপ। ইতিমধ্যে শহরাঞ্চলে বাড়ি তৈরির জন্য অনলাইন প্ল্যান অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং তার ইতিবাচক ফলও মিলেছে। এ বার সেই মডেল অনুসরণ করেই গ্রামাঞ্চলেও একই নিয়ম কার্যকর করতে চলেছে রাজ্য সরকার। আগে অনলাইন আবেদন করার সুযোগ থাকলেও তা বাধ্যতামূলক ছিল না। অভিযোগ, অনেকেই স্থানীয় পঞ্চায়েতকর্মীদের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করে অনুমতি নিয়ে নিতেন, যাতে অনিয়মের অভিযোগ উঠত এবং সরকার রাজস্ব হারাত।
আরও পড়ুন:
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বাড়ি তৈরির আগে নির্দিষ্ট অনলাইন পোর্টালে গিয়ে আবেদন করতে হবে। বাড়ির নকশা, জমির বিবরণ, খতিয়ান ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি অনলাইনে জমা দিতে হবে। পঞ্চায়েত দফতরের কর্মীরা সংশ্লিষ্ট জমি পরিদর্শন করে অনুমোদন দেবেন। বিল্ডিং প্ল্যান অনুমতির ফি-ও অনলাইনে প্রদান করা যাবে। ফলে পুরো প্রক্রিয়ায় মানুষের সরাসরি জড়িত থাকার প্রয়োজন অনেকটাই কমবে। দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত পর্যায়ের অধিকাংশ কাজই ধাপে ধাপে অনলাইনে নিয়ে আসা হচ্ছে। এই উদ্যোগে কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন কাজের জন্য আলাদা পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে দোতলা পর্যন্ত বাড়ির অনুমতি পঞ্চায়েত স্তরেই মিলবে, তবে বহুতল নির্মাণের জন্য অনুমতি নিতে হবে জেলা পরিষদ বা সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সংস্থার কাছ থেকে। নতুন নিয়মে সব ক্ষেত্রেই অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
আরও পড়ুন:
এই পদক্ষেপের ফলে যেমন পঞ্চায়েত দফতরের কাজের স্বচ্ছতা বাড়বে, তেমনি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বাড়বে বলে আশাবাদী প্রশাসন। সবচেয়ে বড় কথা, সাধারণ মানুষ কোনও নেতা বা প্রভাবশালীর উপর নির্ভর না করে নিজের ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন। আধুনিক ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থার দিকে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।