আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা ইনার সিটি ও রোটারি ক্লাব কলকাতার উদ্যোগে এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল কলকাতার মার্বেল প্যালেসে। সর্ব স্তরের সকল নারীশক্তির উদ্যম ও জীবনবোধকে সম্মান জানানোই ছিল এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সফল নারীদের নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উপস্থিত বিশিষ্টদের তালিকায় ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার নন্দিতা চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষাবিদ অনুরাধা লোহিয়া, অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়, আইপিএস অফিসার বিদিশা দাশগুপ্ত কলিতা এবং ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ এসএসডি। এমন গুণী নারীদের সফলতার কাহিনি উপস্থিত সকল দর্শককে অনুপ্রাণিত করে।
অনুষ্ঠানের বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে নন্দিতা চট্টোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “আমি অনুভব করি যে আন্তর্জাতিক নারী দিবস শুধু একটি দিন নয়, এটি এমন একটি উপলক্ষ যেখানে আমরা নারীদের অদম্য চেতনা উদযাপন করতে সক্ষম হই। আমি মনে করি, কোনও নারী যদি সফলতার সঙ্গে কিছু অর্জন করতে চান, তা হলে তাঁকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে পরিকল্পনা করতে হবে, কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং যথাযথ ভাবে তা অনুসরণ করতে হবে। যদি মনের মধ্যে মানুষের কল্যাণের পাশাপাশি সমাজের সেবায় কিছু অবদান রাখার লক্ষ্য থাকে, তবে যাত্রাপথের সমস্ত চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করা যাবে।’’
আর এক বিশিষ্ট, অনুরাধা লোহিয়ার কথায়, “লক্ষ্যে পৌঁছনোর উদ্দেশ্যে আমরা যখন এই যাত্রা শুরু করেছিলাম, তখন সর্ব স্তরের মহিলাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ ছিল না। তবে সেই সময় অতিক্রম করে আজ আমরা যে সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, সেখানে এক জন মহিলা যদি সত্যিই কিছু চান, তবে তাঁর জন্যে প্রচুর সুযোগ রয়েছে, বিশেষত শহর এলাকার মহিলাদের জন্য। তবে এখনও, সমাজের নিম্ন অর্থনৈতিক অংশের মহিলারা বৈষম্যের শিকার হন। এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা দরকার, যাতে অন্যান্য সফল নারীদের মতো তাঁরাও সমাজের কাছে শক্তিশালী হয়ে দাঁড়াতে পারেন।”
প্যানেলের আর এক সদস্য প্রদীপ গুপ্ত লিঙ্গ বৈষম্য কাটিয়ে ওঠা থেকে শুরু করে শিক্ষা এবং ক্ষমতায়নের গুরুত্ব সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁদের এই সম্মিলিত অভিজ্ঞতা সকলের কাছে সমাজে নারীর সীমাহীন সফলতার সম্ভাবনাকে ফের নিশ্চিত করে।
অনুষ্ঠান শেষে অভিনেত্রী দেবশ্রী রায় বলেন, “আমি মনে করি আজকের দিনে সব নারীরই শক্তিশালী হওয়া উচিত। তাঁরা যা করতে চান, তাই করা উচিত। জীবনে যে কোনও কিছু অর্জনের জন্য প্রচুর পরিশ্রম প্রয়োজন। আমার নিজের জীবনের এই কঠিন যাত্রায় আমি অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। কারণ আমি সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাইনি। আমাকে আমার শৈশব থেকেই কাজ শুরু করতে হয়েছিল। আমি দৃঢ় ভাবে মনে করি নারীদের কোনও কাজে বাধ্য করা উচিত নয়। তাঁরা জীবনে যা চান, তাঁদের তাই করতে দেওয়া উচিত।”
অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি আসনে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক হীরালাল যাদব, যাঁর সমর্থন এবং উৎসাহ রোটারি সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং ক্ষমতায়নের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে।
এই সন্ধ্যার আরও একটি বিশেষ দিক ছিল সফল নারীদের সম্বর্ধনা জ্ঞাপন এবং সমাজের প্রতি তাঁদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া। এই উদযাপন কেবল কৃতীকে সম্মান জানাতেই নয়, বরং বিভিন্ন প্রেক্ষাপটের মহিলাদের মধ্যে সংহতি ও ঐক্যের বোধ জাগিয়ে তোলার এক অন্যতম প্রচেষ্টা হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানের ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার ছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy