প্রতীকী চিত্র
মেয়ের আধার কার্ড করাতে এক বছর ধরে ঘুরছেন সূর্য সেন কলোনির বাসিন্দা পূর্ণিমা বিশ্বাস। শিলিগুড়ির প্রধান ডাকঘর থেকে জানুয়ারিতে মেয়ে অপর্ণার জন্য ফর্ম তুলেছিলেন। ২৮ নভেম্বর বেলা ১০টায় যেতে বলা হয়। স্কুলে পরীক্ষার জন্য তখন যেতে পারেননি। এখন এনআরসি নিয়ে উদ্বেগে আছেন। আধার না হলে রেশন কার্ডে লিঙ্ক করাতে পারছেন না বলে অভিযোগ। গোঁসাইপুরের পম্পা বর্মণ রায় আধার কার্ডের সংশোধন করাবেন। বুধবার শিলিগুড়ি প্রধান ডাকঘরে তাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) নিয়ে সাধারণের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। আধার কার্ড করাতে লাইনে দাঁড়িয়ে সেই দুশ্চিন্তার কথা অনেকেই জানাচ্ছেন। শিলিগুড়িতে ডাকঘর ছাড়া বিভিন্ন ব্যাঙ্ক মিলিয়ে ২৮টি কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু ডাকঘর এবং দু-একটি ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্য কেন্দ্রগুলিতে কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। লোকে ভিড় করছে ডাকঘরে। সেখানেও সেপ্টেম্বরে যাঁরা ফর্ম তুলেছিলেন, তাঁরা এখন সংশোধন বা নতুন কার্ড করতে পারছেন। ডাকঘর কর্তৃপক্ষ তাঁদের তারিখ বলে দিয়েছিলেন। সেই মতো তাঁরা আসছেন নিজের আবেদন নিয়ে। নতুন আধার আর সংশোধন মিলেই প্রতিদিনই গড়ে ৬০ জন বাসিন্দা আসছেন। কখনও দুটো কাউন্টার করা হলে ১০০ থেকে ১২০ জনের আধার করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে গত আট মাসে সাত হাজারের উপর আধার হয়েছে শিলিগুড়ি মুখ্য ডাকঘর থেকে। ডাকঘর কর্তৃপক্ষ জানান, একবার ফর্ম বিলি করা হয়। কয়েক হাজার বিলির পর ফর্ম দেওয়া বন্ধ করে যারা ফর্ম তুলেছেন তাদেরগুলো জমা করা শুরু হয়। না হলে অনেক জমে যাবে এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে। এখন তাই ফর্ম বিলি বন্ধ রয়েছে। এপ্রিল মাসে ফের ফর্ম বিলি করা হবে। শিলিগুড়ি প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার নন্দা সেন বলেন, ‘‘এনআরসির বিষয়টি সামনে আসার পরেই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে দেখছি। তখন থেকেই আধার কার্ড বানানোর হিড়িক পড়েছে। ফর্ম বিলির সময় ভোর রাত থেকে লাইন পড়ে। কয়েক হাজার ফর্ম বিলি হয়ে গেলে সেগুলি আগে শেষ করে ফের ফর্ম বিলি হয়।’’ তিনি জানান, স্টাফ কম। তা-ও বিভিন্ন চা বাগান এলাকাগুলিতে অনেক সময় শিবির করেও তাঁরা আধার কার্ডের কাজ করছেন।
এ দিন মেয়ের আধার কার্ডের জন্যও এসে ঘুরে যেতে হয়েছে পূর্ণিমাকে। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে আবার এপ্রিলে আসতে বলা হয়েছে। আবার দেরি হবে। তাই চিন্তায় আছি। রেশন কার্ডে লিঙ্ক করাতে পারছি না। এনআরসি, সিএবি, এখন নানা কিছু হচ্ছে। তখন কী সমস্যা হবে, কে জানে।’’ উদ্বিগ্ন মাটিগাড়ার মণিবালা সরকার, চম্পাসারির ধার্মিক সাহুরাও। পম্পা বর্মনের বাপের বাড়ি ডাবগ্রাম নাওয়াপাড়াতে। সেই ঠিকানা বদলে শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা দেবেন। এবং অভিভাবক হিসাবে বাবার পরিবর্তে স্বামীর নাম নেবেন। ভোটার কার্ডে তাই রয়েছে। দুটো এক না হলে নানা ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান। পম্পা বলেন, ‘‘নানা কিছু শুনে পাচ্ছি। এনআরসি নিয়ে চিন্তা করি না। তবু কখন কী হয়, বোঝা মুশকিল। তাই নথিপত্র ঠিক করে রাখতে চাই।’’ তারা সকলেই কয়েক মাস আগে ভোরে লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম তুলেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy