প্রতীকী ছবি।
এত দিন রাজ্য জুড়ে এক সময়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সর্বাধিক ডেঙ্গি-রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৬২। সোমবারের পরিসংখ্যান, সারা রাজ্যে শুধু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫০। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রেরখবর, এডিস ইজিপ্টাই মশার কামড়ে অসুস্থ এত বেশি রোগীকে আগে কখনও এক সময়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকতে দেখা যায়নি। ডেঙ্গির দাপট এ বার কেমন, এটা তারই প্রমাণ।
ডেঙ্গির দাপট নিয়ে তৎপরতা চললেও সেই তথ্য কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যাপারে রাজ্য সরকারের অনীহা কাটছে না। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, বেসরকারি হাসপাতাল যোগ করলে ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যাটা নিশ্চিত ভাবেই আরও বেশি হবে। পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তা সত্ত্বেও দিল্লিকে ডেঙ্গি-তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বিগত বছরের ধারা বজায় রেখেছে স্বাস্থ্য ভবন। পরিসংখ্যান চেয়ে দিল্লি একাধিক বার ই-মেল করলেও কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।
বিধানসভায় ডেঙ্গিতে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা জানানো হচ্ছে। তা হলে কেন্দ্রকে ডেঙ্গি-তথ্য দিতে আপত্তি কোথায়? স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় চলতি বছরে রাজ্য সরকার ৪৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সেখানে কেন্দ্র দিয়েছে মাত্র তিন কোটি। খামোকা দিল্লিতে তথ্য পাঠাতে যাব কেন?’’ স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গত মে থেকে অন্যান্য রাজ্যও দিল্লিতে ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে।
দিন তিনেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, এ-পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা ১৭। আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে দশ হাজার। মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়ার তিন দিনের মাথায় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গি-রোগীর এই পরিসংখ্যানে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা অবাক। তাঁদের বক্তব্য, প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা সাতশোর গণ্ডি ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আগে কখনও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সোমবারের পরিসংখ্যানে সাড়ে সাতশোর মধ্যে নতুন রোগী ১৮৫। শুধু উত্তর ২৪ পরগনাতেই হাসপাতালে ভর্তি ৪১৪ জন। কলকাতায় ১১৮, নদিয়ায় ৭০।
সরকারি হাসপাতালে এখন যে বিপুল সংখ্যক রোগী ভর্তি রয়েছেন, সেটাকে স্বাস্থ্য দফতরের সাফল্য হিসেবে দেখছেন আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গির চিকিৎসা যে ভাল হয়, সেই ভরসা আছে বলেই রোগীর সংখ্যা এ বার এত বেশি দেখাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে দু’জন আইএএস এবং এক জন আইপিএস অফিসার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। তাঁরাও কিন্তু সরকারি হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন।’’
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির পরে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা কি বেড়েছে? এই বিষয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য ভবনের বিশেষজ্ঞ কমিটি। শুক্রবারের পর থেকে সেই কমিটি আর বৈঠকেই বসেনি। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে কি না, তা জানা যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy