অশোকনগরে গণধোলাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ১৫ জন। — নিজস্ব চিত্র।
অশোকনগরে ছেলেধরা সন্দেহে মহিলাকে এক মারধরের ঘটনায় শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে। শনিবার তাঁদের বারাসত আদালতে হাজির করানো হয়। অশোকনগর থানার তরফে সাধারণ মানুষকে সচেতনও করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে বারাসত পুলিশ জেলার তরফে। পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিন জন মহিলা রয়েছেন।
ছেলেধরা সন্দেহে শুক্রবার সন্ধ্যায় এক তরুণীকে গণপিটুনি দেওয়া হয় অশোকনগরের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পুমলিয়ায়। খবর পেয়ে ওই তরুণীকে উন্মত্ত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করতে যায় পুলিশ। তাদেরও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আহতের নাম রজনী খাতুন। ২৮ বছরের রজনীর বাড়ি ডায়মন্ড হারবার এলাকায়। সাইকেল নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেলে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তরুণী। কিছুটা মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীনও। তাঁকে দেখে সন্দেহ করেন কয়েক জন স্থানীয়। অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় শুরু হয় ওই তরুণীকে মার। কয়েক’শো মানুষ ঘিরে ধরেন তরুণীকে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অশোকনগর থানার পুলিশ। কিন্তু তরুণীকে উদ্ধার করতে গিয়ে বেগ পেতে হয় তাদের। মানিক মুখোপাধ্যায় নামে এক সাব ইনস্পেক্টর আহত হন। পরে ওই থানার ওসি চিন্তামণি নস্কর-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ছেলেধরা সন্দেহে জনৈক রজনী খাতুনকে মারধর করার খবর পায় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজে যায় পুলিশ। মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়।
বারাসতের কাজিপাড়ায় এক বালককে খুনের ঘটনার পর থেকে ছেলেধরা সন্দেহ করে মারধর করার প্রবণতা স্থানীয়দের মধ্যে বৃদ্ধি পায়। ওই বালককে হত্যার পর গুজব রটে যায় যে, ছেলেধরার খপ্পরে পড়েছিল সে। ছেলেধরা তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে চোখ উপড়ে, কিডনি বার করে খুন করেছে। ঝুলন্ত অবস্থায় বালকের দেহ মেলে। যদিও পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তে এমন কোনও ঘটনার প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু ওই খুনের ঘটনার পর থেকেই সমাজমাধ্যমে ঘুরতে শুরু করে বারাসতের ছেলেধরার কাহিনি। এই গুজব এবং সমাজমাধ্যমে ‘অপপ্রচারের’ কারণে বুধবারই তিন জন সন্দেহের বশে গণধোলাই খান। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমেই ছেলেধরা-তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছিল। দুই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। গণপিটুনি যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদের বেশ কয়েক জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। ওই ঘটনায় অন্তত ১৭ জনকে গ্রেফতারের খবর মিলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy