—প্রতীকী চিত্র।
কন্যাসন্তান হওয়ায় এক তরুণীকে মারধর করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে ওই তরুণী তাঁর স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে তাঁকে মারধর করে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগ ‘ভিডিও রেকর্ডিং’ করা হয়েছে। সঠিক সময়ে তা আদালতে পেশ করা হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর নাম হাবিবা খাতুন (২৪)। রায়গঞ্জ থানার রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লোহাগাড়িয়া এলাকায় শ্বশুরবাড়ি। ২১ ডিসেম্বর দুপুরে হাবিবাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করেন তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই তরুণীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ওই দিন বিকেলে বাসিন্দারা হাবিবার স্বামী আসরাফুল হক ও শাশুড়ি রেজামান বিবিকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিল।
পুলিশ জানায়, এ দিন ওই তরুণীর মৃত্যুর পরে ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ দিন হাসপাতালের মর্গে দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। মৃতার শ্বশুরের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবিবার বাপের বাড়ি রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাজিরপুর এলাকায়। আড়াই বছর আগে স্থানীয় চাষি আসরাফুলের সঙ্গে হাবিবার বিয়ে হয়। ওই তরুণীর দাদা মহম্মদ মনিরুদ্দিনের অভিযোগ, হাবিবার বিয়েতে তাঁরা পাত্রপক্ষের দাবি মেনে পণ হিসেবে নগদ ৫৫ হাজার টাকা ও অলঙ্কার মিলিয়ে এক লক্ষ টাকার সামগ্রী দেন। আট মাস আগে আসরাফুল ভুটভুটি কেনার জন্য তাঁদের কাছ থেকে আরও ৩০ হাজার টাকা নেন। ছ’মাস আগে তাঁদের কন্যাসন্তান হয়। তার পরে হাবিবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই সময় থেকে নিয়মিত তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
মনিরুদ্দিনের অভিযোগ, অসুস্থ হলেও কন্যাসন্তান হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে মারধর করতেন। অভিযুক্তেরা হাবিবাকে ঠিক মতো খেতেও দিতেন না। তাঁর নালিশ, ২১ ডিসেম্বর স্বামী আসরাফুল, শাশুড়ি রেজামান ও শ্বশুর আনিসুর রহমান হাবিবাকে মারধর করে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বাড়ি থেকে বার হতে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্তেরা তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।
মনিরুদ্দিন বলেন, ‘‘সেই দিনই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে বোনকে খুনের চেষ্টা অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। বোনের মৃত্যুর পরে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করবে বলে জানিয়েছে।’’
আসরাফুল অবশ্য আগেই দাবি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। হাবিবা মানসিক কোনও কারণে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy