Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সুদীপ্ত-দেবযানীকে আড়াল, পুলিশি কলরব ‘না না না না’

ট্রেন থেকে নেমে পরিচিত নিরাপত্তাকর্মীদের দেখেই হাত নাড়তে শুরু করলেন দেবযানী মুখোপাধ্যায়। নীল জিনস, কালো সোয়েটার পরে থাকা দেবযানীর গলায় লালচে রঙের মাফলার। হাতে নীল রঙের ব্যাগ। বুধবার সকালে দার্জিলিং মেল থেকে নেমে পুলিশের ঘেরাটোপে ওভারব্রিজের ওঠার ঠিক আগে এক যাত্রীই চেঁচিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন তাঁর দিকে, “মদন মিত্র তো গ্রেফতার হয়ে গেলেন। এরপর?” প্রশ্নকর্তাকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে শুধু মুচকি হাসলেন দেবযানী।

শিলিগুড়ি আদালত চত্বরে সুদীপ্ত সেন। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ি আদালত চত্বরে সুদীপ্ত সেন। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৩২
Share: Save:

ট্রেন থেকে নেমে পরিচিত নিরাপত্তাকর্মীদের দেখেই হাত নাড়তে শুরু করলেন দেবযানী মুখোপাধ্যায়। নীল জিনস, কালো সোয়েটার পরে থাকা দেবযানীর গলায় লালচে রঙের মাফলার। হাতে নীল রঙের ব্যাগ। বুধবার সকালে দার্জিলিং মেল থেকে নেমে পুলিশের ঘেরাটোপে ওভারব্রিজের ওঠার ঠিক আগে এক যাত্রীই চেঁচিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন তাঁর দিকে, “মদন মিত্র তো গ্রেফতার হয়ে গেলেন। এরপর?” প্রশ্নকর্তাকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে শুধু মুচকি হাসলেন দেবযানী।

বুধবার সুদীপ্ত সেনকেও একই সঙ্গে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল। গত বছর কালিম্পং থানায় দায়ের হওয়া প্রতারণার একটি মামলায় এ দিন দেবযানীকে কালিম্পং মহকুমা আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। শিলিগুড়ির একটি মামলায় হাজিরা দেওয়ার জন্য সুদীপ্ত সেনকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে নিয়ে আসা হয়। পুলিশকর্মীদেরই একাংশের মতে, এ দিন দেবযানীকে চনমনে দেখা গিয়েছে। সুদীপ্ত বরং ছিলেন ম্রিয়মান।

কুণাল ঘোষের কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে যাতে না পৌঁছয় তার জন্য কলকাতায় পুলিশকর্মীদের মুখে ‘হা রে রে রে’ শোনা গিয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে দেবযানীর কথা চাপতে শোনা গেল ‘না না’! ওভারব্রিজে দেবযানীকে পরিবহণ মন্ত্রীর গ্রেফতারি, সারদা কাণ্ডের তদন্ত সহ যে প্রশ্নই করা হয়েছে পুলিশ কর্মীরা সমবেতভাবে ‘না, না, না, না’ ‘না, একদম না,’ বলে চেঁচিয়ে উঠেছেন। তাঁকে ঘিরে থাকা পুরুষ-মহিলা পুলিশ কর্মীদের এই কলরব শুনে প্রশ্ন শুনে মুখ তুলেও, কিছু বলেননি দেবযানী। সুদীপ্ত সেনকে অন্য ওভারব্রিজ দিয়ে স্টেশনের বাইরে নিয়ে যায় পুলিশ। সে ছবি তুলতে গেলে পুলিশ কর্মীরা হাত তুলে সুদীপ্তর মুখ আড়াল করেছেন। প্রশ্ন শুনে সুদীপ্ত কোনও উত্তর না দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। প্রিজন ভ্যানে সুদীপ্তকে দেখে এক মোটরবাইক আরোহী, তাঁর নাম ধরে ডেকে, কটূক্তিও করেন।

তবে শিলিগুড়ি আদালতের হাজত থেকে সুদীপ্ত সেনকে এজলাশে নিয়ে যাওয়ার সময়ে অবশ্য প্রশ্ন করাতে পুলিশ বাধা দেয়নি। হাজত থেকে এসিজেএমের আদালত পর্যন্ত ব্যারিকেডের মতো দড়ি নিয়ে দু’দিকে দাড়িয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। সংবাদমাধ্যমের কর্মী থেকে শুরু করে আদালতে জড়ো হওয়া অন্য বিচারপ্রার্থী থেকে সকলেই প্রশ্ন, কটাক্ষ ছুড়ে দেন। কৌতুহলী ভিড়ও ছিল আদালত চত্বরে। ভিড় থেকে প্রশ্ন ভেসে আসে, “সুদীপ্তদা মদনের পরে ভিতরে কে যাচ্ছে?” অন্য এক মামলার বিচারপ্রার্থী জানতে চান, “এ বার কী আবার কোনও ম?” আদালতের দরজায় ঢোকার সময়ে হঠাত্‌ একজন জিজ্ঞেস করে বসেন, “খাওয়া দাওয়া ঠিক হচ্ছে তো?”

গত বছরের এপ্রিল মাসে শিলিগুড়ির মিলনপল্লির বাসিন্দা এক মহিলা সারদা নিয়ে রিয়েলিটি সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই মামলায় সুদীপ্ত দেবযানী দু’জনেই জামিনে রয়েছেন। চার্জশিটও জমা পড়েছে। এ দিন নিজের ঘরে বসেই মামলা শোনেন এসিজেএম এ এইচ এম রহমান। আদালত সূত্রের খবর এ দিন প্রথমে মামলার নথি নিতে চাননি সুদীপ্ত। প্রথমে তিনি জানান, তাঁর আইনজীবী সঙ্গে না থাকায় নথি নেবেন না। পরে মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে যাবে সে কারণ জানিয়ে নথি নিতে আপত্তি করেন। সরকারি আইনজীবী সুদীপ বাসুনিয়া বলেন, “সিবিআই মামলাটির দায়িত্বভার নিয়ে নিলে এই আদালতে আর শুনানি হবে না বলে জানিয়ে প্রথমে মামলার নথি নিতে চাননি সুদীপ্ত সেন। পরে অবশ্য তিনি নিয়ে নেন।” আগামী ৩১ ডিসেম্বর ফের শিলিগুড়ি আদালতে হাজিরার তারিখ রয়েছে সুদীপ্ত দেবযানীর। এ দিন রাতেই দু’জনকে ফের কলকাতায় রওনা করানো হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

siliguri debjani sudipta sen saradha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy