Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sikkim Flood

দুশ্চিন্তায় সিকিমে আটকে থাকা পর্যটকেরা, সফর বাতিল অনেকের

স্ত্রী এবং দশ বছরের ছেলেকে নিয়ে গত মঙ্গলবার উত্তর সিকিমে গিয়েছেন দমদম পার্কের প্রিয়ঙ্কর মালাকার। গত দু’দিন ধরে তাঁর বন্ধুবান্ধব ও পরিজনেরা শত চেষ্টা করেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।

টানা কয়েক দিন ধরে সিকিমে বৃষ্টির জেরে তিস্তার জল বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।

টানা কয়েক দিন ধরে সিকিমে বৃষ্টির জেরে তিস্তার জল বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। —ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪ ০৮:০২
Share: Save:

বেড়ানোর আনন্দ বদলে গিয়েছে উদ্বেগ ও আতঙ্কে! পাহাড়ে হোটেলবন্দি পর্যটকেরা কী ভাবে বাড়ি ফিরবেন, সেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। প্রশাসনের আশ্বাসও চিন্তামুক্ত করতে পারছে না তাঁদের। একই ভাবে উদ্বিগ্ন কলকাতায় থাকা আত্মীয়েরাও। এমনকি, দু’-এক দিনের মধ্যে যাঁদের পাহাড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তাঁদের অনেকেই বিকল্পের খোঁজ শুরু করেছেন।

টানা কয়েক দিন ধরে সিকিমে বৃষ্টির জেরে তিস্তার জল বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। একাধিক জায়গায় ধস নেমে উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রায় দেড় হাজার পর্যটক এখনও সেখানে আটকে রয়েছেন। রয়েছে কলকাতা থেকে যাওয়া বেশ কয়েকটি পরিবারও।

স্ত্রী এবং দশ বছরের ছেলেকে নিয়ে গত মঙ্গলবার উত্তর সিকিমে গিয়েছেন দমদম পার্কের প্রিয়ঙ্কর মালাকার। গত দু’দিন ধরে তাঁর বন্ধুবান্ধব ও পরিজনেরা শত চেষ্টা করেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। প্রিয়ঙ্করের বন্ধু জয়দীপ বসু বলেন, ‘‘শুক্রবার থেকে ওদের খোঁজ পাচ্ছিলাম না। বার বার বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। শেষে শনিবার ফোনে অল্প কিছু ক্ষণের জন্য কথা বলতে পারি। কয়েক ঘণ্টা যে আমাদের উপর দিয়ে কী গিয়েছে, সেটা শুধু আমরাই জানি।’’ সোমবার ফোনে প্রিয়ঙ্কর জানান, গত শনিবার তাঁদের কলকাতায় ফেরার কথা থাকলেও তাঁরা উত্তর সিকিমের ছাঙ্গুতে আটকে পড়েছিলেন। গোটা এলাকার একাধিক জায়গায় ধস নেমে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। প্রায় তিন দিন সেখানকার হোটেলে আটকে থাকার পরে এ দিন কয়েক কিলোমিটার হেঁটে তাঁরা গ্যাংটকে পৌঁছেছেন। ফোনে প্রিয়ঙ্কর বলেন, ‘‘দু’দিন ধরে ওখানে বিদ্যুৎ, ফোনের নেটওয়ার্ক ছিল না। স্থানীয়দের সাহায্যে ভারী ব্যাগপত্র নিয়ে ৭-৮ কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে। রাস্তায় প্রায় ১২টি জায়গায় ধস নেমেছিল। এর পরে গাড়ির ব্যবস্থা করে গ্যাংটকে ফিরতে পেরেছি। পরিবার নিয়ে যতক্ষণ না বাড়ি ফিরতে পারছি, উদ্বেগ কাটছে না।’’ তাঁদের কলকাতায় ফিরতে বুধবার হয়ে যাবে বলে এ দিন জানিয়েছেন প্রিয়ঙ্কর।

উদ্বেগে রয়েছেন গ্যাংটকে থাকা পর্যটকেরাও। অনেকেই সিকিম ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করে সমতলে ফিরছেন। শনিবার কোনও মতে নিউ জলপাইগুড়িগামী গাড়িতে ওঠেন প্রাঞ্জল সাউ। আদতে বিহারের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকা প্রাঞ্জল ফোনে বললেন, ‘‘ভয়াবহ পরিস্থিতি। টানা বৃষ্টি হয়েই চলেছে। কখন যে কোন রাস্তা বন্ধ হবে, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।’’ কাল, বুধবার বন্দে ভারতের টিকিট রয়েছে তাঁর। তবে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার পরে সেই ট্রেন সফর নিয়েও চিন্তায় রয়েছেন প্রাঞ্জল। ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করে কলকাতায় ফিরছে হাওড়ার একটি পরিবারও।

দু’-এক দিনের মধ্যে সিকিম, গ্যাংটক বা কালিম্পং ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে, এমন অনেকের মনেই উদ্বেগের মেঘ ঘনিয়েছে। অনেকে ঝুঁকি না নিয়ে পরিকল্পনা বাতিল করছেন বলে জানাচ্ছেন শহরের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। বিকল্প জায়গা খুঁজে নিচ্ছেন। পর্যটন ব্যবসায়ী দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘দু’-এক দিনের মধ্যে যাঁদের যাওয়ার কথা ছিল, তাঁরা পরিকল্পনা বাতিল করছেন। অনেকে সিকিম না গিয়ে শুধু দার্জিলিং যেতে চাইছেন। আসলে কেউ আর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। গত বছর যা হয়েছিল, কী করেই বা ঝুঁকি নেবেন!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sikkim Flood Natural Disaster sikkim Teesta River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy