ছবি: সংগৃহীত
যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে। তাঁর জায়গায় সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিষ্ণুব্রত বর্মণকে। এক মাস আগেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বুধবার চিঠি দিয়ে বিষ্ণুবাবুকে দায়িত্ব নিতে বলা হয়। বিষ্ণু উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরোধী গোষ্ঠীর লোক হিসেবেই জেলায় পরিচিত। তাঁর বাবা প্রসেনজিৎ বর্মণ কোচবিহারে কংগ্রেসের বিধায়ক ও সাংসদ ছিলেন। তৃণমূল শুরুর সময়ে প্রসেনজিৎবাবুকে জেলা সভাপতি করা হয়। এ ছাড়াও বিষ্ণু পার্থপ্রতিম রায়ের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। অবশ্য ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলার সব নেতারাই।
রবীন্দ্রনাথ বলন, “দলীয় নেতৃত্ব যাকে দায়িত্ব দেবেন তিনিই কাজ করবেন। দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “রাজ্য নেতৃত্ব ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রসেনজিৎ বর্মণ দলের শুরুতে দায়িত্ব সামলেছিলেন। তাঁর ছেলে বিষ্ণু দলের যুব সংগঠনকে চাঙ্গা করবেন বলেই আশা রাখি।” পার্থ বর্তমানে দলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি। তাঁর কথায়, “বিষ্ণুব্রত বর্মণকে স্বাগত জানাই। তিনি সংগঠন আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সব রকম ভাবে তাঁর পাশে থাকব।”
বিষ্ণুবাবুর সঙ্গে বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনের সম্পর্ক ভাল। তিনি কোচবিহার জেলা ক্রীড়া সংসদের সঙ্গেও দীর্ঘ সময় ধরে রয়েছেন। এ ছাড়া, যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও এক সময় ছিলেন বিষ্ণু। তিনি বলেন, “নেতৃত্ব যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা পূরণ করার জন্য সব রকম চেষ্টা করব।”
এক সময় পার্থপ্রতিম মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তখন তিনি কোচবিহার থেকে লোকসভা ভোটে দলের টিকিট পান। লোকসভা ভোটে জেতেন পার্থপ্রতিম। কিন্তু তার পরে রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয় বলে তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে। পার্থপ্রতিম শেষ লোকসভা নির্বাচনে টিকিটও পাননি।
কোচবিহার আসনে লোকসভা ভোটে হেরেছে তৃণমূল। হারের পরে তৃণমূলের সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিনয়কৃষ্ণকে। দলের কার্যকরী সভাপতি করা হয় পার্থপ্রতিমকে। ওই দু’জনই দলে রবীন্দ্রনাথ বিরোধী বলে পরিচিত।
এই অবস্থায় যুব সভাপতি পদেও নতুন কাউকে দায়িত্বে আনার দাবি উঠতে শুরু করে। কিন্তু কাকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়। পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গেই যুব তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত রয়েছেন অভিজিৎ দে ভৌমিক, রবীন্দ্রনাথ পুত্র পঙ্কজের। অবশেষে দল বিষ্ণুব্রতকে বেছে নেয়।
জেলা ক্রীড়া সংসদ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ অনুগামীদের সঙ্গে বিষ্ণুর বিরোধ দীর্ঘ সময়ের। সেখানে কেন তাঁকেই বাছাই করা হল? দল মনে করছে, পার্থ রাজবংশী সম্প্রদায়ভুক্ত। তাঁর সরিয়ে ওই পদে অন্য কোনও সম্প্রদায়ের লোক আনা হলে তা হাতিয়ার করত বিজেপি। রাজবংশীদের মধ্যে নানা ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে বিজেপি। তার বাইরে প্রসেনজিৎবাবুর ছেলে হিসেবে বিষ্ণুর একটি আলাদা পরিচয় রয়েছ তা দলের পক্ষে সহায়ক হবে। দলের এক নেতার কথায়, “বিজেপি যে ধরনের রাজনীতি করছে, তাতে অঙ্ক কষে এগোতে হচ্ছে আমাদের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy