Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

এক বেলা ফ্যানভাত, সাহায্য চান শ্রমিকেরা

শ্রমিকেরা জানান, শর্ত ছিল যে ওই সংস্থা থাকার বন্দোবস্ত করবে, কিন্তু খাওয়া-দাওয়া নিজেদের জোগাড় করতে হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২০ ০০:৫২
Share: Save:

একসময়ে অনাহারে মৃত্যুর খবরে শিরোনামে এসেছিল ওড়িশার কালাহান্ডি। যদিও কয়েক দশকে সেই কালাহান্ডি এখন শস্য-শ্যামলা। সেখানেই জুনাগর থানার কান্দুলগুড়া গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি লাগানোর কাজে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালদহের দশ জন শ্রমিক।

জানা গিয়েছে, লকডাউন শুরু হতেই কাজ বন্ধ হয়ে যায় তাঁদের। যে বেসরকারি সংস্থার হয়ে কাজে গিয়েছিলেন, মাস না ফুরোনয় সেই সংস্থা বেতন দেয়নি। শুরুর দিকে স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে চেয়েচিন্তে কিছু চাল পেয়েছিলেন। তা দিয়েই কোনও দিন একবেলা ফ্যানভাত বা আলুসেদ্ধ-ভাত জুটছিল। অন্য বেলায় শুধু জল-মুড়ি। সেই রসদও ফুরোনর পথে। এ দিকে, ওড়িশা সরকার লকডাউনের মেয়াদ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এই চাল শেষ হলে খাবার কী ভাবে জুটবে তা ভেবেই কুল পাচ্ছেন না ওই শ্রমিকরা। এ দিকে, জেলার ওই ১০ শ্রমিকের দুরবস্থার কথা জানিয়ে মালদহ জেলা প্রশাসনকে এ দিন ইমেল করে আরএসপি।

জানা গিয়েছে, মার্চ মাসের ৬ তারিখ একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে কালাহান্ডিতে কাজে যান তাঁরা। এই ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের বাড়ি ইংরেজবাজার ব্লকের ভবানীপুর গ্রামে। বাকি ৪ জনের রতুয়া ২ ব্লকের খারসান্না গ্রামে। আবদুল রাব নামে মানিকচক কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রও রয়েছেন। লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় ২৫ মার্চ থেকে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়েন তাঁরা।

শ্রমিকেরা জানান, শর্ত ছিল যে ওই সংস্থা থাকার বন্দোবস্ত করবে, কিন্তু খাওয়া-দাওয়া নিজেদের জোগাড় করতে হবে। সেখানে থাকা কলেজ পড়ুয়া আবদুলের বাড়ি ইংরেজবাজারের ভবানীপুরে। আবদুল বলেন, “বাড়িতে বড় সংসার। বাবা টোটো চালান। সেই টাকায় সংসার চলে না। সে কারণেই কলেজে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা শেষ হওয়ায় কিছু টাকা রোজগারের আশায় দু’মাসের জন্য কাজে এসেছিলাম। কিন্তু এ ভাবে ফেঁসে যাব ভাবতেই পারিনি। এখন না পারছি বাড়িতে ফিরতে, না আছে হাতে টাকা, না জুটছে খাবার।"

মিলন মিয়াঁ, শেখ তারিকুল, শেখ নবিউল, আনসারুল মোমিনরা বলেন, “লকডাউনের শুরুতেই খাবার সঙ্কট দেখা দেওয়ায় স্থানীয় এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে চেয়ে কিছু চাল পেয়েছিলাম। সঙ্গে ৪০০ টাকা হাতে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চাল এখন ফুরিয়ে যাওয়ার পথে। ওই টাকা দিয়ে যে আনাজ, তেল, মশলা কিনেছিলাম সে সবও শেষ। তিন চার দিন ধরে শুধু এক বেলা ফ্যান-ভাত খাচ্ছি। কেউ সাহায্য না করলে না খেয়ে মরতে হবে।" তাঁরা আরও বলেন, “যে সংস্থার হয়ে আমরা কাজে গিয়েছি তাঁদেরও আমরা খাবার দিতে বলেছি। কিন্তু এখনও কিছু পাইনি।"

এ দিকে আরএসপির মালদহ জেলা সম্পাদক সর্বানন্দ পাণ্ডে বলেন, “তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য এ দিন জেলা প্রশাসনকে ইমেল করেছি।" জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “রাজ্য প্রশাসনের মাধ্যমে ওড়িশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদক্ষেপ করার চেষ্টা চলছে।"

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy