কোচবিহারের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে নিকাশি নালার কাজের সূচনা করছেন পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে কাজ শুরুর হিড়িক পড়েছে কোচবিহারের গ্রামেগঞ্জে। প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে চলছে রাস্তা, সেতুর কাজের সূচনা। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের বক্তব্য, পাঁচ বছর ঘুমিয়ে ছিলেন পঞ্চায়েত-প্রশাসনের কর্তারা। সে জন্যেই জেলার গ্রামে-গঞ্জে রাস্তা-সেতুর মতো কষ্টে ভুগছেন বাসিন্দারা। কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মণ বলেন, "বিরোধীরা এ সব কথার কথা বলেন। পাঁচ বছর ধরে আমরা কাজ করেছি। করোনা পরিস্থিতিতেও বসে ছিলাম না। ভোটের মুখে কাজের কোনও বিষয় নেই। ধারাবাহিক ভাবেই কাজ হচ্ছে।’’
রবিবার ছুটির দিনে কোচবিহার ১ নম্বর ব্লক ও হলদিবাড়িতে পাঁচটি কাজের উদ্বোধন করেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মণ। তাঁর সঙ্গে প্রশাসনের আধিকারিকরাও ছিলেন। দিন কয়েক আগেই পথশ্রী প্রকল্পে জেলার ৩৭০টির মতো রাস্তার কাজের সূচনা হয়েছে। সব মিলিয়ে যার খরচ পড়বে ২৫০ কোটি টাকার উপরে। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘বহু গ্রামে রাস্তার সমস্যা রয়েছে। অনেক ছোট নদীতে সেতু নেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ যাতায়াত করেন। সে সব এত দিন ঠিক হয়নি। ভোটের মুখে কাজের সূচনা হচ্ছে। সে সব কবে হবে কে জানে?’’
কোচবিহার জেলায় ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রত্যেকটি গ্রামেই পরিষেবা নিয়ে মানুষের মধ্যে কমবেশি ক্ষোভ রয়েছে। কোথাও রাস্তার সমস্যা, কোথাও পানীয় জলের সমস্যা আবার কোথাও সেতুর সমস্যা। তা নিয়ে একাধিক জায়গায় শাসকের বিরুদ্ধে সরব হতেও শুরু করেছে বিজেপি। যদিও তৃণমূল দাবি করেছে, গ্রামীণ উন্নয়নের একটি বড় অংশের টাকা আসত একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকে। সেই প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রাখায় গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। তার পরেও রাজ্য সরকার উন্নয়নমূলক কাজের পথে হাঁটছে। এই কয়েক দিন কোচবিহার সদর মহকুমা থেকে শুরু করে দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জে রাস্তার উদ্বোধন হয়। বেশ কিছু ছোট ছোট সেতুর কাজের সূচনা হয়। তার মধ্যে একটি চান্দামারির কলাভাঙা সেতু। সাত কোটি টাকার উপরে খরচ করে ওই সেতু তৈরির কাজ হবে। কোচবিহারের বহু গ্রামাঞ্চলেই এমন ছোট-ছোট কিছু নদী অনেক গ্রামকে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। ঘুরপথে আসতে গেলে কয়েক কিলোমিটার যাতায়াত করতে হয় বাসিন্দাদের। সে জন্যে নদীর উপরে বাঁশের সাকো তৈরি করে যাতায়াত করেন তাঁরা। তা নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। চান্দামারির কয়েক জন বাসিন্দার কথায়, ‘‘ওই সেতু আমাদের খুব প্রয়োজন। এটা বড় কাজ হবে।’’
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। যে মুহূর্তে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে, তার পরে নতুন করে আর কোনও কাজ করা যাবে না। বিরোধীদের দাবি, সে জন্যই ভোটের মুখে তড়িঘড়ি করে কিছু কাজের উদ্বোধন করা হচ্ছে। ভোটে হেরে গেলে সেই কাজ শেষ হল কি না, তা নিয়ে আর দায়বদ্ধতা থাকবে না। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, ‘‘এ সব ভোট রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়।’’ তৃণমূলের অবশ্য দাবি, টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরই কাজের সূচনা করেন তারা। সেই কাজ থমকে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy