Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Bihar

প্রবেশ, প্রশ্ন, মৃত্যুও

পুলিশ জানায়, মৃত শ্রমিকের নাম রঞ্জন মিশর (১৮)। বিহারে কাজ করতে গিয়ে রঞ্জন জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে।

শোক: মৃত শ্রমিকের মায়ের

শোক: মৃত শ্রমিকের মায়ের

নিজস্ব সংবাদদাতা 
হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫২
Share: Save:

ভিন্‌ রাজ্য থেকে অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন এক শ্রমিক। কিন্তু বাড়ি ফেরার দু’ঘণ্টা বাদে ওই শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশডাঙ্গি এলাকার ঘটনা।

পুলিশ জানায়, মৃত শ্রমিকের নাম রঞ্জন মিশর (১৮)। বিহারে কাজ করতে গিয়ে রঞ্জন জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। হাসপাতালে যে তাঁর চিকিৎসা করা হয়েছিল তারও নথিপত্র পুলিশকে দেওয়া হয়। তাতে তাঁর জন্ডিস হয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। রঞ্জনের চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। রঞ্জন জন্ডিসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাঁর শেষকৃত্য করার অনুমতি দেয়। তবে তাঁর সঙ্গে যাঁরা ফিরেছেন তাঁদের আপাতত হোম কোয়রান্টিনে রাখার পাশাপাশি বিশেষ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, ওই যুবক জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। বাড়ি ফিরতেই তিনি মারা যায়। তবে এতে করোনার কোনও যোগ নেই, ফলে আতঙ্কেরও কিছু নেই বলে চিকিৎসকই জানিয়েছেন।

এ মাসের প্রথম দিকে বিহারের ছপরায় যান রঞ্জন। সেখানে একটি নির্মীয়মান রেলসেতুতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু দিনকয়েক বাদেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু লকডাউন চলতে থাকায় কয়েক দিন আগেই জমানো টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিল রঞ্জনের। তাঁর সঙ্গে সেখানে কাজ করতেন হরিশ্চন্দ্রপুরেরই তিন শ্রমিক। তাঁদের কাছেও টাকা ছিল না। এ দিকে লকডাউনে কাজ বন্ধ। ফলে যে ঠিকাদার তাঁদের নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরও তেমন সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। এর পরেই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন রঞ্জন। নিজের এলাকায় চিকিৎসার কথা বলে হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে রঞ্জনকে মঙ্গলবার একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিন সঙ্গী। বাড়ি পৌঁছনোর দু’ঘণ্টা বাদেই মারা যান রঞ্জন।

রঞ্জনেরা দুই ভাই, এক বোন। রয়েছেন বাবা-মা। অভাবের সংসারে বাড়তি রোজগারের আশায় ভিন্‌ রাজ্যে গিয়েছিলেন। কিন্তু এ ভাবে তাঁর মৃত্যুতে মুষড়ে পড়েছেন পরিবারের লোকজন। বাবা সাকরাতুন বলেন, ‘‘বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারবে বলে কাজে গিয়েছিল। ছেলের যে এমন পরিণতি হবে ভাবতেই পারছি না।’’

মৃতের এক আত্মীয় অঙ্গদ মিশর বলেন, ‘‘টাকা না থাকায় বাধ্য হয়েই ফিরতে হয়েছিল। ওখানে হাসপাতালে থাকলে এ ভাবে বেঘোরে মরতে হত না। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। রেলের কাছ থেকে যাতে ক্ষতিপূরণ মেলে তা উনি দেখবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bihar Jaundice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy