পুরসভার কাজের পর্যালোচনা বৈঠক করে শহরের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে পুর কমিশনার, সচিব এবং বাস্তুকারদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। গত সাড়ে ৩ বছরে এসজেডিএ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর, রাজ্য পুর দফতর থেকে কত টাকা পুর এলাকার উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে সেই খতিয়ান দেন। পুর নির্বাচন ঘোষণার আগে বেশ কিছু কাজ দ্রুত শুরু করার কথাও জানান। যা শুনে বিরোধীদের বক্তব্য মন্ত্রী সরকারি ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগাতে চাইছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “শেষ ছয় মাসে বিভিন্ন পরিকল্পনা খাতে পুর দফতর থেকে ৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে শিলিগুড়ি পুরসভাকে। তা ছাড়া গত সাড়ে তিন বছবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে ১৩৪ কোটি টাকা এবং এসজেডিএ থেকে ৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে আমি এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান হওয়ার পর ৭০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সুসংহত বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে ৬ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা পুর দফতর থেকে বরাদ্দ করা হচ্ছে।” বিরোধীদের বক্তব্যকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে চান না উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী।
আগামী ২৫ এপ্রিল পুর সভার ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনে রাজ্য সরকার প্রস্তাব দিয়েছে। সেই মতো নির্বাচন ঘোষণা হলে হাতে বেশি সময় নেই। বিরোধীদের অভিযোগ, তাই শুরু না হওয়া বিভিন্ন কাজ তড়িঘড়ি করে আরম্ভ করে দিতে চাইছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। যাতে ভোটের প্রচারে সেগুলি ফলাও করে বলতে পারেন। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ভোট করতে চেয়ে দিন করে নির্বাচন কমিশনে আর্জি জানিয়েছেন। অথচ তার পর নাগরিক কনভেনশন করা হচ্ছে। পুরসভার পর্যালোচনা বৈঠক হচ্ছে। সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে কনভেনশন, বৈঠক করে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ। বিজেপি’র জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু বলেন, “ভোটের আগে কাজ দেখিয়ে মন্ত্রী বাসিন্দাদের ললিপপ দিতে চাাইছেন। সাড়ে ৩ বছরে শহরের কোনও উন্নয়ন তারা করতে পারেনি। লোক দেখাতে নানা কাজের কথা বলা হচ্ছে। অথচ এতদিন যারা পুরসভায় গাড়ি ভাড়া দিতেন তারা টাকা পাচ্ছেন না। মানুষ সবই দেখছেন” একই সুরে শহরের উন্নয়নে মন্ত্রী এই তৎপরতার সমালোচনা করেছে কংগ্রেসও। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মাটিগাড়া নকশাল বাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার প্রশ্ন তুলেছেন, উন্নয়নের ইচ্ছে থাকলে যখন পুরবোর্ডে তাঁরা ছিলেন সে সময় করলেন না কেন? এখন লোক দেখাতে ভোটের প্রয়োজনে কাজ দেখাতে চাইছেন বলে অভিযোগ। শঙ্করবাবু বলেন, “পুরবোর্ড কিছু করতে চাইলে তারা বাধা দিয়েছেন। অর্থ সাহায্য করেননি। এখন নির্দিষ্ট সময়ে ভোট না করিয়ে প্রশাসক বসিয়ে অর্থ বরাদ্দ করে কাজ দেখিয়ে ভোট করাতে চাইছেন। মানুষকে তাঁরা বোকা ভাবছেন।” বিরোধীদের অভিযোগ, পুরসভার প্রশাসক বসার ৬ মাসের মধ্যে ভোট করাতে হয়। তাও করানো হয়নি। বোর্ডের মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। সেই বোর্ডের মেয়াদ সম্প্রসারণ করে এখন পুর নির্বাচন পর্যন্ত চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ দিন পর্যালোচনামূলক বৈঠকের পর মন্ত্রী জানান, আগামী ২ মার্চ সুভাষপল্লি বাজারের সংস্কার করে চা চালু করা হচ্ছে। ৪ মার্চ ৩ নম্বর বরো স্থানাস্তরিত করা হচ্ছে। পুরসভার নতুন ভবনের কাজ তার পরেই শুরু করে দেওয়া হবে। রাজ্য সরকার ওই কাজের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। বিভিন্ন ছোট রাস্তাঘাট সংস্কারে ৩৮ কোটি টাকা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ি এলাকায় সুলভ শৌচাগার করা হবে। সুসংহত বস্তি উন্নয়নপ্রকল্পে ৯৬৪টিবাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে এ দিন বামেদের বস্তি উন্নয়ন কমিটির তরফে পুরসভায় অবস্থান বিক্ষোভ করে বিভিন্ন দাবি কথা জানানো হয়। বস্তি এলাকার বাসিন্দারা বিভিন্ন ভাতার টাকা, সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন। জমির পাট্টা, স্বাস্থ্য বিমার কার্ডের দাবিতে তারা দিনভর পুরসভায় বিক্ষোভ দেখান। আজ, বৃহস্পতিবারও একই ভাবে দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy