Advertisement
E-Paper

অনলাইন ক্লাস স্কুলের বিকল্প নয়, মানছেন শিক্ষকেরাও

পড়া বুঝে নেওয়া থেকে হোমওয়ার্ক— সবেতেই কোথাও যেন ফাঁক থেকে যাচ্ছে।

করোনার কারণে স্কুলের ক্লাসরুমের এই দৃশ্য এখন অমিল।  ফাইল চিত্র

করোনার কারণে স্কুলের ক্লাসরুমের এই দৃশ্য এখন অমিল।  ফাইল চিত্র

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০৫:৫৬
Share
Save

অতিমারির এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস হয়তো পড়ুয়াদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু তার উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শুধু প্রাক্-প্রাথমিক বা প্লে-স্কুল নয়, এই প্রশ্ন উঠেছে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও।

মার্চের শেষে নতুন ক্লাস শুরু হতে না-হতেই লকডাউনে স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির অভীপ্সা ভট্টাচার্যের। নতুন ক্লাসের শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ হওয়ার আগেই শুরু অনলাইন ক্লাস। কিন্তু স্কুলে গিয়ে পড়াশোনার সঙ্গে তার যে বিস্তর ফারাক, চার মাসে তা বুঝে গিয়েছে অভীপ্সা। পড়া বুঝে নেওয়া থেকে হোমওয়ার্ক— সবেতেই কোথাও যেন ফাঁক থেকে যাচ্ছে।

একই অবস্থা আরও অনেক পড়ুয়ার। তাদেরও মনে হচ্ছে, এই পদ্ধতিতে প্রচুর খামতি। তাদের দেখে চিন্তিত অভিভাবকদের প্রশ্ন, অনলাইন শিক্ষা কি ক্লাসরুমের শিক্ষার বিকল্প হতে পেরেছে? পড়ুয়াদের মতো তাঁদেরও আশঙ্কা, গোটা শিক্ষাবর্ষটাই নষ্ট হবে না তো? তা ছাড়া, সব শ্রেণির পড়ুয়ারা তো এই সুযোগও পাচ্ছে না।

শিক্ষকদের একাংশের মতে, এখনকার পরিস্থিতিতে এ ছাড়া উপায় নেই। শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি ২০১৯-এ প্রযুক্তির উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এই প্রযুক্তি-নির্ভর পড়াশোনা হঠাৎই অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। সকলে এর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না।’’ তাঁর মতে, ‘‘সকলকে এই সুবিধা দিতে গেলে অনলাইন পড়াশোনার পরিকাঠামো উন্নত করতে হবে। সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।’’

দমদমের বাসিন্দা বাসব দাসের বক্তব্য, ‘‘লকডাউনের পরে অফিস খুলেছে। আমাকে মোবাইল নিয়ে সকাল ৯টায় অফিসে যেতে হয়। বাড়িতে একটাই স্মার্টফোন। ছেলের অনলাইন ক্লাসও শুরু হয় সকাল ৯টায়। আর একটি স্মার্টফোন কেনার সামর্থ্য আমার নেই। ছেলের পড়াশোনা কী করে হবে?’’

হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বললেন, ‘‘ছাত্রেরা সকলে সমান ভাবে অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে না। সকলের আর্থিক অবস্থা সমান নয়। এর ফলে শিক্ষার মৌলিক অধিকার হারাচ্ছে পড়ুয়ারা। সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। পড়ুয়াদের কম দামে ইন্টারনেট দিতে হবে।’’

মডার্ন হাইস্কুলের ডিরেক্টর দেবী করও মনে করেন, সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে রাজ্য জুড়ে।

পরিকাঠামোর সমস্যার কথা স্বীকার করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নেট সংযোগ দুর্বল হওয়ায় প্রত্যন্ত এলাকার অনেক পড়ুয়াই অনলাইন ক্লাস করতে পারছে না। বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে আমরা ভাবছি।’’

শহরেও কি সর্বত্র নেট সংযোগ ভাল? দশম শ্রেণির ছাত্র শুভম বসু বলল, ‘‘সে দিন অনলাইন ক্লাসে তিন বার নেট সংযোগ চলে গেল। ক্লাস করতেই পারলাম না। আমার তো সামনের বছর মাধ্যমিক। কী ভাবে প্রস্তুতি নেব, জানি না।’’

আগামী বছর যারা বোর্ডের পরীক্ষা দেবে, তাদের পক্ষে অনলাইন ক্লাস করে প্রস্তুতি নেওয়া যে খুবই সমস্যার, তা মেনে নিয়েছেন বহু শিক্ষক। নব নালন্দার প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র মনে করেন, ‘‘অনলাইন ক্লাস কখনওই ক্লাসরুমের বিকল্প নয়। অনেক সময়ে অঙ্ক হাতে ধরে পড়ুয়াদের শিখিয়ে দেন শিক্ষকেরা। সে সব কি অনলাইনে সম্ভব?’’

তবে করোনা পরিস্থিতি শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি নতুন দিক খুলে দিয়েছে বলেই মনে করেন দেবী কর। তাঁর মতে, ‘‘যখন সব কিছু আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে, তখনও কিন্তু প্রয়োজনে অনলাইনে পড়ানোর বিকল্প পথ খোলা থাকবে। কোনও দিন হয়তো বৃষ্টির জন্য ছুটি দিয়ে দিল স্কুল। সে দিন কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকারা চাইলে অনলাইন ক্লাস নিতে পারবেন।’’

Virtual Class School Coronavirus Lockdown

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।