Advertisement
E-Paper

Rampurhat Clash: ‘মা দগ্ধ অবস্থায় মাটিতে ঘষে ঘষে আমার বাড়ি পৌঁছয়, বাচ্চাদেরও ছাড়েনি ওরা’

উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পরে তাঁদের পরিবারর উপর যা হয়েছে, সেই আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না ওই তরুণী।

পুড়ে ছাই বাড়ি, ধ্বংসস্তূপে সাজিনা খাতুন। বু‌ধবার।

পুড়ে ছাই বাড়ি, ধ্বংসস্তূপে সাজিনা খাতুন। বু‌ধবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২২ ০৭:৫৭
Share
Save

ঘটনার পরে দেড় দিন কেটে গিয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ বগটুই গ্রামে পৌঁছতেই বাতাসে পোড়া গন্ধটা নাকে লাগল। দু’একটি অগ্নিদগ্ধ বাড়ি থেকে তখনও ধোঁয়া উড়ছে।

গ্রামের পূর্বপাড়ায় ইদগাহ লাগোয়া যে বাড়িগুলোয় অগ্নিসংযোগ দিয়ে সোমবার রাতের তাণ্ডবের শুরু, সেই বাড়িগুলির একটিতেই দেখা মিলল সাজিনা খাতুনের। চোখের জল মুছতে মুছতে অন্তঃসত্ত্বা এই যুবতী চেষ্টা করছিলেন পোড়া ঘর থেকে অবশিষ্ট চাল বের করে আনতে। মুখোমুখি হতেই বলে উঠলেন, ‘‘দেখুন সর্বনাশের চিহ্ন। আমার ঠাকুরমা খুন হয়েছে, বাবা নিখোঁজ, মা অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতাল ভর্তি। আমি শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম বলেই হয়তো বেঁচে গিয়েছি। কী করব, কাকে বলব বলতে পারেন!’’

ওই অন্তঃসত্ত্বা তরুণী আদতে সোনা শেখের আত্মীয়। সেই সোনা শেখ, যাঁর বাড়ি থেকে মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার হয়েছে পরের পর দেহ। মহিলা থেকে শিশু-সহ মোট যে আট জন মারা গিয়েছেন সোমবার রাতের হামলায়, তাঁরা সকলেই সাজিনাদের পরিবারের সদস্য। বগটুই গ্রাম লাগোয়া কুমারডা গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে এ দিন বাপের বাপের বাড়িতে ছুটে এসেছিলেন গরু-বাছুরগুলো দেখতে। আর যদি আগুন থেকে কিছু বেঁচে থাকে, সেগুলো সংগ্রহ করতে।

উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পরে তাঁদের পরিবারর উপর যা হয়েছে, সেই আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না ওই তরুণী। দাবি করলেন, ‘‘সোমবার রাতে ভাদু শেখ খুন হওয়ার ঘটনায় আমাদের পরিবারের কেউ যুক্ত নয়। তা সত্ত্বেও বেছে বেছে আমাদের আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে হামলা এত জনকে মারা হল।’’ সাজিনা জানালেন, তাঁর ঠাকুরমা নূরনেহার বিবি, জেঠতুতো বোন লিলি খাতুন

ও তাঁর স্বামী সাজিদ শেখ, পিসি রুপালি বিবি (সোনা শেখের স্ত্রী), কাকিমা শেলি বিবি ( মিহিলালের স্ত্রী), তুতো বোন তুলি খাতুন এবং আর এক কাকিমা মিনা বিবি মারা গিয়েছেন।

সে রাতের বর্ণনা দিচ্ছিলেন তরুণী। বললেন, ‘‘শ্বশুরবাড়ি সেখান থেকে আগুন দেখতে পাই। ভাদুর লোকজন হামলা চালাতে পারে, এই সন্দেহে পরিবারের পুরুষ সদস্যেরা সরে গিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন মহিলাদের উপরে অত্যাচার হবে না। কিন্তু, ওরা মহিলা-বাচ্চাদেরও ছাড়ল না!’’ আগুনে পুড়ে যান সাজিনার মা নাজিমা বিবি ও জেঠিমা আতা বিবি। দু’জনেই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সাজিনার কথায়, ‘‘আমার মা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় শরীরটাকে কষ্ট করে মাটিতে ঘষে ঘষে আমার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশের সাহায্যে মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই ওরা আগুন লাগিয়ে দেয় আমার পিসেমসাইয়ের (সোনা শেখ) বাড়িতে। সেই আগুনের পুড়ে মরছে সবাই।’’

Death Rampurhat Violence

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}