সৌজন্য: অজয় এডওয়ার্ডের বাড়িতে বিনয় তামাং। নিজস্ব চিত্র।
এ যেন নতুনের আবাহন।
কয়েক মাস আগে জিএনএলএফ থেকে বার হয়ে এসে নতুন দল গড়েছিলেন অজয় এডোয়ার্ড। এ দিন তাঁর সেই দল ‘হামরো পার্টি’ বাজিমাত করল। দ্বিতীয় হল অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। এবং নেতৃত্বে নতুন মুখ এনে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলও পেল দু’টি আসন। তবে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে জোট করে লড়ায় পাহাড়ে তৃণমূলের আদত শক্তি ঠিক কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেল। তবু নতুন তৃণমূল নেতা বিনয় তামাং খুশি। দার্জিলিংবাসীর মন বুঝে বিনয়, এনবি খাওয়াসের মতো তৃণমূলের নেতারা এর পরে পৌঁছে যান অজয়ের বাড়িতেও। শুভেচ্ছা বিনিময়ের সঙ্গে পাহাড় রাজনীতির নতুন সমীকরণ বা বোঝাপড়ার ইঙ্গিত রয়েছে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিনয় বলেছেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে ভোট দিয়েছে। নতুন পুরবোর্ডের পাশে আমরা সবসময় থাকব। রাজ্য সরকারও থাকবে।’’ আর অজয়ের কথায়, ‘‘এটা সবার জয়। সবাই আমার বন্ধু। সকলে মিলে দার্জিলিং বানাব। রাজ্য সরকারের নিয়মে বোর্ড গঠন হবে। সেই সঙ্গে উন্নয়নের কাজে সবার সহযোগিতাও আমরা চাইব।’’
তৃণমূল বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বোঝাপড়া করে ১০টি আসনে প্রার্থী দেয়। তার মধ্যে দল ২ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী মাত্র তিন ভোটে হেরেছেন। আর ২০১৭ সালে তৃণমূল একমাত্র কাউন্সিলর চুংচুং ভুটিয়াও জোর লড়াই করে ৯১ ভোটে হেরে দ্বিতীয় হয়েছেন তাঁর নিজের ওয়ার্ডে। গুরুং অবশ্য এই বহুদলীয় রাজনীতিতে কার্যত হারিয়ে গিয়েছেন। তিন জন প্রার্থী জিতলেও তাঁর জমানা যে শেষের মুখে, তা বুঝে তিনি অজয়কে শুভেচ্ছা জানান। তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা দার্জিলিঙে ‘আপাতত’ দ্বিতীয় শক্তি। ৯টি আসন পেয়ে অনীত বলেছেন, ‘‘দার্জিলিংবাসীকে শুভেচ্ছা। ২০১৭ সালে আমাদের প্রতিষ্ঠা করা গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।’’
একা লড়লেও অনীত থাপা বরাবরই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত। পাহাড়ের তৃণমূল উচ্ছ্বসিত, কারণ তাঁদের ব্যাখ্যা, তৃণমূল, গুরুংয়ের সঙ্গে অনীতদের আসনও শাসকদলের দিকেই রয়েছে। সরকারি তথ্য বলছে, শাসকদল দুটিতে জেতা ছাড়াও পাঁচটিতে দ্বিতীয় হয়েছে। দু’টি আসনে তৃতীয় এবং একটিতে দল চতুর্থ স্থানে আছে। দার্জিলিং পুরভোটের দলের পর্যবেক্ষক অলোক চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘দশটি ওয়ার্ডের হিসেবে আমরা ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছি।’’
সমতলের দলের প্রতি সুবাস ঘিসিং বা বিমল গুরুংয়ের আমলে পাহাড়বাসীর খুব একটা ভরসা ছিল না। স্থানীয় পুরভোট, পঞ্চায়েত, পার্বত্য পরিষদ বা জিটিএ ভোটে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি বা তৃণমূলের কোনও দিন ভূমিকা দেখা যায়নি। শুধু লোকসভা ভোটেই সমতলের দল প্রথম সারিতে থাকত। তা-ও যাকে পাহাড়ের মূল দল সমর্থন করত, সেই দলটি। এ বার পুরভোটে প্রথমবার ভোটও বেড়েছে তৃণমূলের। তবে এ ভোটে পুরোপুরি মুছে গিয়েছে বিজেপি এবং জিএনএলএফ। পাহাড়াবাসীর রায়কে মানলেই অজয়কে কটাক্ষ করে বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বা বলেন, ‘‘এটা রাস্তা, পানীয় জল, জঞ্জাল সাফাইয়ের ভোট। পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান খোঁজা আমাদের এখন কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy