সেই নার্সিংহোমে চিকিৎসার খরচের চার্ট। পালস অক্সিমিটারের ভাড়া (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র।
খোলা বাজারে পালস অক্সিমিটারের দাম মেরেকেটে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। আর একটু ভাল হলে সেটা ২ হাজারের ঘর ছোঁয়। কিন্তু বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের মটুকগঞ্জ এলাকার একটি নার্সিংহোমে রোগীর পরিজনদের কাছ থেকে পালস অক্সিমিটারের জন্য ঘণ্টা প্রতি ভাড়া নেওয়া পাঁচশো টাকা! নার্সিংহোমের হেল্প ডেস্কের দেওয়ালে টাঙানো রেট চার্টেই সেই ভাড়া লেখা রয়েছে। শুধু পালস অক্সিমিটার নয়, শারীরিক পরীক্ষার জন্যও মোটা টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এমনই অভিযোগ পেয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে মঙ্গলবার ওই নার্সিংহোমে হানা দিলেন বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অনুপকুমার দত্ত। নার্সিংহোমের হেল্প ডেস্কে টাঙানো ওই রেট চার্ট সরেজমিনে খতিয়ে দেখার পাশাপাশি চিকিৎসা এবং তার বিল সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি দ্রুত মহকুমা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরে জমা করার নির্দেশ দেন তাঁরা। মহকুমাশাসক পরে বলেন, “স্থানীয়দের কাছ থেকে একাধিক অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা নার্সিংহোমে এসে জানতে চাই কিসের ভিত্তিতে চিকিৎসার এই রেট স্থির করা হয়েছে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কাছে কী নথি রয়েছে তা-ও দেখাতে বলা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা করানো রোগীদের কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে তার নথিও খতিয়ে দেখা হবে। রেট চার্টে লেখা পালস অক্সিমিটারের ভাড়া নিয়েও অভিযোগ জমা পড়েছিল। সরকারি ভাবে এমন কোনও রেট দেওয়া হয়নি। তা হলে কিসের ভিত্তিতে ওই নার্সিংহোম ওই রেট স্থির করেছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে।”
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অবশ্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা, চিকিৎসা ও যন্ত্রপাতির ভাড়া বাবদ বাড়তি চার্জ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। নার্সিংহোমের ম্যানেজার রমেশ রায় বলেন, “সরকারি নিয়ম অনুযায়ী রেট চার্ট টাঙাতে হয়। লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সময় মালিকের নির্দেশে ওই রেট চার্ট টাঙানো হয়েছিল। কিন্তু ওই রেট চার্ট অনুযায়ী চিকিৎসার খরচ নেওয়া হচ্ছে না। এই নার্সিংহোমে যে রোগীরা ভর্তি আছেন অধিকাংশেরই নির্দিষ্ট প্যাকেজের বিনিময়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে।”
বাঁকুড়ায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার অনিয়মের বহু অভিযোগ সম্প্রতি সামনে এসেছে। জেলার তিনটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ভুয়ো রোগী ভর্তি রেখে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থেকে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার তদন্ত চলাকালীন জানা যায়, ওই তিনটি নার্সিংহোমের মধ্যে একটি লাইসেন্স ছাড়াই চলছে। বিষয়টি সামনে আসার পরই স্বাস্থ্য দফতর ওই নার্সিংহোম তড়িঘড়ি বন্ধ করে দেয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বিষ্ণুপুর শহরেই আরও একটি নার্সিংহোমে অনিয়মের অভিযোগ উঠল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy