Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
West Bengal Lockdown

৪০০ কিমি সাইকেল চালিয়ে ফিরলেন বৃদ্ধ

মোথাবাড়িতে ফিরলেও তিনি বাড়ি যাননি। সাইকেল নিয়ে সোজা চলে আসেন পিডব্লিউডি মাঠের পাশে বিষ্ণুপ্রসাদ কর্মতীর্থ ভবনে।

সচেতন: মোথাবাড়ির ইনস্টিটিউশনাল কোয়রান্টিন কেন্দ্রের সামনে সূর্যকান্ত চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

সচেতন: মোথাবাড়ির ইনস্টিটিউশনাল কোয়রান্টিন কেন্দ্রের সামনে সূর্যকান্ত চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

জয়ন্ত সেন
মোথাবাড়ি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২০ ০৬:৪৮
Share: Save:

নৈহাটি থেকে হাইব্রিড মাগুরের পোনা কিনে বিহারের সুপাউল জেলায় বিক্রি করাই তাঁর পেশা। কলকাতা থেকে যোগবাণি এক্সপ্রেসে মাছের পোনা নিয়ে যান। এ ছাড়া সাইকেলে করে সুপাউলের গ্রামে গ্রামে মাছও বিক্রি করেন। কিন্তু লকডাউনে ট্রেন বন্ধ হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় কারবারও। সুপাউলেই আটকে পড়েন মোথাবাড়ির বাসিন্দা ৭৫ বছরের সূর্যকান্ত চৌধুরী। শেষমেশ সাইকেল চালিয়ে তিন দিনে চারশো কিলোমিটার পারি দিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে মোথাবাড়ি ফিরলেন তিনি।

তবে মোথাবাড়িতে ফিরলেও তিনি বাড়ি যাননি। সাইকেল নিয়ে সোজা চলে আসেন পিডব্লিউডি মাঠের পাশে বিষ্ণুপ্রসাদ কর্মতীর্থ ভবনে। যেখানে ব্লকের ইনস্টিটিউশনাল কোয়রান্টিন সেন্টার করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা হয়। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাঁকে ১৪ দিন বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেন।সন্ধ্যার দিকে সাইকেল চালিয়ে তিনি কালিয়াচক ২ ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আইলপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়ি পৌঁছন। কিন্তু অভিযোগ, গ্রামবাসীরা এ নিয়ে আপত্তি জানান। তাঁকে অন্তত ১৪ দিন ইনস্টিটিউশনাল কোয়রান্টিনে থাকার কথা বলেন। শেষে রাতে তিনি ফের মোথাবাড়ির কর্মতীর্থ ভবনে আসেন।

কালিয়াচক ২ ব্লকের বিডিও সঞ্জয় ঘিসিং বলেন, “৭৫ বছর বয়সেও সূর্যকান্ত যে ভাবে সাইকেল চালিয়ে ৪০০ কিলোমিটার এলেন, ভাবা যায় না। তিনি এখন মোথাবাড়ি কর্মতীর্থে ইনস্টিটিউশনাল কোয়রান্টিনে রয়েছেন। সেখানেই তাঁর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।”

আরও পড়ুন: ঘরে সতর্ক থাকুন, শহরে ঘুরে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

স্থানীয় সূত্রে খবর, আইলপাড়া গ্রামে সূর্যকান্তের স্ত্রী ও তিন ছেলে রয়েছেন। তিন ছেলেই ভিন্ রাজ্যে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে যুক্ত। এখন তাঁরা বাড়িতেই। তবে, মাছের ব্যবসার জন্য প্রায় ত্রিশ বছর বিহারের সুপাউল জেলার গড়িয়া গ্রামে থাকেন সূর্যকান্ত। তিনি বলেন, “হাতে যে টাকা ছিল, তা লকডাউনের এই ক’দিনে শেষ। ৩ মে পর্যন্ত কী খেয়ে বেঁচে থাকবো, সেই চিন্তাতেই শেষে সাইকেলে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিই।” বললেন, “গামছায় চিড়ে-গুড় বেঁধে রবিবার ভোর চারটে নাগাদ বেরিয়ে পড়ি। পূর্ণিয়ার আগে রনবাগ এলাকায় রাত কাটিয়েছি। সেখানে গ্রামবাসীরা বাইরের লোককে থাকতে দিচ্ছিলেন না। শেষে একটি বাড়ির বারান্দা রাত কাটিয়ে ভোরে ফের রওনা হই। ওই রাতে মালদহের কুশিদায় এক বাড়ির বারান্দায় থাকি। পরের দিন ফের ভোর চারটেয় রওনা দিয়ে মঙ্গলবার বিকেল চারটেয় মোথাবাড়ি কোয়রান্টিন সেন্টারে পৌঁছই।” রাস্তায় অনেক পুলিশ, কিন্তু বয়স্ক মানুষ দেখে পথ আটকায়নি কেউ, হাসিমুখে জানালেন সূর্য।

আরও পড়ুন: চিকিৎসক মহলে সংক্রমণ অব্যাহত, মেডিক্যালে আক্রান্ত আরও ১ চিকিৎসক ও ৪ নার্স

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Old Man Cycle
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy