নিজস্ব: বঙ্গশ্রী আলুর বীজ। ৫০ কেজির প্যাকেটের দাম বারোশো টাকা। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যবাসীর পাতে এতদিন ধরে যে আলু পড়েছে, সেগুলির জন্ম বঙ্গে হলেও আদি নিবাস পঞ্জাব ও হরিয়ানা। ভিনরাজ্য থেকে আসা বীজ এতদিন জমিতে রোপণ করেই আলু ফলিয়েছেন কৃষকেরা। তাই গায়ে পোস্ত মাখা ছোট টুকরোর হোক বা মাংসের ঝোলে ডুবে থাকা প্রমাণ আকারের হোক, বাঙালির আটপৌরে থেকে খাস মেনুতে যে আলুর উপস্থিতি, তার নাড়ির টান ভিনরাজ্যের মাটির সঙ্গেই। তবে সেই দিন এ বার ঘুচতে চলেছে। এ বার রাজ্যবাসী পেতে চলেছে নিজস্ব আলু। যে আলু একেবারে খাঁটি বঙ্গীয়। কৃষি দফতর এই আলুর নাম রেখেছে বঙ্গশ্রী। আপাতত শুধু বীজ হিসেবেই মিলছে এই আলু। চলতি মাসে বঙ্গশ্রী আলুর বীজ কৃষকেরা বুনবেন। মাস তিনেক পরে সেই গাছে মিলবে রাজ্যের নতুন এবং নিজস্ব ব্র্যান্ডের বঙ্গশ্রী আলু।
শুরুটা হয়েছিল কয়েক বছর আগে থেকে। তখন তা ছিল পুরোপুরি পরীক্ষামূলক। মূলত ভাইরাস আক্রমণের জন্য এ রাজ্যে আলুর বীজ তৈরি হত না বলে কৃষকেরা দাবি করতেন। মূলত বিভিন্ন ধরনের পোকার শরীরবাহিত সেই ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে মশারির নীচে আলুর বীজ চাষ করা শুরু হয়। জলপাইগুড়ি জেলার গজলডোবা, বোয়ালমারি, ধূপগুড়িতে আলুর বীজ চাষ করা শুরু হয়। এই পদ্ধতিতে চাষ করে ভাইরাস আটকানো যায়। আবার এই বীজ থেকে ফলনও ভাল হয় বলে দাবি। কয়েকবছর ধরে টানা পরীক্ষা চালানোর পরে এ বছর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে খোলা বাজারে বঙ্গের মাটিতে জন্মানো আলুর বীজ বিক্রি করতে শুরু করেছে কৃষি দফতর। জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন ব্লক এবং শিলিুগুড়ি মহকুমায় বঙ্গশ্রী আলুর বীজ বিক্রি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে।
কৃষি দফতরের দাবি, পঞ্জাব-হরিয়ানা থেকে এতদিন বা এখনও যে আলুর বীজ আসছে তা খুবই দামি। সেই সব বীজের প্যাকেটে অনেক সময়ে খাওয়ার আলুও ভরা থাকে বলে অভিযোগ। এতে কৃষকদের ক্ষতিই হত। বঙ্গশ্রী আলুর ৫০ কেজির এক প্যাকেটের দাম ১২০০ টাকা থেকে শুরু। যা কিনা অত্যন্ত সস্তা বলে দাবি। জলপাইগুড়ির কৃষি দফতরের সহকারী অধিকর্তা (বিষয়বস্তু) মেহেফুজ আহমেদ বলেন, “এই আলু একেবারে বাংলার নিজস্ব। বাংলার প্রথম আলুর ব্র্যান্ড। আমাদের কৃষকেরা লাভবান হবেন। এখানকার কৃষকদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাইরেও পাঠানো যেতে পারে বঙ্গশ্রী আলু।”
জেলার বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে বঙ্গশ্রী আলুর পোস্টার পড়েছে। ‘বাংলার হাইটেক আলু বঙ্গশ্রী’ লেখা পোস্টার দেখা যাচ্ছে আশেপাশে। কৃষকেরা কিনছেনও দেদার। বিভিন্ন কৃষক গোষ্ঠীর সাহায্যে এ বার ৬০ টন বীজ উৎপাদিত হয়েছে। আগামী বছর আরও বেশি উৎপাদিত হবে বলে দাবি কৃষি দফতরের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy