প্রতীকী ছবি।
কলেজ পড়ুয়া, উঠতি বয়সের চেনা চাঞ্চল্য তার মধ্যে কেউ দেখেছেন— এমনটা মনে করতে পারছেন না বন্ধু-পড়শি কেউ-ই। চেনা আড্ডায় মিনিট দশেকের বেশি তাকে বেঁধে রাখা যেত না। ‘নাঃ উঠি’, বলে বাড়ির রাস্তা ধরত সে। সাতে-পাঁচে না থাকা, খেলাধুলোয় অনুৎসাহী, কলেজ ক্যান্টিনে পা না-রাখা— জঙ্গি সন্দেহে এনআইএ-র হাতে ধৃত সেই নাজিমুস সাকিবের বন্ধুমহলে কদর ছিল একটা ব্যাপারে— অ্যান্ড্রয়েড ফোন।
স্মার্টফোনে অ্যাপ ডাউনলোড করা থেকে ফোন সংক্রান্ত বিড়ম্বনায় কেউ পড়লেই খোঁজ পড়ত নাজিমুসের। তার কলেজের এক সহপাঠী বলছেন, ‘‘শুধু কলেজ নয়, গ্রামে তার বন্ধুদের কারও ফোনে সমস্যা হলেই নাজিমুসের বাড়ি ছুটত। ফোন নিয়ে ওর নিজেরও খুব উৎসাহ ছিল। সব ব্যাপারেই নির্লিপ্ত, কিন্তু কেউ নতুন ফোন কিনেছে দেখলে তা এক বার হাতে নেওয়ার জন্য খুব ঝুলোঝুলি করত নাজিমুস।’’ এনআইএ-র দাবি, স্মার্টফোনের প্রযুক্তিগত দক্ষতাই তাকে জঙ্গি সন্দেহে ধৃত একই কলেজের অশিক্ষক কর্মী লিউইয়ন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটিয়ে দিয়েছিল। এক জন দক্ষ ইলেকট্রিকের কাজ জানা লোক, অন্য জন স্মার্টফোনের প্রযুক্তির ব্যাপারে দড়— এই মেলবন্ধনকেই জঙ্গিরা কাজে লাগিয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
লিউইয়নের সঙ্গে সাইকেলের ক্যারিয়ারে বসে তাদের এ গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে পাড়ি দিতে দেখা গিয়েছে বারবার। নির্দিষ্ট কিছু চায়ের আড্ডায়, রাজ্য সড়কের উপরে নির্জন কালভার্টের উপরে, কিংবা লিউইয়নের বাড়িতে তাদের মানিকজোড় হিসেবে অনেকেই আবিষ্কার করেছেন। নাজিমুসের এক বন্ধু বলছেন, ‘‘ধর্ম নিয়েই নাজিমুসের মতামত ছিল গোঁড়া। আমরা ওকে বিশেষ ঘাঁটাতাম না। লিউইয়নদা-ও ওরই মতো ধর্ম নিয়ে একটু অন্য ভাবে ভাবত। আমরা ভাবতাম, তাই ওদের অত বন্ধুত্ব।’’
গোয়েন্দারা মনে করছেন, লিউইয়নই নাজিমুসের ‘মাথা খাচ্ছিল’। তাকে জেহাদি মতে প্রথম পাঠ দেওয়ার কাজটা কলেজের ওই অশিক্ষক কর্মচারীই করেছিল। গঙ্গাদাসপুর এলাকায়, যেখানে নাজিমুসের বাড়ি সেখানকার এক প্রবীণের কথায়, ‘‘শুক্রবার নমাজের পরে আমরা ফিরে এলেও ওরা অনেক সময় মসজিদে থেকে যেত। ব্যাপারটা বেশ কয়েক বার দেখার পরে একটু অস্বস্তিও হয়েছিল। অল্পবয়সি দুই যুবক এত দীর্ঘ সময় মসজিদে থাকছে দেখে প্রশ্নও জেগেছিল সে সময়ে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy