Advertisement
০৪ জানুয়ারি ২০২৫
Indian Railways

যাত্রী পরিবহণে ভাটা, অর্থসঙ্কটে কমতে পারে ট্রেন

রেলকর্তাদের বক্তব্য, ১৬৭ বছরের ইতিহাসে এমন আর্থিক সঙ্কটে আগে কখনও পড়তে হয়নি তাঁদের।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

ফিরোজ ইসলাম
শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:৫৭
Share: Save:

অতিমারির দাপট এবং অর্থনৈতিক মন্দা সামলে রেলে পণ্য পরিবহণের হাল ফিরতে শুরু করেছে। কিন্তু যাত্রী পরিবহণ তলানিতে এসে ঠেকেছে। এতটাই যে, চলতি আর্থিক বছরে শুধু সেই কারণে রেলের আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকা কম হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এবং আয় কমলে ক্ষতি এড়াতে কমানো হতে পারে ট্রেনের সংখ্যাও।

রেলকর্তাদের বক্তব্য, ১৬৭ বছরের ইতিহাসে এমন আর্থিক সঙ্কটে আগে কখনও পড়তে হয়নি তাঁদের। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘মানুষের মন থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা পুরোপুরি মুছে যাওয়ার আগে রেলে যাত্রী পরিবহণের হাল ফেরা মুশকিল। এই সমস্যা চলতে পারে আগামী অর্থবর্ষেও।’’ পরিস্থিতি সামলাতে চাহিদা অনুযায়ী বিশেষ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা ছাড়াও অনলাইনে টিকিট বুকিং প্রক্রিয়া আরও সরল করছে রেল। অন্যান্য পরিষেবা থেকে আয় বাড়িয়ে ট্রেন চালানোর খরচ তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে রেল বোর্ডের খবর।

এমনিতেই অর্থনৈতিক মন্দায় রেলে পণ্য পরিবহণ খাতে আয় কমছিল। লকডাউন শুরু হওয়ায় গত এপ্রিল-মে মাসে পণ্য পরিবহণ তলানিতে এসে ঠেকে। অগস্টের পরে আনলক পর্বে পণ্য পরিবহণ ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে। সব ডিভিশনে ‘বিজ়নেস ডেভেলপমেন্ট’ কমিটি গড়া হয়। ফল, আনাজ, ওষুধ, পিপিই কিট পরিবহণের জন্য বিপুল সংখ্যা পার্সেল ট্রেন চালাতে থাকে রেল। বিভিন্ন ই-কমার্স সংস্থার পণ্য পরিবহণ শুরু হয়। চিরাচরিত কয়লা, আকরিক লোহা, অন্যান্য খনিজ দ্রব্য, রাসায়নিক সারের বাইরে অটোমোবাইল-সহ নতুন পণ্যের পরিবহণেও নামে রেল।

এই সর্বাত্মক প্রয়াসে ২০১৯-এর ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ৯% বেশি পণ্য বহন করে রেল। চলতি অর্থবর্ষের শেষে পণ্য পরিবহণের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে রেলকর্তাদের দাবি। আয়ও বাড়তে পারে। বিগত অর্থবর্ষে পণ্য বহন থেকে রেলের আয় হয়েছিল ১,২৩,০০০ কোটি টাকা।

কিন্তু যাত্রী পরিবহণ খাতে বিপুল ক্ষতি রেলের আর্থিক স্বাস্থ্যে চাপ বাড়াচ্ছে বলে জানান কর্তারা। বিগত অর্থবর্ষে ওই খাতে রেলের আয় ছিল ৫৩,০০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে ওই লক্ষ্যমাত্রা ৬১,০০০ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই খাতে রেলের ঘরে এসেছে মাত্র ৫০০০ কোটি। আগামী কয়েক মাসে পর্যটনে ব্যবসা বাড়লেও যাত্রী পরিবহণে আয়ের ঘাটতি মেটানো যাবে না বলে রেলকর্তাদের অভিমত।

করোনা-আতঙ্কে যাত্রীর অভাবে এখনও অধিকাংশ ট্রেন চালু করা যায়নি। সারা দেশে আগে প্রায় ১৩,০০০ যাত্রিবাহী ট্রেন চলত। এখন চলে হাতে গোনা ট্রেন। অল্প কিছু ট্রেন ছাড়া বেশির ভাগ বিশেষ ট্রেনে ১০০ শতাংশ যাত্রী মিলছে না। আয় বাড়াতে বিশেষ ট্রেনে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ছাড়াও বিভিন্ন পরিষেবা বিক্রি করে আয় বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রীদের অনলাইনে টিকিট বুকিং প্রক্রিয়া সহজ করতে আইআরসিটিসি-র টিকিট বুকিং ওয়েবসাইটের খোলনলচে পাল্টানো হয়েছে। নতুন ওয়েবসাইটে মিনিটে দু’হাজারের বদলে ২৫ হাজার টিকিট বুক করা যাবে। ওই সাইটে আগে একসঙ্গে ৪০ হাজার যাত্রী লগ-ইন করতে পারতেন, ক্ষমতা বাড়িয়ে সেটা পাঁচ লক্ষ করা হয়েছে। যাত্রীরা রিটায়ারিং রুম, ভিআইপি লাউঞ্জ বুক করা এবং টিকিটের সঙ্গে পছন্দসই খাবার বুক করার সুবিধাও পাচ্ছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways Less number of passengers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy