Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
শীতলখুচি

দলেরই কর্মীকে খুনে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

একশো দিনের কাজ নিয়ে বিবাদের জেরে এক তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে। রবিবার কোচবিহারের শীতলখুচির ওই ঘটনায় নিহতের নাম মাহেত আলি মিয়াঁ (৪৬)। ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা নূরজামাল মিয়াঁ-সহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নিহতের পরিবারের তরফে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪১
Share: Save:

একশো দিনের কাজ নিয়ে বিবাদের জেরে এক তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে। রবিবার কোচবিহারের শীতলখুচির ওই ঘটনায় নিহতের নাম মাহেত আলি মিয়াঁ (৪৬)। ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা নূরজামাল মিয়াঁ-সহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নিহতের পরিবারের তরফে। তার ভিত্তিতে মামলা শুরু করেছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “দুই পক্ষের মধ্যে বচসাকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো দিনের কাজ বিলি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল। নিহত মাহাত আলি মিয়াঁর ভাইপো ছকমল মিয়াঁ স্থানীয় শালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। সম্প্রতি একশো দিনের কাজ বিলি নিয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য ছকমল মিয়াঁ এবং দলের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা, পেশায় ঠিকাদার নুরজামাল মিয়াঁর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। রবিবার ঈদ উপলক্ষে দুঃস্থদের মধ্যে বিলি করার জন্য ৮টি শাড়ি পেয়েছিলেন ছকমল। তিনি সেগুলি নিজের বাড়ি থেকেই বিলি করেন। দুপুরে তিনি পঞ্চারহাট বাজারে একটি চায়ের দোকানে ছিলেন। অভিযোগ, সে সময় নুরজামালের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন যুবক সেখানে গিয়ে শাড়ি দাবি করেন। সেগুলি বিলি হয়ে গিয়েছে শুনে ছকমলকে ঘিরে ধরে মারধর করতে শুরু করেন তাঁরা। তা দেখে ছকমলের কাকা মাহেত আলি এগিয়ে গেলে তাঁকেও মাটিতে ফেলে লোহার রড, বাটাম দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় মাহেতকে প্রথমে মাথাভাঙা এবং পরে কোচবিহার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকায় তাঁকে সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার পরেই ছকমল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তবে এ দিন অবশ্য ছকমলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

কয়েক দিন আগেই সপ্তমীর রাতে মাথাভাঙার নয়ারহাটে তৃণমূল কর্মী প্রদীপ বর্মনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় দলেরই নেতা-কর্মীদের। তার পরে ফের একই মহকুমায় আর এক দলীয় কর্মীর খুনের ঘটনায় ফের দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। সোমবার দুপুরে নিহত কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর দাবি, “গোষ্ঠী কোন্দলের কোনও বিষয় নেই। যাঁরা শাড়ি পাননি, তাঁদের মধ্যে কয়েকজন গিয়ে ছকমলকে মারধর করে। মাহেত সে সময় ছকমলকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযুক্তরা যে দলই করুক না কেন, আইনের হাত থেকে রক্ষা পাবে না।”

দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি দলীয় নেতৃত্বের কাছে ১০০ দিনের কাজে ছকমলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছিলেন নূরজামাল। তা নিয়ে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনাও ছিল। গত কয়েক মাস ধরেই শালবাড়ি পঞ্চায়েতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর আসছিল দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে। যদিও একশো দিনের কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের ছোট শালবাড়ি অঞ্চল কমিটির সভাপতি সামাদ মিয়া।ঁ ছকমলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সামাদ বলেন, “ছক কষে হামলা চালিয়ে নুরজামালরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঈদের কাপড় বিলি নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে আমাদের জানানো যেত, প্রশাসনকে নালিশ করতে পারত। তা না করে হামলা করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সদস্যকে কব্জা করে টাকা নয়ছয়ের পরিকল্পনা করেই এমন হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

cooch behar 100 days work shitalkhuchi tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy