কুড়ি বছরের পর
বালুরঘাট শিল্পী মঞ্চের কুড়ি বছর পূর্তি বর্ষব্যাপী উদযাপন উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানটি হয়ে গেল মন্মথ মঞ্চে। উৎসবের প্রথম দিন ছিল আট থেকে চোদ্দো বছরের কচিকাঁচাদের ‘অন্বেষণে’। সূচনা হয় ছন্দম কলাকেন্দ্রর শিক্ষার্থীদের সম্মেলক নৃত্য। খুদেদের একক নিবেদনে ছিল নজরুলগীতি, ভজন থেকে আধুনিক গান। তাপস দত্তের রাগাশ্রয়ী গান ও গজল শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যায়। দ্বিতীয় সন্ধ্যায় ‘বাংলা বিচিত্রা’ শুরু হয় ‘ঋষিগন্ধা’-র সম্মেলক নৃত্যানুষ্ঠানে। শিল্পীমঞ্চের সদস্যদের যুগ্ম নিবেদনে শোনা গেল রবীন্দ্রসংগীত, ভজন ও আধুনিক গান। তন্ময় বিশ্বাস শোনালেন লোকগান। তৃতীয় দিন ‘স্বর্ণালী সন্ধ্যা’-র সূচনা হয় ‘নৃত্যাঞ্জলি’-র সমবেত নৃত্য পরিবেশনায়। দেবাশিস খাঁ-র পরিচালনায় লোকগানগুলি ছিল উপভোগ্য। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের লোকগীতির সঙ্গে প্রচলিত লোকগান কণ্ঠে নেন সুজাতা বিশ্বাস, নিতাই মণ্ডল ও প্রবীর রায়। দীপ্তি বসাক ও রাজর্ষি গোস্বামীর পরিবেশনায় ছিল গজল। ঊর্মি সাহা ও শান্তনু দের যুগ্ম কণ্ঠে পরিবেশিত রবীন্দ্রসংগীতগুলি ছিল সুখশ্রাব্য। শেষ দিন মঞ্চস্থ হয় বালুরঘাট নাট্যকর্মী প্রযোজিত নাটক ‘পদভূষণ’। নির্দেশনায় মনোজ গঙ্গোপাধ্যায়, সঙ্গীত পরিচালনায় দেবাশিস খাঁ। প্রকাশিত হয় স্মারক গ্রন্থ ‘কুঁড়ি থেকে কুড়ি’। মালবী গোস্বামীর গান দর্শকদের প্রশংসা আদায় করে নেয়।
অগ্রন্থিত রচনা সম্ভার
রায়গঞ্জবাসী প্রয়াত সত্যরঞ্জন দাস ছিলেন বহুসন্ধানী লেখক। দিনাজপুরের ছাদ নামে খ্যাত মানুষটি ছিলেন ইতিহাস অনুরাগীও। জড়িত ছিলেন বহু সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও। পেয়েছেন বহু সম্মান। সম্প্রতি রায়গঞ্জের বিধানমঞ্চে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হল সত্যরঞ্জন দাসের অগ্রন্থিত রচনা সম্ভার। নজরুলগীতি ও শ্যামাসঙ্গীতের কোলাজে ‘মাতৃবন্দনা’য় সূচনা সঙ্গীত পরিবেশিত হয় নীলিমা বর্মনের পরিচালনায়। গ্রন্থটির আবরণ উন্মোচন করেন ড: আনন্দগোপাল ঘোষ। অধ্যাপক হিমাংশু কুমার সরকার, ড: সুশীলকুমার গোস্বামী প্রমুখ বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে জানা গেল তাঁর সাহিত্যসৃষ্টির নানা কথা, ইতিহাস, স্বাধীনতা সংগ্রাম, সম্পর্কে তাঁর আগ্রহ ও অন্বেষণের কথা। সমসাময়িক বিভিন্ন সমস্যার বিরুদ্ধেও তিনি যে কলমকেই হাতিয়ার করেছিলেন স্মৃতিচারণায় উঠে এল সে তথ্যও। পূর্বধারা ও স্বাধীনতা উত্তরধারা প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর লেখাতে, পত্রালাপে ও আলাপচারিতায়।
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র নৃত্য মঞ্চস্থ হয় শিখা বারুইয়ের পরিচালনায়। ছিল নীলিমা বর্মন ও সম্প্রদায় পরিবেশিত লোকগান। সাহিত্যপাঠের আসরে স্থানীয় কবি ও লেখকরা পাঠ করেন স্বরচিত গল্প ও কবিতাগুচ্ছ। গ্রন্থ প্রকাশ কমিটির সম্পাদক সুকুমার বারুই জানান, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁর লেখাগুলি মলাটবন্দী করার পাশাপাশি বিরল চিঠির সংকলন ও রয়েছে, যা ইতিহাস রচনার উপাদান হয়ে উঠতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই বই প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আদিত্য নাগ ও শর্মিষ্ঠা ঘোষ। অনুষ্ঠানটির আয়োজক লেখক পুত্র সোমনাথ দাস ও গ্রন্থ প্রকাশ কমিটি।
গ্রামীণ সাহিত্য শাখার পুনরুজ্জীবনে
সম্প্রতি নিখিল ভারত বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন, জলপাইগুড়ি শাখার পক্ষ থেকে বিনোদরঞ্জন শিকদার ও নিকুঞ্জবিহারী শিকদার স্মারক পুরস্কার প্রদান করা হল। ‘নীরজকোরক’ লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনার জন্য মণিদীপা নন্দী বিশ্বাসের হাতে স্মারক তুলে দেন আরতি শিকদার। সূচনা সঙ্গীতে সরস্বতী বন্দনা পরিবেশন করেন মনীষিতা নন্দী ও সৈকত ঘোষ। শুভ্র দাশগুপ্তের ‘মেঘ বলল’ আবৃত্তি করলেন অধ্যাপিকা দেবযানী সেনগুপ্ত। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন গোপা ঘোষ পালচৌধুরী, সপ্তাশ্ব ভৌমিক প্রমুখ। সংস্থার সভাপতি আনন্দগোপাল ঘোষ স্বাগত ভাষণে বলেন, উত্তরবঙ্গের প্রাচীনতম এই শাখার পক্ষ থেকে একসময় চা-বাগান, ডুয়ার্স ও গ্রামীণ সাহিত্য সম্মেলন করা হত। শাখাটিকে পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে। সেই সূত্রেই এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি হল। প্রতি বছর এটি দেওয়া হবে। উপস্থিত ছিলেন গল্পকার অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, পবিত্র ভট্টাচার্যের মতো বিশিষ্ট জনেরা। সঞ্চালনা করেন অধ্যাপিকা কোয়েলা গঙ্গোপাধ্যায়।
লেখা ও ছবি : অনিতা দত্ত
সংস্কৃতির স্পন্দন
বালুরঘাট স্পন্দন কালচারাল ফোরামের উদ্যোগে নাট্যতীর্থ মন্মথ মঞ্চে আয়োজিত হল সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। নৃত্যগীত, অভিনয়, আবৃত্তিতে সাজানো ‘তোমার দুর্গা আমার দুর্গা’ দর্শকদের প্রশংসা কুড়োয়। প্রান্তিক মানুষদের আলো ঝলমলে উৎসবের আঙিনায় সামিল করার মধ্যেই রয়েছে সার্থকতা। আবৃত্তি ও অভিনয়ের মিশেলে ‘আলোর পথযাত্রী’ জানান দেয় অবহেলিত নারীর উত্তরণের কথা। যোগ দেন শতাব্দী, স্বাতীলেখা ও একতা। শিশুশিল্পী মালবী গোস্বামীর কণ্ঠে ‘এই বাগানে ফুল তোলা মানা’ শুনতে ভাল লাগে। শারদা গুহ ও রাজর্ষি গোস্বামীও প্রশংসনীয়। ছিল ‘পথের পাঁচালী’ এবং ‘নৃত্যাঞ্জলি’র অনুষ্ঠানও।
গানের সন্ধ্যায় শিল্পী সংসদ
মালদহের দুর্গাকিংকর সদনে সানাউল্লা মঞ্চে সম্প্রতি আয়োজিত হল মালদহ শিল্পী সংসদের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। সংস্থার সদস্য সদস্যারা সম্মেলক কণ্ঠে শোনান ‘আলোকের এই ঝরনা ধারায়’, ‘মাগো জন্মভূমি মোর’ এবং ‘ওই উজ্জ্বল দিন’। আবৃত্তিতে শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন অতনু চৌধুরী। সুরকার ও সঙ্গীত শিল্পী উদয় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবেশিত সঙ্গীত ছিল এ দিনের সন্ধ্যার অন্যতম আকর্ষণ। শ্যামাসঙ্গীত, রাগাশ্রয়ী গান এবং আধুনিক বাংলা গান শোনালেন তিনি। প্রকাশিত হয় সংসদ বার্তার দীপাবলী সংখ্যা। সংস্থার পক্ষ থেকে সম্মান জানানো হয় প্রবীণ সঙ্গীত শিল্পী তুফান সরকার, তবলিয়া বিশ্বনাথ চৌধুরী ও প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সংস্থার সম্পাদক মলয় সাহা জানান, মালদহের বিভিন্ন শিল্পীরা সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কাজেও নিজেদেরকে জড়িয়ে রেখেছে। তারই অঙ্গ হিসাবে এ দিন দুঃস্থদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
জয়স্মিতা, শরণ্যা, নয়নতারা, সঞ্চারী, তনুষ্কা, তনিষ্ঠা, প্রীতিশা, অনুষ্কার মতো খুদেদের নাচে জমে উঠেছিল শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার সেন্ট জোসেফ’স হাই স্কুলের কমার্স কার্নিভ্যাল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। শনিবার সকালের অনুষ্ঠানের ছবিটি তুলেছেন সুমন রায়চৌধুরী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy