জোরকদমে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। — নিজস্ব চিত্র।
কেউ কলেজের ছাত্রী। কেউ সংসার সামলান। পুজোর আগে নিজেদের ফাঁকা সময় নষ্ট করেন না বালুরঘাটের এই মহিলারা। সুযোগ পেলেই বাড়তি উপার্জনের জন্য যোগ দেন মণ্ডপ তৈরির কাজে।
জরি বা পুঁতি দিয়ে হয় বড় পূজা মণ্ডপের সাজসজ্জা। এ সব কাজেই নিয়োগ করা হয় মহিলাদের। সারা বছরে পাঁচ মাস এই কাজের সুযোগ পান তাঁরা। সে কারণে কেউ কলেজের ক্লাস, কেউ বা বাড়ির কাজ শেষ করে হাত দেন কাজে। যা রোজগার হয়, তাতে পুজোর হাত খরচ চলে যায়। কখনও প্রতি ঘণ্টায় ৩০ টাকা, কখনও দিনে আট ঘণ্টা কাজের জন্য ২৫০ টাকা দেন মণ্ডপ ব্যবসায়ীরা। পুজোর আগে প্রতি মাসে উপার্জন প্রায় পাঁচ হাজার।
কোনও মণ্ডপে বাঁশ বাঁধার কাজ শেষ। কোথাও সাজসজ্জার কাজ চলছে। পুজোর এক সপ্তাহ আগে মণ্ডপের কাজ শেষ করতে হবে। তাই দিন-রাত এক করে এখন ডেকরেটর ব্যবসায়ীদের গুদাম বা বাড়িতে কাজ করছেন মহিলারা। সাধারণত মণ্ডপের ভারী কাজগুলো পুরুষরা করেন। সূক্ষ্ম কাজ করেন মহিলা শিল্পীরাই। সুদূর মেদিনীপুর থেকে শিল্পীরা আসেন বালুরঘাটে। তাঁরাই মূল ভাব কর্মীদের বুঝিয়ে দেন। সেই মতোই চলে মণ্ডপসজ্জার কাজ। বালুরঘাট শহরের বেলতলা পার্ক এবং উত্তমাশা, এই দু’টি জায়গায় সব থেকে বেশি মহিলা শ্রমিক কাজ করেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ২০০-এর নীচে নয়। বালুরঘাট কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী পায়েল মালি বলেন, ‘‘পুজোর আগে বিউটি পার্লার, পছন্দ মতো পোশাক কেনার খরচ রয়েছে। অভিভাবকদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করতে চাই না। তাই ছুটির দিনগুলিতে চুটিয়ে কাজ করে উপার্জনের চেষ্টা করি। পুজোর আগে প্রতি বছরই গড়ে ১০ থেকে ১২,০০০ টাকা রোজগার করতে পারি।’’
বালুরঘাটের সাহেব কাছারি পাড়ার বধূ শর্মিলা সরকার বলেন, ‘‘বাচ্চাকে স্কুলে দেওয়ার পর দীর্ঘ চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সেখানে বসে থাকতাম। সেই সময়টা এখানে দিয়ে প্রতি দিন প্রায় ২০০ টাকা উপার্জন করতে পারছি। পুজোর আগে এটাই বা কম কী?’’
বালুরঘাটের ডেকরেটর ব্যবসায়ী রাজনারায়ণ সাহা চৌধুরী বলেন, ‘‘পুজো মানে একটা মহোৎসব। প্রতি বছর গড়ে পাঁচটা বড় মণ্ডপের কাজ করতে হয়। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদেরও নিযুক্ত করা হয়। মহিলারা ঘরে বসে কাজ করেন এবং এই কাজ তাদের একটা বাড়তি উপার্জনের রাস্তাও করে দেয়। মাসে গড়ে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা উপার্জন করে থাকেন তাঁরা। শুধু আমার গোডাউনে এই কাজ করেন একশোর উপর মহিলা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy