Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

বড়দিনেও কি জমবে পাহাড়

টানা বন্‌ধ আর অশান্তির আশঙ্কা পর্যটকদের গন্তব্য থেকে অনেকটাই সরিয়ে দিয়েছে দার্জিলিংকে। দেওয়ালির মতো আগামী শীতেও বাজার তেমন ভাল হওয়ার আশা করছেন না অনেকেই।

প্রতিভা গিরি ও অনির্বাণ রায়
দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৯
Share: Save:

দেওয়ালিতে পর্যটন ব্যবসা জমেনি। আগামী শীতের মরসুম নিয়েও চিন্তায় পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। ভিন রাজ্য থেকে আসা পর্যটকরা নিউ জলপাইগুড়িতে নেমে পাহাড়ের দিকে যাচ্ছেন বটে, সেই পাহাড় সিকিমের। টানা বন্‌ধ আর অশান্তির আশঙ্কা পর্যটকদের গন্তব্য থেকে অনেকটাই সরিয়ে দিয়েছে দার্জিলিংকে। দেওয়ালির মতো আগামী শীতেও বাজার তেমন ভাল হওয়ার আশা করছেন না অনেকেই। তবে অন্য অংশের দাবি, এত কিছুর পরেও পাহাড় পুরোপুরি পর্যটক শূন্য নয়। সামান্য হলেও পর্যটকরা রয়েছে। ধীরে ধীরে সেই ভিড় বাড়বে বলে আশা।

এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে বিমল গুরুঙ্গের প্রকাশ্যে আসার দাবি করে ঘোষণা। তেমন হলে গোলমালের ভয়ে অনেক পর্যটক মুখ ফেরাচ্ছেন বলে দাবি।

কয়েক দিনের মধ্যেই শীতের মরসুম শুরু হয়ে যাবে। ট্যুর অপারেটররা দাবি করলেন, শীতের মরসুমের বুকিং এখনও শুরুই হয়নি। তেমন খোঁজখবরও করছেন না কেউ। শুক্রবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছেলেন কাটিহার থেকে আসা ৯ পর্যটকদের দল। গন্তব্য গ্যাংটক। দলের সদস্যা হেনা কোঠারি দাবি করলেন পুজোর সময়ে দার্জিলিং যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। মাসকয়েক আগে থেকে টিকিটও কাটা ছিল। পাহাড়ে গোলমালের খবর পেয়ে সেই টিকিট বাতিল করেছেন তাঁরা। পরিকল্পনা বদলে গ্যাংটকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হেনা বললেন, ‘‘যা গোলমালের খবর পেয়েছি, তাতে দার্জিলিং যাওয়ার কথা শুনে ভয় লাগছে। সে কারণেই সিকিম যাচ্ছি।’’

পর্যটকদের এমন ‘ভীতি’র কথা জানেন ট্যুর অপারেটররা। এই পরিস্থিতিতে ফের অশান্তির আশঙ্কা খাড়া করেছে বিমল গুরুঙ্গের ঘোষণা। আগামী ৩০ নভেম্বর গুরুঙ্গ দার্জিলিঙে প্রকাশ্যে বাসিন্দাদের মাঝে আসবেন বলে অডিও বার্তায় দাবি করেছেন। ইউএপিএ মামলা সহ সাব ইন্সপেক্টরকে খুনের অভিযোগ সহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত গুরুঙ্গকে দেখলেই গ্রেফতারির চেষ্টা করবে পুলিশ। বেশ কিছু দিন ধরে গুরুঙ্গের নাগাল পেতে ক্রমাগত অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এ ছাড়াও বিনয় তামাঙ্গ এখন পাহাড়ে নিজের ভিত মজবুত করে নিয়েছেন বলে তাঁর অনুগামীদের ধারণা। জিটিএ-এর প্রশাসক পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদে থাকায় প্রশসানিক ক্ষমতাও বিনয় কব্জা করে ফেলেছেন দাবি। গুরুঙ্গ প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করলে বিনয়পন্থীরা রুখে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। সব মিলিয়ে ফের অশান্তির আশঙ্কায় ভুগছে পাহাড়।

বছর তিনেক ধরে শীতের সময় পাহাড়ে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। গত বছরের শীতেও হোটেল-রিসর্টের আশি শতাংশ বুকিং থাকার কথা জানিয়েছেন পর্যটন ব্যসায়ীরা। শুক্রবার সকাল থেকেই পাহাড়ে কালো মেঘের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পুরো দার্জিলিং শহর। বৃষ্টিও চলছে। যে ক’জন পর্যটক রয়েছে তাঁরাও হোটেলের ঘরবন্দি।

ক্লাবসাইডের এক গাড়ির মালিক বললেন, ‘‘যদি বা বন্্‌ধ উঠল, মানুষের ভয় কাটছে না। যারা সাহস করে এসেছেন, বৃষ্টির কারণে তাঁরাও বাইরে বের হতে পারছেন না। এ ভাবে কী করে ব্যবসা করব বুঝতেই পারছি না। তবু চেষ্টা করছি।’’

অন্তত তিন দশক ধরে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রদীপ লামা। তাঁর কথায়, ‘‘তুষারপাতের আশায় প্রতিবছর শীতে বেশ ভিড় হয়। অনেকসময়ে ভাল হোটেলে ঘর নিয়ে কাড়াকাড়িও হয়। এবার এখনও কোনও অগ্রিম বুকিং নেই। শীতটা পুরো সুখাই যাবে।’’ ট্যুর অপারেটর থেকে গাড়ি চালক, হোটেল মালি এবং ভিনরাজ্যের পর্যটক নাগাড়ে বনধ যে এক ধাক্কায় দার্জিলিঙের পর্যটনকে অনেকটাই খাদে ফেলে দিয়েছে তা নিয়ে সংশয় নেই কারও।

অন্য বিষয়গুলি:

Darjeeling Hills Public Diwali Christmas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy