ভোটের প্রচারে এ বার তরজা ভাওয়াইয়া গানের প্রকৃত সমঝদার কে তা নিয়ে। কোচবিহার লোকসভার উপনির্বাচনের ছবিটা তেমনই বলছে। ওই কেন্দ্রে তৃণমূল তাদের প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়কে ভাওয়াইয়া দরদী বলে তুলে ধরে ইতিমধ্যে জোরদার প্রচার শুরু করেছে। মঙ্গলবার তৃণমূল প্রভাবিত শিল্পী সংগঠন উত্তরবঙ্গ ভাওয়াইয়া ও লোকশিল্পী সমিতির তরফে দোতরা সহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে কোচবিহারে মিছিল করা হয়। বিকেলে রবীন্দ্র ভবনে সভাও হয়।
সমিতির সহ সভাপতি সর্বানন্দ বর্মন বলেন, “পার্থবাবু ভাওয়াইয়া সংস্কৃতি জগতের ঘনিষ্ঠ। তার ওপর উনি সমিতির সাম্মানিক সভাপতি। তাই এমন কর্মসূচি।” ভাওয়াইয়া শিল্পী তুলসী সরকারের বক্তব্য, “শিল্পীরা ভাতা পাচ্ছেন, পরিচয়পত্র পেয়েছেন। পার্থবাবু প্রার্থী হওয়ায় ভালই হয়েছে।” অনুষ্ঠানস্থলে ভাওয়াইয়া প্রেমী মনোরঞ্জন রায় অবশ্য বলেন, “সময়ই সব প্রশ্নের উত্তর দেবে।”
বসে নেই বিরোধীরাও। ভাওয়াইয়াকে হাতিয়ার করে হাজির তারাও। কোথাও ভোট প্রচারের অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হচ্ছে ভাওয়াইয়া, কোথাও দাবি-পাল্টা দাবি নিয়ে চলছে তরজা। উপনির্বাচনের মুখে ভাওয়াইয়া শিল্পী থেকে ভাওয়াইয়াপ্রেমী-চেষ্টা চলছে সবারই মন জয়ের।
তৃণমূল শিবিরের দাবি, তাঁদের প্রার্থী পার্থবাবু ভাওয়াইয়া জগতের ঘনিষ্ঠ। ২০০৯ সালে নায়েব আলি (টেপু) স্মরণ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত ভাওয়াইয়া উৎসবের সঞ্চালক হিসাবে ওই ঘনিষ্ঠতার আনুষ্ঠানিক সূত্রপাত্র। সময়ের প্রবাহে যা বেড়েছে। রাজ্য ভাওয়াইয়া উৎসবেও তিনি একাধিক বার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। পরে উত্তরবঙ্গ ভাওয়াইয়া ও লোকশিল্পী সমিতির সাম্মানিক সভাপতি হন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ভাওয়াইয়া কোচবিহারের প্রাণের গান। এই প্রথম ভাওয়াইয়া দরদী মানুষ প্রার্থী হয়েছেন। এতে তাঁরা ভাওয়াইয়া নিয়ে ভাবনার লোক পাবেন।” পার্থবাবু বলেন, “শিল্পীরা মানুষের কাছাকাছি থাকেন। তৃণমূল সরকার তাদের মর্যাদা দিয়েছে। তাদের সঙ্গে দরদী হিসেবে থাকার সুযোগটাই বড় প্রাপ্তি।”
বিরোধীদের প্রচারেও ভাওয়াইয়া প্রসঙ্গ উঠছে। বামেদের দাবি, রাজ্য জুড়ে ভাওয়াইয়ার প্রসার বাম আমলেই হয়েছে। তৃণমূল চমক দিচ্ছে মাত্র। কোচবিহারের বাম প্রার্থী নৃপেন রায় বলেন, “ভাওয়াইয়ার প্রসার বাম সরকার করেছে, আব্বাসউদ্দিনের মত শিল্পীদের সামনে রেখে নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। তৃণমূল চমক দিচ্ছে, না হলে ওরা কোনও শিল্পীকে প্রার্থী করলেন না কেন?” বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, “ওদের আমলে ভাওয়াইয়ার প্রসার বা শিল্পীদের উন্নয়ন হয়নি।” যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি সম্রাট মুখোপাধ্যায় আবার বলেন, “ভাওয়াইয়া শিল্পীদের প্রকৃত মর্যাদা কংগ্রেস দিয়েছে। সুখবিলাস বর্মা দলের টিকিটে জিতে বিধায়কও হয়েছেন।” সম্রাটবাবুর দাবি, তাঁরা সংস্কৃতি ও রাজনীতি মেশাননি।
এক শিল্পী গাইছিলেন, ‘তোর্সা নদীর উথাল পাথাল, কারবা চলে নাও (নৌকা)...। ১৯ নভেম্বর তোর্সা পাড়ের জেলায় জনতার রায়দানেই তা স্পষ্ট হবে। আপাতত তারই অপেক্ষা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy