চকচকা শিল্পকেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা কারখানাগুলি চালুর উদ্যোগ না নিলে মালিকদের কাছ থেকে জমি ফেরত নিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে সোমবার রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগমের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলার শিল্প দফতরের আধিকারিকরা। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট শিল্পোদ্যোগী সংগঠন প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে দীর্ঘদিন ধরে চকচকা শিল্পকেন্দ্র চত্বরে যে সব সংস্থার কারখানার বন্ধ রয়েছে, সেই সংস্থাগুলির লিজ বাতিল করে জমি ফেরত নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তার আগে বন্ধ কারখানা কর্তাদের আর একবার সুযোগ দিতে চাইছে প্রশাসন। বন্ধ কারখানার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা খতিয়ে দেখে দ্রুত সেগুলি চালুর চেষ্টা করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরজন্য একমাস সময়ও দেবে প্রশাসন। তারপরেও কোনও পদক্ষেপ না হলে নিয়মমাফিক আইনি নোটিস পাঠিয়ে জমির লিজ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে প্রশাসন। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “কারখানা করার জন্য জমি দেওয়া হয়েছিল। কোনভাবেই জমি আটকে রাখার বিষয়টি মেনে নেওয়া হবে না। প্রাথমিক ভাবে বন্ধ কারখানাগুলি চালুর চেষ্টা হচ্ছে। তারপরেও কাজ না হলে লিজ বাতিল করে জমি ফেরত নিতে দরকারি পদক্ষেপ করা হবে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০০১-এ বাম জমানায় কোচবিহারের চকচকা শিল্পকেন্দ্র গড়ে ওঠে। কয়েক বছরের মধ্যে সেখানে রাইস মিল, হাসকিং মিল, প্লাস্টিক সামগ্রী, খাতা তৈরি, সরষের তেলের মিল, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পাটজাত ও তুলোজাত সামগ্রী, বিস্কুট, মশারি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরির ৬৫টি কারখানা তৈরি হয়। তার মধ্যে অন্তত ১৫টি কারখানা দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি মশারি তৈরির কারখানা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। তুলোজাত সামগ্রী, বিস্কুট, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের কারখানার কোনওটি দু’ বছর, কোনওটি আবার তিন বছর ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। বেশ কিছু বন্ধ কারখানা গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
কোচবিহার জেলা শিল্প দফতরের আধিকারিক নিরঞ্জন বিশ্বাস জানান, এই শিল্পকেন্দ্র চত্বরে ৭২ একর জমির মধ্যে এক একর বিক্ষিপ্ত ভাবে ফাঁকা রয়েছে। টুকরো ওই জমিতে নতুন কারখানা তৈরি সম্ভব নয়। আগ্রহীদের অনেকেই জমি পাচ্ছেন না। রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগমের আধিকারিক শান্তনু তালুকদার বলেন, “কলকাতা অফিস থেকে জমি সংক্রান্ত বিষয় দেখভাল করা হয়। বৈঠকের আলোচনার বিষয় উর্ধ্বতন কর্তাদের জানানো হবে। তাঁরাই এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন।”
এ দিকে শিল্পোদ্যোগীদের সংগঠন কোচবিহার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ভরত ভূষণ অগ্রবাল এই প্রসঙ্গে বলেন, “এ ভাবে কারখানা বন্ধ করে জমি ফেলে রাখা আমরাও সমর্থন করছি না। ফলে প্রশাসন এ সব নিয়ে পদক্ষেপ করলে আমাদের আপত্তির প্রশ্ন নেই।” একই সঙ্গে ওই অ্যাসোসিয়েশনের তরফে চকচকা শিল্পকেন্দ্রের বেহাল নিকাশি, রাস্তার আলো, এবং ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক সংযোগকারী রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে বৈঠকে ক্ষোভ জানানো হয়। জেলাশাসক অবশ্য এই সমস্ত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy